State

৩-এ ৩ তৃণমূল, উপনির্বাচনে বড় ধাক্কা বিজেপির

লোকসভায় কিছুটা থমকে যাওয়া তৃণমূল উপনির্বাচনের পর পালে হাওয়া পেল। করিমপুর, খড়গপুর সদর ও কালিয়াগঞ্জ উপনির্বাচনে জয়লাভ করলেন ঘাসফুলের প্রতিনিধিরা। তৃণমূলের জন্য আরও বড় খবর হল ২০১১ বা ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তারা ঝোড়ো জয় পেলেও কালিয়াগঞ্জ ও খড়গপুর সদরে ঘাসফুল ফোটাতে পারেনি। সেখানে এবারই প্রথম জয়ের মুখ দেখল জোড়াফুল। এটা অবশ্যই তৃণমূলের জন্য বড় প্রাপ্তি। তৃণমূল দলটি গঠন হওয়ার পর থেকে কোনও নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জ বা খড়গপুর সদর জিততে পারেনি তৃণমূল। অবশেষে এই উপনির্বাচনে তারা জয়লাভ করল এখান থেকে।

কালিয়াগঞ্জ ও খড়গপুর সদরে বিজেপি হয়তো অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী ছিল জয় নিয়ে। কালিয়াগঞ্জের ক্ষেত্রে সেখানে গত লোকসভা নির্বাচনে ৫৭ ভোটের লিড ছিল বিজেপির। যদিও বিধানসভা ছিল কংগ্রেসের। কংগ্রেসের প্রমথনাথ রায়ের মৃত্যুতে ওই আসনটি খালি হয়। এদিন যখন সকালে গণনা শুরু হয় তখনও কিন্তু বিজেপি এগিয়ে থেকেই শুরু করেছিল। কিন্তু গণনাপর্ব যতই এগিয়েছে ততই লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হতে থাকে। তার তার পরেই জয়ী হন তৃণমূলের তপন দেব সিংহ। এখানে হারের পিছনে এনআরসি আতঙ্ক একটা বড় কারণ হিসাবেই দেখছে খোদ বিজেপি।

খড়গপুর সদর ছিল কংগ্রেসের পর বিজেপির শক্ত ঘাঁটি। এখান থেকেই জিতেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ২০১৯ সালে তিনি লোকসভা নির্বচনে জয়লাভ করার পর খড়গপুর সদরে উপনির্বাচন অবশ্যম্ভাবী হয়। যেহেতু বিজেপির জেতা আসন ছিল, তাও আবার খোদ দিলীপ ঘোষের তাই বিজেপি নেতৃত্ব এখানে কত ব্যবধানে জিতবে সেটা নিয়ে বেশি চিন্তিত ছিল। কিন্তু সেই আসনও হাতছাড়া হল গেরুয়া শিবিরের। খড়গপুর সদর আসনটি প্রথমবারের জন্য জিতল তৃণমূল। জিতলেন তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার।

নদিয়ার করিমপুরে ২০১৬ সালে জেতে তৃণমূলই। মহুয়া মিত্র জয়লাভ করেন। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে তিনি সাংসদ হয়ে যাওয়ার পর ওই আসনে উপনির্বাচন হয়। সেখানে বিজেপি তাদের হেভিওয়েট রাজ্য নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারকে দাঁড় করায়। ভোটের দিন জয়প্রকাশবাবু প্রকাশ্যে মারধরের মুখেও পড়েন। তাঁকে কিল, চড়, ঘুষির সঙ্গে লাথি মেরে ঝোপে ফেলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। সেই জয়প্রকাশ মজুমদার এদিন ভোটের ফল বার হওয়ার পর দেখা গেছে করিমপুরে দ্বিতীয় স্থানে চলে গেছেন। জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী বিমলেন্দু সিংহ রায়।

বৃহস্পতিবার সকালে ভোট গণনা শুরুর পর কালিয়াগঞ্জ বাদ দিয়ে বাকি ২টি আসনে তৃণমূল এগিয়ে যেতেই থাকে। ফলে বেলা বাড়তে ভোটের ফল ঘোষণার আগেই শুরু হয়ে যায় তৃণমূল কর্মীদের জয়োল্লাস। সবুজ আবিরে ঢেকে যায় গণনা কেন্দ্রের আশপাশ। চলে মিষ্টিমুখ। নাচ, আবির খেলা। অন্যদিকে বাকি দলের কর্মীরা বেলা যত গড়িয়েছে ততই গণনা কেন্দ্রের সামনে থেকে বাড়িমুখো হয়েছেন। মুখে ছিল হারের যন্ত্রণা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *