Astro Tips

ভাতের থালা কি সত্যিই এঁটো, কি বলছেন স্বামী সন্তদাসজি

থালায় ভাত আছে। সেই থালায় এক কোণে হাত লাগলেই সব এঁটো হল। কি হয়েছে ভাতে।

এমন অসংখ্য মানুষ আছে যারা মুসলমানদের দেওয়া জল খায় না। গো-মাংস বিক্রি না করলেও তাদের দোকানের তৈরি করা কোনও খাবার খায় না। এটা তাদের কেউ বলে বা শিখিয়ে দেয়নি। অন্তর থেকে আসা একটা সংস্কারমাত্র। এটা খাওয়া উচিত, না অনুচিত? এই প্রসঙ্গে এক শিষ্যের প্রশ্নের উত্তরে স্বামী সন্তদাসজির কথা –

‘- বাবা এ সম্বন্ধে কিছু বলতে চাই না। এরকম জল খাওয়ায় কোন দোষ দেখি না। তবে, তোমাদের সমাজের বিরুদ্ধাচরণে, সমাজ ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা, এই মাত্র যা ভয়। বাবা, আমি ভাঙ্গিকে দীক্ষা দিয়েছি, আমি তোমাকে দীক্ষা দিয়েছি, ধোপাকে দীক্ষা দিয়েছি, তার ভক্তিতে সে পবিত্র হয়ে গেছে। যে যতটুকু বিশ্বাসের সহিত নাম করে, উচ্চজাতের অনেকে তা করে না। তার দৃঢ়মতি।

মুসলমানের হাতে জল খাওয়া যে দোষ, একথা বিজ্ঞানসম্মত নয়। তবে মনের সংস্কার দূর করা বড় কঠিন।

থালায় ভাত আছে। সেই থালায় এক কোণে হাত লাগলেই সব এঁটো হল। কি হয়েছে ভাতে। ভাত যদি এতই অপবিত্র হবে তবে তা খায় কেন? স্পর্শে দোষ গুণ আছে বাবা। কিন্তু এ ব্যাপারে তা নয়। শাস্ত্রে ‘উচ্ছিষ্ট’ প্রমাণ পাওয়া যায়, কিন্তু সকড়ার প্রমাণ পাই নাই। ভাত সুদ্ধ থালাখানা মেঝেতে রইল, থালা তুলে নিলে, সে জায়গাটা না ধোওয়া পর্যন্ত, শুদ্ধ হল না। এরকমটা বাংলাতেই বেশি চলতি। পশ্চিমে লাঠির মাথায় ভাতের পাত্র বেঁধে নিচজাতির লোক, মুসলমানেও নিয়ে যাচ্ছে সে ভাত ব্রাহ্মণেও খাচ্ছে। এটা তোমার সংস্কারে বাধবে, কিন্তু তুমি এর জবাব দিতে পারবে না।


আমার এক আত্মীয় মুসলমান পাড়ার মধ্যে থাকতেন। তিনি একদিন এক মুসলমান বাড়ি ঘি কিনতে গিয়েছেন। জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ঘি বেশ পরিষ্কারভাবে রেখেছ তো?’ উত্তর দিল, ‘আজ্ঞে হ্যাঁ, যে হাঁড়িতে রেখেছি, সে হাঁড়িতে আমরা শুধু বকরি ঈদের সময়ে গোস্ত সিদ্ধ করি। আর কিছুই তাতে করি না। এই রকম ঘি তো তোমরা বাজারে খাও। তবে আর মুসলমানের স্পর্শকে এত ঘৃণা কর কেন? মুসলমান তো উচ্ছিষ্ট মানে না। তোমার হিসেব মতো তার সর্বাঙ্গই তো সবসময় উচ্ছিষ্ট। তবুও তার ছোঁয়া খাচ্ছ। তবে মুসলমানকে এত ঘৃণা কর কিসে?’

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button