Mythology

দেবদেবীর প্রসাদের যে কী প্রবল মাহাত্ম্য, বুঝিয়ে বললেন সাধুবাবা

স্টেশন উজ্জয়িনী থেকে ভর্তৃহরি ৪ কিমি। অটো ছেড়ে দিয়ে সিঁড়ি ভেঙে নেমে এলাম অনেকটা। বাঁয়ে ঘুরতেই বাঁধানো সমতলপ্রাঙ্গণ। বড় বড় বট অশ্বত্থ আর নিমের ছায়াঘেরা শীতল বনময় পরিবেশ। প্রতিটা গাছের গোড়া বাঁধানো। কোনও কোলাহল নেই। পাশে নানান গাছে ভরা বন। একটু দূরে খানিকটা নিচে বয়ে চলেছে শিপ্রা। এখানে শিপ্রা মাঝবয়সী। চলার গতি উচ্ছল যৌবনা নারীর মতো নয়। সকাল থেকে একটানা সংসারে পরিশ্রমের পর মাঝদুপুরে ভরপেট খাওয়া মাঝবয়সী রমণীর চলার গতি যেমন হয়, ভর্তৃহরিতে শিপ্রা চলেছে সেই গতিতে। জনাদশেক সাধু বসে, কেউ গাছের গোড়ায়, কেউ বা প্রাঙ্গণের এখানে ওখানে। একেবারে তপোবনের পরিবেশ।

আরও কিছুটা এগিয়ে যেতে পড়ল পাঁচিলে ঘেরা একটা দরজা। ডানপাশে একটা চালাঘরে ধুনি জ্বালিয়ে বসে আছেন এক সাধুবাবা। দেখে মনে হল স্থায়ীভাবে থাকেন এখানে। নাথ সম্প্রদায়ের দুজন বিশিষ্ট যোগীগুরু মৎসেন্দ্রনাথ আর গোরখনাথ স্থানটির সঙ্গে যোগসূত্রে বাঁধা। অতীতে তাঁদের তপস্যাস্থল ছিল এখানে। বর্তমানে নাথ সম্প্রদায়ের পবিত্র তীর্থক্ষেত্রও বটে।

আমি ধুনির কাছে বসলাম সাধুবাবার ডানপাশে। সম্পূর্ণ উলঙ্গ। সারাগায়ে ভস্মমাখা। খয়েরি জটা পাকিয়ে বাঁধা মাথার মাঝ বরাবর। হাতের কনুই ভরাট চেহারা। রোগা বলা বা পাতলা বলা যাবে না। খুব বড় নয়, মানানসই ভুঁড়ি। বসে আছেন মহাদেবের মতো। এমন কায়দায় বসা, পুরুষাঙ্গটা ঢাকা পড়ে গেছে ফলে যাত্রীদের কেউ এলে তাঁকে অস্বস্তিতে পড়তে হয় না। ভস্মমাখা থাকলেও গায়ের রং যে উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ তা ঢাকা পড়ার কোনও উপায় নেই। সাধুবাবার ডানপাশে একটা চিমটে, কমণ্ডলু আর একটা বেশ লম্বা শিঙে। ১৯৮৪ সালের জানুয়ারি মাসের কথা।

সাধুবাবার কাছে এই আগন্তুক জানাল, ‘কলকাতায় বাড়ি, কি করি, কি কারণে মধ্যপ্রদেশে আসা, এখান থেকে কোথায় যাব’। ইত্যাদি বলে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম। প্রসাদ হিসাবে ধুনির একটু ছাই দিলেন হাতে। একটা কথা আছে, ‘সাধুকা পরসাদ আপনি সাঁটো, ভগবানকা পরসাদ সবসে বাঁটো।’ চোখ বুজে ভস্মপ্রসাদ মুখে দিয়ে বললাম,

– বাবা, ভর্তৃহরি ক্ষেত্রটি নাথ সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসীদের অধীনে আর আপনি যে নাথ সম্প্রদায়ভুক্ত যোগী এ ব্যাপারে আমার কোনও সন্দেহ নেই। আমার একটা জিজ্ঞাসা, আপনি এখানে আছেন কতদিন আর এখন বয়েসই বা কত হল আপনার?

‘ইস বাত শুন কর তেরা কুছ ফায়দা নেহি হোগা’ বলে চুপ করে রইলেন।

আমি ছাড়ার পাত্র নই। বেশ কয়েকবার অনুরোধ করার পর বললেন,

– মেরা উমর অভি আশশি চলা রহা হ্যায়। ভর্তৃহরিতে আছি পঞ্চাশ বছর।

মায়েদের কুনকে মেপে চাল নেয়া, বেশি না হয়। সাধুবাবারও যেন মাপা কথা।

বললাম,

– তার আগে বাবা কোথায় ছিলেন?

মুখের দিকে তাকালেন। প্রসন্নতায় ভরা দৃষ্টি। বিরক্তির কোনও ছাপ নেই দাড়িতে মোড়া সুন্দর মুখখানায়। বয়েসের আন্দাজ করতে পারিনি যোগীদেহ বলে। সাধারণ মানুষ মেরে কেটে ষাটের উপরে কিছুতেই বলবে না। কথার উত্তর দিলেন,

– তার আগে কুড়ি বছর ভারতের নানা তীর্থে ছিলাম পরিভ্রমণরত অবস্থায়। তারপর আমি আমাদের গুরু গোরখনাথজির পদধূলিপূত ভর্তৃহরিতে।

একথায় বুঝলাম গৃহত্যাগ হয়েছে দশ বছর বয়েসে। অভিজ্ঞতায় দেখেছি সাধুসন্ন্যাসীরা নিজেদের অতীত ও বহমান জীবনপ্রসঙ্গে সহজে মুখ খুলতে চান না। এখানে ব্যাপারটা বিপরীত হচ্ছে দেখে মনটা আনন্দে ভরে উঠল। সাধুবাবা কথা বলছেন তবে দেহ কিন্তু নড়ছে না। নানা কথায় ঘণ্টাখানেক কেটে গেছে কিন্তু সাধুবাবা বসে আছেন স্থির হয়ে। মাঝে মধ্যে ধুনির আগুনটা খুঁচিয়ে দিচ্ছেন চিমটে দিয়ে। যাত্রীরা অনেকে আসছে, দু-চার পয়সা ছুঁড়ে দিচ্ছে। এসব নিয়ে এতটুকু মাথাব্যথা নেই। জিজ্ঞাসা করলাম,

– বাবা, আমার কাছে বিড়ি আছে, আপনি একটা খাবেন?

সাধুবাবা মাথা নেড়েও মুখে বললেন,

– না বেটা, ম্যায় গাঁজা পিতা।

এতক্ষণ পর সাধুবাবা পদ্মাসন মুক্ত হয়ে পাশে রাখা একটা ঝোলা থেকে গাঁজা আর কলকে বের করলেন। সুন্দর করে সেজে চিমটে দিয়ে একটা জ্বলন্ত কাঠের টুকরো কলকের মাথায় বসিয়ে বেশ লম্বা করে পরপর টান দিলেন তিনটে। প্রায় মিনিট দুয়েক ধোঁয়াটা ভিতরে রেখে পরে ছাড়লেন ভুরভুর করে। এবার ইশারায় বললেন আমার চলবে কিনা? জানালাম চলবে। এগিয়ে দিলেন কল্কেটা। আমিও লম্বা তিনটে টান মেরে সাধুবাবার কায়দায় মুখে অল্প সময় ধোঁয়াটা রেখে পরে ধীরে ধীরে ছেড়ে দিয়ে বললাম,

– বাবা, দেবদেবীর উদ্দেশে আমরা বিভিন্ন সময় বাড়িতে কিংবা কোনও দেবদেবীর মন্দিরে ভোগ দিয়ে প্রসাদ পেয়ে থাকি। দেবতার প্রসাদে কি সত্যিই দেহমনে কল্যাণ হয়?

সঙ্গে সঙ্গেই সাধুবাবা বললেন,

– বলিস কিরে বেটা প্রসাদে কল্যাণ হয় মানে? প্রসাদেই তো দেহের স্বস্তি আসে, মনের মলিনতা দূর হয়ে পারমার্থিক কল্যাণ হয়। দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদিত ভোগ বা নৈবেদ্য এবং গুরুজনদের এঁটো করা অর্থাৎ ভুক্তাবশেষকে প্রসাদ বলে। ইষ্টমন্ত্র দ্বারা ভগবানে নিবেদিত বস্তু পরিণত হয় প্রসাদে। তখন অলক্ষ্যে তাতে সঞ্চারিত হয় ভগবদশক্তি। দেহীগুরুর ভুক্তাবশেষও ভগবদশক্তি সঞ্চারিত প্রসাদ বটে। এতে যেমন অধ্যাত্মশক্তির স্ফুরণ হয় তেমনই সেই শক্তির মধুর প্রভাবও কাজ করে জীবনে। শুদ্ধাচারে দেবতার উদ্দেশ্যে পবিত্র দ্রব্য দিয়েই ভোগ দিতে হয়। এই যে তুই গাঁজায় টান দিলি এটাও কিন্তু প্রসাদ পেলি। আমার গুরুর উদ্দেশ্যে এই গাঁজা নিবেদিত। সুতরাং সেই প্রসাদ তুই পেলি, আমিও পেলাম। প্রসাদের সঙ্গে অন্য কোনও খাদ্যদ্রব্যের তুলনা করা চলে না। বেটা, প্রসাদের এমনই মাহাত্ম্য যে, যে কোনও অনিবেদিত খাদ্যবস্তুতে প্রসাদ স্পর্শ করলে তা প্রসাদেই রূপান্তরিত ও প্রসাদ বলে গণ্য করা হয়।

এই পর্যন্ত বলে সাধুবাবা থামলেন। একের পর এক টান চলতে লাগল কল্কেতে। আমিও বাদ যাচ্ছিনা এ থেকে। প্রসাদের মাহাত্ম্য যে কি, তা নিজের জীবনে উপলব্ধি করার সুযোগ এসেছিল একবার। সাধুবাবার প্রসাদমাহাত্ম্যকথা শোনার বহু বছর পরের কথা। তারাপীঠ মহাশ্মশানে একবার ভূতে ধরল আমাকে। মুহুর্তে আমার মাথার ওজন দাঁড়াল যেন এক মণ। ফিরে এলাম বাড়িতে। তান্ত্রিক ও ফকিরের শরণাপন্ন হলাম। একদিন দুপুরে এক মণ ভারী মাথাটা নিয়ে গেলাম আমাদের মঠে। তখন আমার কুমারী ও সন্ন্যাসিনী গুরুমা দেহে ছিলেন। আনুপূর্বিক আমার দুরবস্থার কথা জানালাম। কথাগুলো শুনলেন, তবে মুখে কিছু বললেন না। দুপুরে অন্নপ্রসাদ গ্রহণের আগে গুরুমা তাঁর গুরুদেবের উদ্দেশ্যে নিবেদিত প্রসাদ নিজে গ্রহণ করে সামান্য ভুক্তাবশেষ দিলেন আমাকে। পাওয়ামাত্র খাওয়া শুরু করতেই দেহের মধ্যে এক অপূর্ব আনন্দ প্লাবিত হল, পলকে ভারী মাথাটা হালকা হল। দেহমন মাথা আমার ফিরে এল আগে যেমন ছিল।

প্রসাদের মাহাত্ম্য প্রসঙ্গে ব্রজবিদেহী মহন্ত শ্রী শ্রীসন্তদাস বাবাজি মহারাজ তাঁর কথামৃত গ্রন্থে জানিয়েছেন –

শ্রীশ্রীরামদাস কাঠিয়াবাবাজি মহারাজের সেবকসাধু ছিলেন প্রেমদাসজি। একসময় বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন পণ্ডিতদের নানান ধরণের ব্যাখ্যা শুনে বিভ্রান্ত হলেন। ভাবলেন, সমস্ত বস্তুই যখন ব্রহ্ম তখন খাদ্যাখাদ্যের বিচার নিয়ম নিষ্ঠা ও প্রসাদের মাহাত্ম্য ইত্যাদির কোনও মানে হয় না। সবই নিরর্থক। এসব কথা তিনি প্রকাশ্যে বলতে লাগলেন বৃন্দাবনের আশ্রমে।

একথা কানে গেল বাবাজি মহারাজের। তিনি শোনামাত্র বললেন, ‘এ তো ছিন্দি (পাগল) হো গিয়া। ইসকা বাত ক্যা শুনেঙ্গে।’ এই কথা বাবাজি মহারাজের মুখ থেকে বেরনো মাত্র পাগল হয়ে গেলেন প্রেমদাস। বাহ্যজ্ঞান হারালেন সেবকসাধু।

অশেষ কষ্টের মধ্যে দিয়ে এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ালেন দিন পাঁচেক। তার কষ্ট দেখে আর এক শিষ্য গরীবদাসজি করজোড়ে জানালেন বাবাজি মহারাজকে, ‘বাবা, প্রেমদাস বালক, ওকে ক্ষমা করে ওর প্রতি কৃপা করুন।’

গরীবদাসজির আকুল আর্তিতে করুণাধারা উৎসারিত হল বাবাজি মহারাজের অন্তরে। তিনি বললেন, ‘বেটা গরীবদাস, ওকে ঠাকুরের প্রসাদ দিতে পার, যদিও ও প্রসাদের মাহাত্ম্য মানে না। তবুও ওকে দেখাও যে প্রসাদের মাহাত্ম্য আছে কি না?’

তখন গরীবদাসজি বাবাজি মহারাজের একটি প্রসাদি রুটি জোর করে মুখে দিলেন প্রেমদাসজির। কিন্তু সেই রুটি গলা দিয়ে নামল না, এতই তিতো বোধ হল।

এবার বাবাজি মহারাজ বললেন, ‘আরে খা! ঔর একবখত দেখ ক্যায়সা হ্যায়।’ আবার জোর করে একটুকরো দেয়া হল মুখে। এবার প্রেমদাসজি যেন অমৃত খেলেন। ধীরে ধীরে সমস্ত রুটিপ্রসাদটুকু খেয়ে ফেললেন। আহারের পর উন্মাদের সমস্ত লক্ষণগুলি বিস্ময়কর ভাবে দূর হল।

নাথ সম্প্রদায়ের সাধুবাবা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন,

– বেটা, প্রসাদ মন না চাইলে খাবি না তবে অবজ্ঞা বা উপেক্ষা করবি না। প্রসাদ অবজ্ঞা করলে ভগবানের শক্তিকেই অবজ্ঞা বা অপমান করা হয়।

অনেকক্ষণ কথা বলার পর বুঝতে পারলাম আমার উপর সাধুবাবার বেশ প্রীতি জন্মেছে। সুযোগটা নিয়ে নিলাম। বললাম,

– বাবা, সাধুজীবনে এমন কোনও সুখ বা দুঃখের ঘটনা কি আছে যা আজও আপনার অন্তর থেকে মুছে যায়নি।

কথাটা শোনামাত্র নির্বিকার বৃদ্ধের মুখমণ্ডলটা নিমেষে বেদনায় ভরে গেল। মুহুর্তে ফিরে গেলেন ফেলে আসা সুদূর অতীতে। চোখদুটো যেন আপনা থেকেই বুজে এল। শান্ত ধীর কণ্ঠে বললেন,

– বেটা, গৃহত্যাগের পর তীর্থভ্রমণকালীন একবার গেছিলাম গঙ্গোত্রীতে।

কালীকমলীবাবার ধর্মশালায় পরিচয় হয় আর এক সাধুর সঙ্গে। পরিচয়ের পর ঘনিষ্ঠতা হল। স্বার্থের সম্পর্কটা ছিল না তাই এটা সম্ভব হয়েছিল। কয়েকদিন গঙ্গোত্রীতে কাটিয়ে আমরা গেলাম গোমুখে। তখন পথ যথেষ্টই কষ্টকর ছিল। সামান্য কিছু শুকনো খাবার ছিল পাথেয়। ওখানে রাত কাটালাম একটা পাহাড়ি গুহায়। যেদিন গেছিলাম, সেদিন আমরা দুজন ছাড়া যাত্রী আর কেউই ছিল না। সকাল হতে আমরা কৌপীন খুলে প্রচণ্ড শীতে নেমে পড়লাম গোমুখের বরফগলা জলে। ঝপাঝপ কয়েকটা ডুব মেরে পাশে তাকাতেই দেখছি তীব্র স্রোতে আমার সঙ্গী সাধু ভেসে যাচ্ছে জলে। ওই মুহুর্তে তাকে বাঁচানোর মতো কোনও পরিস্থিতিই ছিল না আমার। পাথরে পাড়ে ধাক্কা খেতে খেতে ভেসে গেল দেহটা।

এই পর্যন্ত বলে বৃদ্ধ থামলেন। সুখ দুঃখ, বাঁচা মরা, হাসি কান্না যার জীবনে একাকার হয়ে গেছে, দেখলাম তার দুচোখ ভরে উঠেছে জলে। আমি নিজে থেকে কিছু বললাম না। সাধুবাবাই বললেন,

– বেটা, জগতসংসার কালের অধীন। পৃথিবীব্যাপী সমস্ত মানুষকে পরিণতি ও বৃদ্ধি দিয়ে থাকে কাল। আবার কালই সংহার করছে সবকিছু। জগতে সবাই যখন ঘুমায় তখন একমাত্র কালই জেগে থাকে। কালের চোখে এক ছিটেফোঁটা ঘুম নেই। কালকে কেউ অতিক্রম করতে পারে না, সে ক্ষমতা কারও নেই। বেটা, মাতৃগর্ভে শিশু বাড়ে কালের জন্য, বল বীর্য বৃদ্ধিও কালের জন্য। কালই সৃষ্টি করে সকলকে, নির্বিকারে সংহার করে কালই। কালের গতি কখনও বোঝা যায় না, দেখাও যায়না।

প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে অনেক কথা হল। অটো দাঁড়িয়ে আছে আমার যাওয়ার অপেক্ষায়। প্রণাম করলাম সাষ্টাঙ্গে। সাধুবাবা হাতদুটো বুলিয়ে দিলেন মাথায়। ধুনীর ভস্ম নিয়ে মাখিয়ে দিলেন কপালজুড়ে। একটা কাগজে একমুঠো মুড়ে দিয়ে বললেন,

– বেটা, যখন যে রোগ হোক না কেন, একটু খেয়ে নিবি আর একটু বুলিয়ে দিবি যেখানে হয়েছে। দেখবি রোগ সারতে বাধ্য।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *