শহরে সূর্যোদয় হতে দিল না কলকাতার ছেলেরা
তিলোত্তমায় সূর্যোদয় আটকানো প্রায় অসম্ভব হলেও কিছুতেই কলকাতায় সূর্যোদয় হতে দিল না কলকাতার ছেলেরা। আনন্দের শব্দ কল্পদ্রুমে কেঁপে উঠল রাত।
![Andre Russell](https://www.nilkantho.in/wp-content/uploads/2024/03/andre-russell.jpg)
কলকাতায় সূর্যোদয় হবেনা। এ বিষয়ে কার্যত যখন নিশ্চিত ছিলেন শহরবাসী, ঠিক তখনই কেমন যেন উল্টো সুর বাজতে শুরু করল সবুজ গালিচায়। ক্রমে সূর্যোদয়ের সম্ভাবনা বাড়তে শুরু করল। আর তা হতে শুরু করল উড়ন্ত গোলকে ভর করে।
হেনরি ক্ল্যাসেন নামে এক বিদেশির হাতের যাদুতে শুরু হল কলকাতার স্বপ্ন ভঙ্গ। ক্রমে তা প্রকট হতে থাকল। কিন্তু শেষ না হলে তো শেষ নয়। সেই প্রবাদ সত্যি করে কলকাতাই হাসল শেষ হাসি। সূর্যোদয় হল না কলকাতায়।
আইপিএল-এর প্রথম ম্যাচে ২৫ কোটি দিয়ে কেনা খেলোয়াড় যেখানে হারের চিত্রনাট্য লিখে দিয়েছিলেন, সেখানে স্থানীয় স্তরে খেলা এক খেলোয়াড় খেলার মোড় ঘুরিয়ে রাতের ইডেন গার্ডেনসকে দোলের আগেই রঙিন করে দিলেন।
আইপিএল-এর প্রথম ম্যাচে খেলতে ইডেনে ঘরের মাঠে নেমেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। মাঠে হাজির ছিলেন কলকাতা দলের মালিক শাহরুখ খান।
টস হেরে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের ইচ্ছা মেনে প্রথমে ব্যাট করতে নামে কেকেআর। শুরু থেকেই একের পর এক উইকেট পতন ইডেনকে স্তব্ধ করে রেখেছিল।
কিন্তু নারিন, ভেঙ্কটেশ আইয়ার, অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার ও নীতীশ রাণা আয়ারাম গয়ারামের মত প্যাভিলিয়নে ফেরার পর খেলার হাল ধরেন সল্ট ও রমনদীপ সিং।
এখান থেকে ঘুরে যায় কলকাতার ভাগ্য। রানের গতি বাড়তে থাকে। আর শেষে আন্দ্রে রাসেলের ২৫ বলে ৬৪ রানের ইনিংস ও রিঙ্কু সিংয়ের ২৩ রানের যোগ্য সঙ্গত পিছিয়ে পড়া কলকাতাকে ২০ ওভারের শেষে পৌঁছে দেয় ২০৮ রানে।
২০৯ তাড়া করতে নেমে সানরাইজার্স কিন্তু ভাল শুরু করে। ভালই চলতে থাকে তাদের রান রেট। সব সময়ই লড়াইয়ে থাকছিল তারা। তবে নারিন তাদের সেই রান রেটকে এক ধাক্কায় তলানিতে নিয়ে যান।
ফলে চাপে পড়ে যায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। কিন্তু সেই সময় শুরু হয় হেনরি ক্ল্যাসেনের ছক্কা হাঁকানো। যা ফের সানরাইজার্সকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়।
সানরাইজার্সকে এদিন জয়ের দরজায় পৌঁছে দেন কলকাতার ২৫ কোটির বাজি মিচেল স্টার্ক ও বরুণ চক্রবর্তী। স্টার্ক ৪ ওভারে ৫৩ রান এবং বরুণ ৪ ওভারে ৫৫ রান দিয়ে সানরাইজার্সের জয় প্রায় নিশ্চিত করে দেন।
শেষ ওভারে হর্ষিত রাণার শেষ ৫ বলে সানরাইজার্সের দরকার ছিল ৭ রান। কলকাতা আশা যখন প্রায় ছেড়ে দিয়েছে তখনই আহমেদ আর ক্ল্যাসেনকে ফিরিয়ে খেলার মোড় মাত্র ৩ বলের মধ্যে ঘুরিয়ে দেন হর্ষিত।
![Shah Rukh Khan](https://www.nilkantho.in/wp-content/uploads/2024/03/shah-rukh-khan.jpg)
স্তব্ধ ইডেনে শব্দের ঝংকার ওঠে। শেষ বলে ৫ রান দরকার থাকলেও প্যাট কামিন্স সে বল খেলতেই পারেননি। কলকাতা জেতে ৪ রানে। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের শেষে ইডেন আনন্দে ফেটে পড়ে।
এমন এক দমবন্ধ করা ম্যাচ দেখার আনন্দ যে তাঁরা তারিয়ে উপভোগ করেছেন তা ইডেনের দর্শকদের মুখে চোখে ফুটে উঠছিল। খেলায় ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হন আন্দ্রে রাসেল। খেলার শেষে সকলের একটাই প্রশ্ন, ২৫ কোটি কি তাহলে জলে গেল?