Mythology

মন্দির থেকে চোর বদনাম দিয়ে মেরে বের করে দেওয়া হল সাধুবাবাকে, ফলল গুরুর অভিশাপ

– বাবা, সাধুজীবনে আসার পরের কথাই বলছি। এমন কোনও স্মরণীয় ঘটনা কি কখনও ঘটেছে যার কথা সারাজীবন আপনার মনে থাকবে। যেমন ধরুন কোনও অলৌকিক দর্শন, কোনও বিপদ কিংবা অবিশ্বাস্য কোনও ঘটনা?

প্রসঙ্গ পালটে জিজ্ঞাসা করলাম প্রশ্নটা। কথাটা শোনামাত্র একটা অন্ধকার ভাব ফুটে উঠল চোখেমুখে। আগের হাসির রেশটাও মিলিয়ে গেল মুহুর্তে। কোনও কথা বললেন না সাধুবাবা। মনে হল কিছু একটা ঘটেছে নইলে এমন হাসিমাখা মুখখানা হঠাৎ এমন হয়ে এল কেন? তাই আর খোঁচালাম না। বলবার হলে আপনিই বলবেন। বসে রইলাম উত্তরের আশায়। কাটল মিনিট সাতেক। ধীরে ধীরে আবার ফিরে এল স্বাভাবিক ভাবটা, চোখদুটো বুজিয়ে বললেন,

– হাঁ বেটা, স্মরণীয় ঘটনা তো একটা আছে। গুরুজির অভিশাপবাক্য সফল হয়েছিল আমার জীবনে। যা আজও আমার মনে আছে, থাকবে যতদিন এই দেহটা থাকবে।

Lingaraja Temple
ভুবনেশ্বরের লিঙ্গরাজ মন্দির, ছবি – সৌজন্যে – উইকিপিডিয়া

কথাটুকু বলে ঘটনার কথা আর কিছুতেই বলতে চাইছিলেন না সাধুবাবা। অনেক অ-নে-ক অনুরোধ করে হাতে পায়ে ধরলাম। মিনিট কুড়ি কাটার পর শুরু করলেন তাঁর সাধুজীবনের একটি অন্য অধ্যায়ের কথা,


– তখন ছিলাম উত্তরাখণ্ডে ভবিষ্যবদরীতে। যোশীমঠ থেকে যেতে হয় তপোবন হয়ে। সেই সময় ওখানে কোনও লোকই যেত না বলতে পারিস। এখনও যে খুব বেশি যায় তাও নয়। একে ঘুর পথ, নামডাকও নেই। সে কি আজকের কথা। তাও কম করে ধর ৬০/৬৫ বছর হবে। তখন আমরা পাঁচজন গুরুভাই থাকতাম একসঙ্গে। সাধনভজনও চলত একই সঙ্গে। আমাদের গুরুজি ছিলেন পাহাড়িয়া।

ভুরুটা একটু কোঁচকালেন। একটু ভেবে বললেন,

– ঘর ছাড়ার পর বছর দুয়েক আজ এখানে, কাল ওখানে এই করেই কাটল। তারপর গুরুর সন্ধান পেলাম হরিদ্বারে। তিনি আমাকে নিয়ে গেলেন হিমালয়ের ভবিষ্যবদরীতে। রয়ে গেলাম ওখানে। শীত গ্রীষ্ম বর্ষা কোনও সময়েই সমতলে নামতাম না আমরা। থাকতাম সাধনভজন নিয়ে। নিত্যকর্মের মধ্যে একটা ছিল প্রতিদিন শিবলিঙ্গে বেলপাতা চড়িয়ে জলঢালা। এটা ছিল গুরুজির আদেশ। নিয়মিত করতামও তাই।

বহুকাল চললাম এই নিয়মে। পরে একটা সময় কি মনে হল বন্ধ করে দিলাম শিবলিঙ্গে জলঢালা আর বেলপাতা চড়ানো। অন্য গুরুভাইরা কিন্তু বন্ধ করল না তাদের নিত্যকর্ম। কি মতিচ্ছন্ন যে হল, আমিই বন্ধ করে দিলাম। চলতে লাগলাম এইভাবে। একদিন কথায় কথায় গুরুভাইরা আমাকে উদ্দেশ্য করে গুরুজিকে বলল,

– বাবা, ও সাধনভজন সবই করে শঙ্করের মাথায় এখন আর জল বেলপাতা চড়ায় না।

কথাটা শোনা মাত্রই ক্রোধে ফেটে পড়লেন গুরুজি। অগ্নিমূর্তি হয়ে বললেন আমাকে,

– শালা শুয়ার কা বাচ্চা, হিমালয়ে বসে আছিস মানে ভগবান শঙ্করের কোলেই বসে আছিস। তাঁর আশ্রয়ে থেকে তাঁর সেবা করিস না অথচ প্রতিদিন আহার গ্রহণ করিস। এত বড় তোর ধৃষ্টতা!

বলে অভিশাপ দিলেন গুরুজি,

– জীবনে একটা সময় আসবে যখন তোকে সমতলে নেমে যেতে হবে। সেখানে পাবি কোনও এক শিবমন্দিরে নিত্যপুজোর দায়িত্ব। প্রতিদিন জল বেলপাতা দিয়ে তোকে করতে হবে শঙ্করের সেবা। তুই চুরি করবি না কিন্তু বিনা কারণে তোকে চোর বলে সন্দেহ করবে সকলে। তারপর একদিন মেরে অপমান করে তাড়িয়ে দেবে মন্দির থেকে। গুরুর আদেশ অমান্য করে শঙ্করের সেবা করিসনি, তার জন্য এইভাবে কষ্ট ভোগ করে তোকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।

করুণমুখে কথাগুলো বলে একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললেন। চোখ খুললেন। তাকালেন মুখের দিকে। এ দৃষ্টিতে কৌতূহল ছিল, কিছু জিজ্ঞাসা করি কি না? কোনও কথা বললাম না। সাধুবাবা বললেন,

– এরপর পাহাড়ে যতদিন ছিলাম শঙ্করের মাথায় জল বেলপাতা না দিয়ে নিজে জলগ্রহণ করতাম না। এই ঘটনার বহুকাল পর দেহ রক্ষা করলেন গুরুজি। চার গুরুভাই – এর মধ্যে দুজন চলে গেল মানস কৈলাসে। একজন গেলেন গোমুখে। একজন রয়ে গেলেন ভবিষ্যবদরীতে। সেই সময় মনটা আমার কেমন যেন হয়ে গেল। ওখানে থাকতে আর ভাল লাগল না। নেমে এলাম সমতলে।

Lingaraja Temple
ভুবনেশ্বরের লিঙ্গরাজ মন্দির, ছবি – সৌজন্যে – উইকিপিডিয়া

কৌতূহলী হয়ে বললাম,

– তারপর কি হল বাবা, গুরুজির অভিশাপবাক্য কি সত্যিই কার্যকরী হয়েছিল আপনার জীবনে?

প্রসন্ন মনে বললেন,

– পরে আর কি! এ তীর্থ সে তীর্থ করেই দিন কাটতে লাগল। ঘুরতে ঘুরতে একদিন উপস্থিত হলাম এক আশ্রমে। অদ্ভুত যোগাযোগ। আশ্রমে রয়েছে শিবমন্দির। নিত্যপুজোর দায়িত্ব দিতে চাইল কর্তৃপক্ষ। রাজি হয়ে গেলাম বিবশভাবে। শঙ্করের নিত্যসেবা চলল কয়েকবছর ধরে। হঠাৎ একদিন কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করল, নিত্যভোগের জন্য দেয়া টাকা থেকে চুরি করি আমি। শুনলাম নির্বিকার ভাবে। প্রতিবাদ করলাম না। কারণ তো আমি জানি। গুরুজির বাক্য সফল হয়ে এখন তা শেষ হতে চলেছে।

প্রতিবাদ না করাতে সকলেই চোর ভাবল আমাকে। একদিন মেরে তাড়িয়ে দিল আশ্রম থেকে। পরমানন্দে বেড়িয়ে পড়লাম পথে। যেদিন শঙ্করের সেবা-পুজোয় লেগেছিলাম সেদিন কাছে একটা পয়সাও ছিল না, যেদিন তাড়িয়ে দিল সেদিনও আমি ফকির। একটা কানাকড়িও ছিল না সঙ্গে। পথ আর মানুষের দয়ার অন্নই আমার সব। তাতেই চলে যায়। কার জন্য চুরি করব বলত? গুরু ছাড়া কে আছে আমার? তাঁর আদেশ অমান্য করেছিলাম। প্রায়শ্চিত্ত করলাম ফলভোগ করে।

সাধুবাবা থামলেন। ভাবের কোনও পরিবর্তন হল না। ভাবতে থাকলাম অনেক কথা। গুরুবাক্যের কি তীব্রশক্তি! অভিশাপবাক্য কি অদ্ভুতভাবে ঘটনায় রূপান্তরিত হল সাধুবাবার জীবনে। আজ একেবারে মুক্ত অবধূত তিনি। জিজ্ঞাসা করলাম,

– এই ঘটনায় গুরুর প্রতি অশ্রদ্ধা আর যারা চোর বলেছিল আপনাকে, তাদের প্রতি কোনও ক্রোধ বা ক্ষোভ হয়নি আপনার?

বললেন শান্ত ধীর কণ্ঠে,

– নানা বেটা, তা হবে কেন! মনে ওসব কিছু আসেনি বরং লাভ হয়েছে আমার। অনেক অ-নে-ক লাভ হয়েছে। বাইরে প্রকাশ না করলেও গুরুবাক্য অবহেলা করলে শিষ্যের প্রতি যে গুরু অপ্রসন্ন হন, এ ঘটনা না ঘটলে বুঝতে পারতাম না। তাঁর অপ্রসন্নতা প্রকাশ পেয়েছিল বলে ভুগে মুক্ত হয়েছি। যারা গুরুবাক্য ঠিক ঠিক মেনে চলে না, বাহ্যিক প্রকাশ না পেলেও অন্তর্যামী গুরু তাদের প্রতি অপ্রসন্নই থাকেন। ফলে জীবনে দুর্ভোগ তাদের কাটেনা, শান্তিও পায় না। অভিশাপ না দিলে গুরুবাক্যের যে কি অমোঘ শক্তি তা কখনও কল্পনাতেও আসত না। আর গুরুকৃপায় শঙ্করের নিত্যসেবার সুযোগও তো পেয়েছি, এটাই বা কম কি!

বেটা, এই ঘটনাটা ঘটেছিল বলে গুরু, গুরুবাক্য ও গুরুশক্তির উপর বিশ্বাস শ্রদ্ধা অটুট হয়েছে আমার। এমনটা না হলে হয়ত বিশ্বাসে ঘাটতি থেকে যেত। গুরু যে কত করুণাময়, কত যে তাঁর দয়া, কোন পথে কিভাবে তিনি যে তাঁর শিষ্যের কল্যাণ করেন, তা কারও বোঝার উপায় নেই। অভিমানটা গুরুজি ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছেন তাই ক্ষোভ বা ক্রোধ হয়নি কারও উপরে।

Lingaraja Temple
ভুবনেশ্বরের লিঙ্গরাজ মন্দির, ছবি – সৌজন্যে – উইকিপিডিয়া

কথাগুলো শুনে অবাক হলাম না। স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। সামান্য ঘটনার পিছনে অনেকসময় যে কত মহৎ, কত বড় কারণ ও উদ্দেশ্য লুকিয়ে থাকে তা সচরাচর কেউ ভাবি না। জিজ্ঞাসা করলাম,

– বাবা পথই আপনার আশ্রয়, না ডেরা কোথাও আছে?

একটু উদাসীনতার সুরে বললেন,

– পথই আমার সব। জীবনকে জানা আর বেঁচে থাকা, সবই আমার পথকেই সম্বল করে। আর ডেরার কথা বলছিস, ওটা করব ভগবানের কাছে।

এখন সাধুবাবার মুখখানা বেশ স্বাভাবিক লাগছে। অনেকক্ষণ পর এবার একটু নড়েচড়ে বসলেন সোজা হয়ে। জানতে চাইলাম,

– সংসার না করে এপথে এলেন কেন? কেউ কি জোর করে এনেছে?

এতক্ষণ পর কথাটা শুনে মিষ্টি হাসিতে ভরে উঠল মুখটা। হাসতে হাসতে বললেন,

– বেটা, এই পৃথিবীতে জোর করে কি কেউ কিছু করতে পারে, না পেরেছে কখনও? আমি বাপু অশিক্ষিত মানুষ। ভুল হলে ক্ষমা করে দিস। তোরা বলিস এটা করলাম, ওটা করলাম। শিল্পী বলছে নতুন ভাবনায় সে শিল্প সৃষ্টি করেছে। সাহিত্যিক বলছে সে সাহিত্য সৃষ্টি করেছে। বিজ্ঞানী বলছে সে কিছু আবিষ্কার করেছে। না না বেটা, এ জগতে কেউ কিছু সৃষ্টিই করছে না, আবিষ্কারও নয়। তুইও কিছু করছিস না, আমিও না। জোর করে কিছু হওয়ার নয়, হয়ও না।

(একটু থেমে) আসলে বেটা সৃষ্টির নিয়মে সব কিছু সৃষ্টি হয়েই আছে। নতুন করে কেউ কিছু করছে না, করতে পারছে না, পারবেও না। ভগবানের বিধানে সেই সৃষ্ট বস্তু বা বিষয় কারও মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে, হচ্ছে বিকশিত এই যা। না থাকলে হত এমন করে! আছে বলেই তো প্রকাশ পাচ্ছে। প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত অজ্ঞাত ছিল। মনে হয়েছে নেই। জানার পর মনে করছি আমরা করলাম। যেমন ধর ভাবনা। কেউ যখন নতুন কোনও বিষয় নিয়ে কিছু করছে বলে শুনবি তখন জানবি, সৃষ্টি তার সৃষ্ট ভাবনার কারও মাধ্যমে প্রকাশ করতে চলেছে। মনে রাখবি, যা নেই তা নেই-ই। যা প্রকাশিত হচ্ছে তা ছিলই। কেরামতি সব তাঁরই।

এই পর্যন্ত বলে থামলেন কিছুক্ষণ। কোনও কথা বলে আর ছেদ টানলাম না কথায়। সাধুবাবা বললেন,

– সংসার না করে সাধু হলাম কেন? আমি তো বেটা সৃষ্টির নিয়মের বাইরে নই। তার নিয়মে জীবনটা আমার এইভাবে কাটবে বলেই তো এপথে আসতে হয়েছে। চেষ্টা বা জোর করে কি এপথে আসা যায়? অন্য পথেও যাওয়া যায় না। নিয়মে যার যে পথ বাঁধা আছে সেই পথেই সে চলবে।

প্রসঙ্গক্রমে বললাম,

– তবে বাবা একটা কথা আছে। সৃষ্টির নিয়মে ঘর ছাড়ার লৌকিক কারণ তো কিছু আছে, সেটা তো বলতে পারেন, তা তো জানা আছে আপনার।

ঘাড় নাড়লেন। মুখে বললেন,

– হাঁ বেটা, লৌকিক কারণ তো একটা আছে। সংসারে মানুষ বেঁচে থাকে কারও সঙ্গে কোনও না কোনও সম্পর্ক নিয়ে। সেই সম্পর্ক কোথাও গভীর, কোথাও ঠুকনো আবেগমূলক। সম্পর্ক যেখানে গভীর, বিশ্বাসটা সেখানে প্রবল। তখন বয়সে ছোট হলেও সেই বিশ্বাসের উপর সম্পর্ক যাচাই করার সময় সব ভেঙ্গে গেল। বেড়িয়ে পড়লাম। আমার সম্পর্কের ভিত্তিতে কোনও আবেগ ছিল না। তা থাকলে হয়ত বেরোতে পারতাম না। মূলকথা বেটা, সৃষ্টির নিয়মেই সংসার ছিল না, হলও না।

খোলাখুলি কিছু বললেন না। তাই জানতে চাইলাম,

– কারণটা তো বললেন না বাবা, এবার ঘটনাটা বলুন।

মুহুর্ত দেরি না করে বললেন,

– না বেটা, এ ব্যাপারে কিছু বলব না আমি। অনুরোধ করিস না।

এ কথার পর আর জিজ্ঞাসা করা চলে না। তাতে বিরক্ত করা হয়। কথায় ‘অনুরোধ’ যুক্ত করায় আবার বললে অপমানই করা হবে। তাই ও প্রসঙ্গে আর বললাম না। এতক্ষণ যে কথা বলেছেন এটাই আমার ভাগ্য। এখন উঠতে হবে আমাকে। প্রণাম করে শেষ প্রশ্ন করলাম,

– জীবনপথে অনেকটা পথই তো পাড়ি দিলেন, এলেন জীবনের শেষ প্রান্তে। কথায় যা বুঝেছি তাতে পাথেয় আপনার গুরুতে বিশ্বাস ও ভক্তি। এই পাথেয় নিয়ে পথ চলে সাধুজীবনের ঝুলি কি পূর্ণ হয়েছে, না অপূর্ণই থেকে গেল? ঈশ্বর সম্পর্কে আপনার মতই বা কি, তাঁর দর্শন কি পেয়েছেন?

এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আবেগে ভরে উঠল সাধুবাবার কণ্ঠস্বর। মুহুর্তে জলে ভরে উঠল চোখদুটো। নেমে এল কয়েক ফোঁটা। প্রসন্নতায় ভরে উঠল মুখখানা। সংসারে সব কিছু আছে এমন মুখ দেখেছি আমি। তাদের মুখেও এমন প্রসন্নতা দেখিনি। হয়ও না বোধ হয়! অথচ সহায় নেই, সম্বল নেই, সমাজে অবহেলিত এক আশ্রয়হীন মুখ কেমন করে যে ভরে ওঠে এমন অপার্থিব প্রসন্নতায়, না দেখলে কারও বিশ্বাসই হবে না। মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন সাধুবাবা। হঠাৎ ডুকরে কেঁদে উঠে অস্ফুট স্বরে বললেন,

– বেটা, আমি ফকির।

এই বলে পাশে রাখা ঝুলিটা দেখিয়ে বললেন,

– ঝুলিটা আমার বড্ড ছোট। মনের ঝুলিও তাই। ফকিরের ঝুলি যে! তা-ও ভরে উপচে গেছে। কেমন করে জানিস? ঈশ্বর, মনের এক বিশেষ অবস্থা যে!

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button