Kolkata

মহাসপ্তমীতে শহর জুড়ে মানুষের ঢল, মধ্যগগনে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব

পুজোর মেজাজ দানা বাঁধতে শুরু করেছিল সেই তৃতীয়া থেকেই। বহু মানুষ বেরিয়ে পড়েছিলেন ঠাকুর দেখতে। তখন যে কটা বারোয়ারির উদ্বোধন হয়ে গিয়েছিল সেখানে সেখানেই ঠাকুর দর্শন চলছিল। চতুর্থীতে সেই ভিড় সকাল থেকেই রাস্তার দখল নিতে শুরু করে। রাত পর্যন্ত চলে ঠাকুর দেখা। অনেক প্যান্ডেল দেখে বোঝার উপায় ছিলনা চতুর্থী নাকি অষ্টমী! ছুটি থাকায় চুটিয়ে পুজোর মেজাজ দখল নেয় রাজপথের।

পঞ্চমীতে ভিড় আরও বাড়ে। ষষ্ঠীতে তো পুজো শুরুই হয়ে গেল। আর মহাসপ্তমীর ভোর থেকে নবপত্রিকা স্নান দিয়ে ঘরে এলেন মা দুর্গা। আর সেই সপ্তমীর সকালেই মানুষ বেরিয়ে পড়লেন ঠাকুর দেখতে। এদিন কিন্তু ষষ্ঠীর মত ঝলমলে আকাশ ছিলনা। অনেক জায়গায় সকালেই বৃষ্টি হয়। দীর্ঘক্ষণের বৃষ্টি না হলেও বৃষ্টি হয়েছে। দুপুরেও মেঘের গুড়গুড় অনেকের মনে আশঙ্কা তৈরি করে। তবে কি সপ্তমীর সন্ধে বৃষ্টি মাটি করবে? যা প্ল্যান সব ভেস্তে যাবে?


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

মহাসপ্তমী উপলক্ষে অনেক সংস্থার তরফে ঠাকুর দেখানোর আয়োজন করা হয়। কোনও সংগঠন বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের নিয়ে ঠাকুর দেখিয়েছে। কেউ বা মানসিক প্রতিবন্ধীদের। কোথাও স্কুল থেকে আয়োজন করা হয়েছিল ঠাকুর দেখার। ফলে স্কুলের পড়ুয়ারা স্কুলের পোশাকেই লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখেছে। আবার কেউ বার হন ভিড় এড়াতে সকাল সকাল। কেউ বন্ধুদের সঙ্গে। কেউ ভিড়ের মধ্যেও মনের মানুষের সঙ্গে হাতে হাত ধরে দেখেছেন ঠাকুর। কেউ আবার পরিবার নিয়ে। কেউ গাড়িতে। কেউ বাসে ঘুরে। কেউ স্রেফ হেঁটে। তবে ঠাকুর দেখা চলেছে চুটিয়েই।

এদিন সকালের আলো ফোটার আগেই শুরু হয়েছিল তোড়জোড়। ঢাক বেজে উঠেছিল। অনেক বাড়িতেই ভোরে দরজায় দরজায় দুর্গানাম সহ চন্দন, সিঁদুর দেওয়ার প্রথা পালিত হয়। অন্যদিকে বারোয়ারি বা বাড়ির পুজোয় শুরু হয়েছিল নবপত্রিকা স্নানের শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। ভোর হতেই ঢাকের বাদ্যিতে বারোয়ারি থেকে বাড়ির পুজোর নবপত্রিকা স্নানে ভরে ওঠে বিভিন্ন গঙ্গার ঘাট। যেখানে গঙ্গা বা অন্য নদী নেই, সেখানে পুকুর বা দিঘিতে নবপত্রিকা স্নান সম্পূর্ণ হয়েছে। এরপর প্যান্ডেলে নবপত্রিকা ফেরার পর শুরু হয় মহাসপ্তমীর পুজো।

প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে পুজোর থালা হাতে মহিলারা হাজির হন। আকাশে বাতাসে তখন শুধুই পুজোর গন্ধ। ঢাকের বাদ্যিতে পুজো এগোয় নিজের নিয়মে। এতো গেল পুজোর দিক। আর তার সঙ্গে বিকেল গড়িয়ে সন্ধে যত নেমেছে ততই উত্তর থেকে দক্ষিণ চুটিয়ে ঠাকুর দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে প্রাণভরে আড্ডা আর কোনও বাদ বিচারের তোয়াক্কা না করেই হৈহৈ করে পেট পুজো চলেছে চুটিয়ে। নীলকণ্ঠ পরিবারের তরফে সকল পাঠক পাঠিকার জন্য রইল মহাসপ্তমীর অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *