Kolkata

হালখাতা, পুজো, অনুষ্ঠান, মিষ্টি, ক্যালেন্ডার, চেনা মেজাজেই বর্ষবরণ

সময় বদলাতে পারে। কিন্তু শিকড়ের টানটা থেকে যায়। ধুতি-পাঞ্জাবী পরার ইচ্ছেটা থেকে যায়। বাপ-ঠাকুরদার পরম্পরাটা থেকে যায়। নববর্ষের সকালে পুজোটা থেকে যায়। থেকে যায় লাল রঙের মলাটে হালখাতা। থেকে যায় মন্দিরের সামনে সকালের রোদে ঝুড়ি মাথায় লাইন। লক্ষ্মী-গণেশের মূর্তি পুজো। বিভিন্ন দোকানে সকাল থেকেই সাজোসাজো রব। দোকানে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য কোল্ড ড্রিংকস আর লাড্ডু। সঙ্গে মিষ্টির প্যাকেট আর ক্যালেন্ডার। দোকান সাজে গাঁদা ফুলের মালায়। রজনীর গন্ধে।

দিনটা পয়লা বৈশাখ। বাঙালি জীবনে যে কটা আপাদমস্তক বাঙালি হয়ে ওঠার উৎসব রয়েছে তার একটি অবশ্যই এই দিনটি। নতুন বঙ্গাব্দের শুরু। এখন দোকানে দোকানে হালখাতার দরকার অনেকটাই কমেছে। তবু হালখাতা পুজোটা এদিনের এক চিরাচরিত রীতি। তা মেনেও চলেন বাঙালি ব্যবসায়ীরা। আর বছরের প্রথম দিন মানেই সকাল থেকে নানা অনুষ্ঠান। এবার ভোটের মাঝেই নববর্ষ। সকাল থেকে প্রার্থীরা যেমন প্রচার করেছেন। তেমনই আবার বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠানও হয়েছে। হয়েছে বৈশাখের আবাহন।


আকর্ষণীয় খবর পড়তে ডাউনলোড করুন নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

পয়লা বৈশাখ মানেই সকাল থেকে চড়তে থাকা পারদ। ফলে সূর্য মাথায় চড়লে থিতিয়ে আসে আনন্দ। তবে অনেক পরিবারে, ক্লাবে ও সংগঠনের তরফে এই বিশেষ দিনটায় ভুরিভোজের আয়োজন হয়। সেখানে মেজাজটা ছিল উৎসবের। সকলেরই পরনে ছিল একেবারে বাঙালি পোশাক। ধুতি-পাঞ্জাবী, পাজামা-পাঞ্জাবী, মহিলাদের পরনে বেশ একটা বাঙালি করে পরা শাড়ি। পাতেও ছিল তেমনই আয়োজন। বাঙালির রীতি মেনে ভাত-ডাল-ভাজা-মাছের নানা পদ ও পাঁঠার মাংস। সঙ্গে দই-মিষ্টি। আর শেষে পান।

পয়লা বৈশাখের ক্লান্ত দুপুর পার করে বিকেল নামলেই আবার পথঘাট নতুন উদ্যমে সেজে ওঠে। বিভিন্ন দোকানে জ্বলে ওঠে আলো, কোথাও কোথাও বক্স বাজিয়ে গান, অতিথি আপ্যায়ন। সন্ধেয় রাস্তায় একটু নজর দিলেই নজরে পড়ে পরিবার নিয়ে কয়েকটি দোকানে নিমন্ত্রণ সেরে হাতে ঝোলানো বিগশপারে এক বা একাধিক ক্যালেন্ডার ও মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে চলেছেন অনেকে। সব মিলিয়ে বঙ্গাব্দকে এভাবেই সাদরে বরণ করে বাঙালি। চিরাচরিত রীতি মেনে। সেই আনন্দ গায়ে মেখে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *