নিছক ভাগ্যের জোর আর বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার অভাবে বিশ্বকাপে ভেসে থাকল ভারত। হার যখন প্রায় নিশ্চিত তখন বাংলাদেশের হঠকারি সিদ্ধান্তই জেতাতে পারত ধোনি ব্রিগেডকে। অদ্ভুতভাবে হলও সেটা। শেষ ৩ বলে ৩টে উইকেট হারিয়ে জেতার দোরগোড়া থেকে বাংলাদেশ হারল ভারতের কাছে। হার্দিকের শেষ ওভার। স্কোরবোর্ড বলছে ৬ বলে ১১ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। হাতে তখনও চারটে উইকেট। সেখানে চাপের মুখে প্রথম ৩ বলে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৯ রান। শেষ ৩ বলে দরকার ২ রান। প্রথম ৩ বলে হার্দিককে কখনও ধোনি, কখনও নেহরাকে পরামর্শ দিতে দেখা গিয়েছিল। ফিল্ডিং পরিবর্তন নিয়েও সময় কাটাতে দেখা গেছিল ধোনিকে। কিন্তু প্রথম ৩ বলে মার খাওয়ার পর হার প্রায় নিশ্চিত জেনেই বোধহয় চতুর্থ বলে কোনও পরামর্শ কেউ দিতে এলেন না। কিন্তু তারপরেই শুরু ম্যাজিক। শুরু ভাগ্যের চাকা ঘোরা। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে পর পর দুটো উইকেট পড়ার পর ফের চাপে বাংলাদেশ। এক বল দু রান। এই অবস্থায় ঠান্ডা মাথায় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মরিয়া ছুট রান আউট করে রুখে দিন কিপার। ৩টে বল যে দুই দেশের দর্শকদের হাসিকান্না এভাবে বদলাবদলি করে দেবে তা বোধহয় কেউ ভাবতেও পারেননি। এদিন প্রথম থেকেই ভারতের বড় রানের লক্ষে ছোটা রুখে দেয় বাংলাদেশ। ১৪৭ রানে জয়ের লক্ষ দিয়ে ভারত ফিল্ডিং করতে নামার পরও কিন্তু ব্যাটে যথেষ্ট সাবলীল দেখিয়েছে বাঙালি ব্যাটসম্যানদের। জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য যে পেশাদারিত্ব দেখানোর দরকার ছিল তার সবটুকু চিন্নাস্বামীর সবুজ গালিচায় উজাড় করে দেন তাঁরা। রবিচন্দ্রন অশ্বিন আর রবীন্দর জাদেজা ছাড়া ভারতের কোনও বোলারই বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ের সামনে বাধার প্রাচীর তুলে দাঁড়াতে পারেননি। ফলে গুটিগুটি পায়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু অভিজ্ঞতার অভাব, চাপের মুখে স্নায়ুর চাপকে অবহেলা করার মত মনের জোর না থাকাটা ফ্যাক্টর হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ১ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের সোমিফাইনালে পৌঁছনোর আসা জিইয়ে রাখল ভারত। এদিন ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন অশ্বিন। কিন্তু যে খেলা এদিন বাংলাদেশ খেলল শেষটুকু বাদ দিয়ে তার তারিফ না করে উপায় রইল না। নিশ্চিত জয়ের মুখে দাঁড়িয়ে এই হার বাংলাদেশও সহজে ভুলতে পারবে বলে তো মনে হয়না।
Leave a Reply