নির্বিষ একতরফা ম্যাচ যে শেষ চার ওভারে রং বদলাবে তা বোধহয় সিংহভাগ ভারতীয়ের স্বপ্নের অতীত ছিল। অথচ বিরাট কোহলি নামে এক আশ্চর্য প্রতিভা সেই ম্যাজিকটাও করে দেখাল। অজিদের ৬ উইকেটে হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে দিল ভারতকে। ধোনি বা যুবরাজের সঙ্গতটা ছিল। তবে একা যে একটা নেহাতই হারা ম্যাচকে জয়ে পৌঁছে দেওয়া যায় তা ফের একবার মোহালির মাঠে প্রমাণ করে দিলেন বিরাট। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষের কয়েকটা ওভার মোহালির দর্শকদের পয়সা উশুল করে দিয়েছে। আর ভারতকে পৌঁছে দিয়েছে সেমিফাইনালে। এদিন বিরাটের স্বপ্নের ইনিংসটা বাদ দিলে ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং, সব ক্ষেত্রেই ভারতকে গোহারান হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় অজিরা। ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটি খাওয়াজা ও ফিঞ্চের ঝোড়ো শুরু গোটা মোহালিকে স্তব্ধ করে দেয়। পাওয়ার প্লে-তে ফিল্ডিংয়ের বিধিনিষেধকে কাজে লাগিয়ে চার আর ছ’য়ের বন্যা বইতে থাকে মোহালির সবুজ গালিচায়। প্রথম চার ওভারের মধ্যেই ওভার পিছু রান রেট ১৪ ছোঁয়। অস্ট্রেলিয়ার ওপেনিং জুটির ঝোড়ো ইনিংসের সামনে কোনও বোলারই কাজে আসছিল না। ভারতের অন্যতম স্ট্রাইকিং বোলার অশ্বিনের প্রথম ওভারেই ২২ রান তোলে খাওয়াজা ও ফিঞ্চ জুটি। এমন এক নক আউট ম্যাচে যে শুরুটা দরকার ছিল ঠিক সেটাই বাস্তবে করে দেখায় তারা। খাওয়াজা আউটের পর অজিদের রান রেট কিছুটা হলেও ধাক্কা খায়। তবে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর পরিকল্পিতভাবেই বড় স্ট্রোক খেলা কমিয়ে রানের পাহাড় গড়ার দিকে মন দেয় অজি বাহিনী। ফলে উইকেট পতন অব্যাহত থাকলেও রান রেটকে সাত থেকে আটের মধ্যেই ধরে রাখে অস্ট্রেলিয়া। অষ্টাদশ ওভারে আশিস নেহরার স্পেল শেষ করিয়ে শেষ ওভারে পাণ্ডিয়ার মত অপেক্ষাকৃত অনভিজ্ঞ বোলারের হাতে বল তুলে দেওয়া ধোনির একটা বড় ভুল বলেই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা। যার ফল শেষ ওভারে ভুগতে হয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে। ১৬০ রানের অজি ইনিংস বড় হলেও তা ধাওয়া করা অসম্ভব ছিল না। কিন্তু ইতিহাস বলছে বড় রানের ইনিংস তাড়া করার হলেই ভারতীয় দল আগে থেকে হেরে ব্যাট করতে নামে।বড় রান তাড়া করে জেতার ইতিহাস ভারতের জন্য যতটা উজ্জ্বল, তার চেয়ে হারের ইতিহাস অনেক বেশি প্রসিদ্ধ। যা এদিন ভারতীয় ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই ক্রমশ স্পষ্ট হতে থাকে। আইপিএলের ভারতীয় মহাতারকাদের এদিন অজিদের সামনে নেহাতই শিশুর মত দেখিয়েছে। বড় রান তাড়া করার জন্য পাওয়ার প্লের সুবিধা সম্পূর্ণ কাজে লাগানোর দরকার ছিল। কিন্তু সেখানে একের পর এক উইকেট অজিদের হাতে তুলে দিয়ে দায় ঝেড়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা, সুরেশ রায়নারা। তবে জেতার আশা ছাড়েনি ভারত। কারণ তখনও ক্রিজে বিরাট কোহলি দাঁড়িয়ে। যে ছেলেটা যে কোনও মুহুর্তে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। প্রথমে যুবরাজ। তারপর ধোনিকে নিয়ে বিরাটের ব্যাট ক্রমশ ভয়ংকর হয়ে উঠেছে মোহালির মাঠে। জেতার জন্য ওভারে ১২ রানের বেশি তুলতে হবে। এই অবস্থায় গোটা ভারত যখন প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছে তখনই বিরাটের ব্যাটে তুফান উঠল। যে ঝড় অজিদের প্রায় জেতা ম্যাচ কয়েক ওভারের মধ্যে তছনছ করে দিয়ে গেল। পাঁচ বল বাকি থাকতেই জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলে ভারত। ১৯ তম ওভারে বিরাটের ব্যাটে চারটে চারের পর জিতটা ছিল সময়ের অপেক্ষা। ২০ তম ওভারের প্রথম বলে চার মেরে জয়ের সেই অপেক্ষার সমাপ্তি ঘটান ক্যাপ্টেন ধোনি। সেমিফাইনালে ভারতের মুখোমুখি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
Read Next
Sports
April 16, 2024
আইএসএল শিল্ড জিতল মোহনবাগান, ইতিহাসের পাতায় সবুজ মেরুন
April 22, 2024
বিশ্বে এই প্রথম, অন্য উচ্চতায় দেশের ১৭ বছরের বিস্ময় কিশোর
April 16, 2024
আইএসএল শিল্ড জিতল মোহনবাগান, ইতিহাসের পাতায় সবুজ মেরুন
April 9, 2024
বাড়িতে সমস্যা বলে অফিস কেটে মাঠে মহিলা, ধরে ফেললেন বস
March 30, 2024
স্বপ্নের মধ্যেও তিনি এই দলকে হারাতে চান, কোন দল বললেন গৌতম গম্ভীর
Related Articles
Comments