Sports

ইডেনে ধোনিদের বিরুদ্ধে দুরন্ত জয় পেল কেকেআর

পরপর ২ বলে ২টি ক্যাচ ফস্কানোই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। একথা মেনে নিচ্ছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা। এর বাইরে ব্যাট, বল, ফিল্ডিং ৩ বিভাগেই বিপক্ষকে ছাপিয়ে যাওয়ার পুরস্কার ঘরের মাঠে ঘরে তুলল কলকাতা নাইট রাইডার্স। হারাল টেবিলের মাথায় থাকা ধোনির চেন্নাইকে। ইডেনের মাঠে ৬ উইকেটে জয় পেল তারা।

বৃহস্পতিবার টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চেন্নাইয়ের ২ ওপেনার শেন ওয়াটসন ও ডু প্লেসি মারমুখী মেজাজে ইনিংসের সূচনা করেন। পাওয়ার প্লে-র পুরো ফায়দা ঘরে তোলেন তাঁরা। ১৫ বলে ২৭ রান করে ফেরেন ডু প্লেসি। কিন্তু নিজের কাজটা করে দিয়ে যান। এরপর ওয়াটসন-রায়না জুটি ভাল রান তুলতে থাকেন। ওয়াটসন ২৫ বলে ৩৬ রান করে ফেরেন। এখান থেকে কিছুটা যেন থমকে যায় চেন্নাইয়ের রানের গতি। একসময়ে যেখানে ২০ ওভারে ২০০ রান তুলবে বলে মনে হচ্ছিল, সেখানে ক্রমশ পড়তে থাকে চেন্নাইয়ের রান রেট। রায়না ২৬ বলে ৩১ রান করেন। ফর্মে থাকা রাইডু করেন ১৭ বলে ২১ রান। এরপর যখন চেন্নাই ১৬০ রানও করতে পারবে কিনা তা নিয়ে অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করছিলেন, তখনই চলতে শুরু করে ধোনির ব্যাট। ডেথ ওভারে ২৫ বল খেলে ধোনি করেন ৪৩ রান। যা সিএসকে-কে চ্যালেঞ্জিং স্কোর খাড়া করতে সাহায্য করে। ২০ ওভারের শেষে চেন্নাই করে ১৭৭ রান।

খুব বড় স্কোর না হলেও ১২০ বলে ১৭৮ রান তোলাটা নেহাত মুখের কথাও নয়। এই অবস্থায় খেলতে নেমে প্রথম ওভারে পরপর ২টো ছক্কা হাঁকানোর পর শেষ বলে আউট হয়ে ফেরেন ক্রিস লিন। অবশ্যই কেকেআরের জন্য এটা বড় ধাক্কা। পরের ওভারের শেষ ২ বলে ২টো ক্যাচ রবীন্দর জাদেজার হাতে তুলে দেন সুনীল নারিন। আর অদ্ভুতভাবে ২টো ক্যাচই ফস্কান জাদেজা। এটাকেই অনেকে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে দেখছেন। কারণ এই সুনীল নারিনই কিন্তু এদিন রানের গতি ধরে রেখে আউট হওয়ার আগে ২০ বলে ৩২ রান করে দিয়ে যান। যার মূল্য শুধু কেকেআর বলে নয়, গোটা সিএসকে দল হাড়েহাড়ে জানে। এদিনও ব্যর্থ হন রবীন উত্থাপ্পা। প্রসঙ্গত এদিন নীতীশ রাণাকে বসিয়ে পরপর ব্যর্থ উত্থাপ্পাকে খেলানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্রিকেট বোদ্ধাদের একাংশ। রানের গতি ঠিকঠাক থাকলেও উইকেট পতন কিন্তু কলকাতাকে চিন্তায় রাখে। এই অবস্থায় শুভমান গিল ও রিঙ্কু সিং জুটি বাঁধেন। মাঠে তখন এমন একটা দল যারা ধারেভারে অনেকটাই এগিয়ে। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নামীদামী তারকা ক্রিকেটার খচিত দল। অন্যদিকে বিশ্বমানের ক্রিকেটে সবে হাতেখড়ি হওয়া ২ নেহাতই নাবালক ব্যাটসম্যান। আর এখানেই হরভজন সিং বাজিমাত করে যান। আউট করেন রিঙ্কু সিংকে। অন্যদিকে শুভমান গিল কিন্তু এদিন ধারাবাহিকভাবে রান তুলতে থেকেছেন। রিঙ্কু ফেরার পর মাঠে নামেন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। মাঠে শুভমানকে সঠিক পথে চালনা করার জন্য যে অভিজ্ঞতার দরকার ছিল তা কার্তিক পূরণ করে দেন। তবে ম্যাজিক ঘটে ১৫ ও ১৬ তম ওভারে। পরপর ২টি ওভার যে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে তা এদিন আরও একবার পরিস্কার হয়ে গেল। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি কেকেআরকে। দীনেশ আর শুভমান মিলে ১৪ বল বাকি থাকতেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যান। তাও আবার শেষ করেন ৪ মেরে। কেকেআর জেতে ৬ উইকেটে। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন সুনীল নারিন।

এদিন শুভমান গিলের তারিফ করতেই হয়। দলের যখন একটা স্টেডি ব্যাটসম্যান দরকার সেখানে ঠান্ডা মাথায় খেলে ৩৬ বলে ৫৭ রানের একটা দুর্দান্ত ইনিংস উপহার দেন তিনি। অন্যদিকে দীনেশ তাঁর ফর্ম ধরে রেখে ১৮ বলে ৪৫ রানের একটা বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন। আর এই ২ ব্যাটসম্যান যখন মারমুখী হয়ে ওঠেন তখন যা হওয়ার এই ম্যাচেও তাই হয়েছে। ম্যাচ জিতেছে কেকেআর।


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button