World

ঢুকতে দেয়নি কেউ, টানা ২ মাস সমুদ্রেই ভেসে বেড়ালেন এক ব্যক্তি

সমুদ্রের বুকে ভেসে বেড়াচ্ছে একটি পালতোলা নৌকা। নৌকায় মানুষ বলতে ১ জনই। এভাবেই কাটল ২ মাস।

করোনা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের সর্বত্র। ফলে করোনা রুখতে এখন সব দেশই তাদের সীমান্ত সিল করেছে। কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছেনা। সে সড়ক, আকাশ বা জলপথ যাই হোকনা কেন। যার জেরে চরম কষ্ট সহ্য করে একা অনন্ত সমুদ্রের বুকে ঘুরে বেড়াতে হল সিঙ্গাপুরের বাসিন্দা এক ব্যক্তিকে। এরমধ্যে যে দেশেই প্রবেশের চেষ্টা করেছেন তারাই তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছে। ফলে সেই জলেই কাটাতে হয়েছে দিনরাত। দিশাহীন অবস্থায় চোট খাওয়া নৌকা নিয়ে কোনওক্রমে বেঁচে থাকতে হয়েছে তাঁকে। ওই ব্যক্তির এই জলে একাকী কাটানোর কাহিনি কোনও সিনেমার চেয়ে কম নয়।

গত ২ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুরের বাসিন্দা ৫৯ বছরের অং তেচুং তাঁর ২ ইন্দোনেশিয়ান বন্ধুকে সঙ্গী করে প্রশান্ত মহাসাগর পরিক্রমা করতে বার হন একটি পালতোলা নৌকায়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই ২ ইন্দোনেশিয়ান জানতে পারেন করোনার কারণে তাঁদের দেশের সীমান্ত সিল হতে চলেছে। তাই তাঁরা আর ঝুঁকি না নিয়ে দেশে ফেরেন। মাঝপথ থেকেই ২ জন ফিরে যাওয়ায় একা হয়ে পড়েন তেচুং। তিনি এরপর নিজেও স্থির করেন ফিরে যাবেন। কিন্তু জলে এত কারেন্ট ছিল যে তাঁর পক্ষে ফেরা সম্ভব হয়নি।


আকর্ষণীয় খবর পড়তে ডাউনলোড করুন নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ
Fiji
ফাইল : ফিজি

ভাসতে ভাসতে তিনি পৌঁছে যান প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্রগুলির কাছে। এরমধ্যেই অনেকগুলো দিন কেটেছে। এরমধ্যে নৌকায় থাকা খাবার প্রায় ফুরিয়েছে। পানীয় জলও নেই বললেই চলে। এমন অবস্থায় তেচুং প্রথমে পাপুয়া নিউগিনি-তে প্রবেশের চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা জানিয়ে দেয় করোনার কারণে তারা কাউকে প্রবেশ করতে দেবেনা। ফিরতে হয় তেচুংকে। তিনি এরপর হাজির হন সলোমন দ্বীপে। সেখানেও একই ঘটনা ঘটে তাঁর সঙ্গে। তুভালু-তে ঢুকতে গেলেও একই বাধা পেতে হয় তাঁকে। তবে সেখান থেকে তাঁকে কিছু খাবার আর জল দিয়ে ফেরানো হয়।

অগত্যা জলেই ভাসতে থাকেন তেচুং। এরপর তিনি স্থির করেন ফিজি-র কাছে যাবেন। ৬ দিন, ৬ রাত নৌকা বেয়ে ফিজির জলসীমায় পৌঁছন তিনি। এটা ছিল গত ২৮ এপ্রিল। সেখানে প্রবেশাধিকার চাইলেও তখনই অনুমতি মেলেনি। তাই ফিজি-র জলসীমাতেই ভাসতে থাকেন তিনি। ২ দিন পর তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করে ফিজি-র উপকূলরক্ষী বাহিনী। তাঁকে ভুডা বন্দরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাঁর যাবতীয় ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। অবশেষে ফিজি তেচুংকে আশ্রয় দেওয়ায় ফিজি-কে ধন্যবাদ জানিয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *