Sports

হায়দরাবাদকে হারিয়ে প্লে অফে পৌঁছে গেল কলকাতা

টেবিলের সবচেয়ে ওপরের দল। নিজেদের প্রথম ১১টা ম্যাচ খেলার পর ৯টা জিতে ১৮ পয়েন্ট পকেটে পুরেছিল হায়দরাবাদ। অনেক ক্রিকেট বোদ্ধাই বলছিলেন অপ্রতিরোধ্য দল। হারতে জানেনা। সেই হায়দরাবাদ তাদের পরের ৩টি ম্যাচ পরপর হারল। অন্যদিকে প্রায় ছিটকে যেতে চলা কেকেআর শেষ ৩টি ম্যাচ পরপর জিতে শনিবার নিজেদের জায়গা পাকা করে নিল প্লে অফে। তাদের ঘরে গিয়ে এদিন তাদেরই ৫ উইকেটে হারিয়ে ১৪ ম্যাচের শেষে ৮টা জিতে ১৬ পয়েন্ট পকেটে পুরে তৃতীয় দল হিসাবে প্লে অফে জায়গা পাকা করে নিল কলকাতা। দুরন্ত জয়, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কলকাতা এমন একটা দল যারা লিগ টেবিলের প্রথম ২য়ে থাকা হায়দরাবাদ ও চেন্নাইয়ের কাছে ১টা করে হেরেছে। ১টা করে জিতেছে। আর এদিন তো জয় আবশ্যিক ছিল। তা না হলে প্লে অফে পৌঁছনো নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন থেকে যেত। সেই অবকাশই রাখল না কেকেআর।

এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। এমনিতে হায়দরাবাদ আগেই প্লে অফে জায়গা পাকা করে নিয়েছে। তাই তুলনামূলকভাবে অনেকটা নিশ্চিন্তেই খেলার জায়গায় ছিল তারা। অন্যদিকে এদিন জিততে পারলে আর কারও মুখাপেক্ষী না হয়েও প্লে অফে পৌঁছে যাবে কেকেআর। এই পরিস্থিতিতে চাপ ছিল শাহরুখের ছেলেদের ওপরই। ব্যাট করতে নেমে শ্রীবৎস গোস্বামী ও শিখর ধাওয়ান জুটি কিন্তু ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। বিশেষত তৃতীয় ওভারে রাসেলের বলে ‌১ ওভারে ২০ রান আসা হায়দরাবাদের রান রেটকে পৌঁছে দেয় ১০ এর কোটায়। যা প্রথম ৭ ওভার পর্যন্ত বজায় রেখেছিল কেন উইলিয়ামসনের দল। প্রথম ৭ ওভারে পাওয়ার প্লে-কে পুরো কাজে লাগিয়ে হায়দরাবাদ তোলে ৭০ রান। এই অবস্থায় ২০ ওভারে ২০০ রান খুব অসম্ভব ছিলনা। নিদেনপক্ষে ১৯০ তো করাই যায়। তেমনই ধরে নিয়েছিলেন কলকাতার অতিবড় সমর্থকও। আর মনে মনে প্রমাদ গুনছিলেন। হিসেব কষে দেখছিলেন ১৪ পয়েন্ট নিয়েই কলকাতা কি করে প্লে অফে যেতে পারে। এই অবস্থায় ৭৯ রানের মাথায় প্রথম উইকেটের মুখ দেখে কলকাতা। আউট হন শ্রীবৎস (৩৫)। তখনই প্রায় ৯ ওভার শেষ। এরপর জুটি বাঁধেন উইলিয়ামসন ও ধাওয়ান। রান উঠতে থাকে ঝড়ের গতিতে। ১২ ওভার ৫ বলের মাথায় যখন উইলিয়ামসন (৩৬) আউট হলেন তখন দলের রান ১২৭। মাত্র ২ উইকেট হারানো হায়দরাবাদের জন্য শেষ ৭ ওভারে ৭০ রান তোলা খুব কঠিন কাজ ছিল না। কিন্তু এখান থেকেই ঘুরতে থাকে খেলা। ১৫ ওভার ১ বলের মাথায় ধাওয়ান (৫০) যখন ফেরেন তখন দলের স্কোর ১৪১। এরপর শেষ ২৯ বলে হায়দরাবাদ তোলে মাত্র ৩১ রান। উইকেট হারায় ৬টি। যারমধ্যে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার শেষ ওভারেই পরে যায় ৪ উইকেট। ফলে ২০ ওভারের শেষে হায়দরাবাদ ৯ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৭২ রান।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

হায়দরাবাদের মাঠ খুব বিশাল নয়। পিচও ভয়ংকর এমন নয়। ফলে কেকেআরের জন্য এই রান তোলাটা হিসেব কষে খেললে খুব কঠিন ছিলনা। এই অবস্থায় খেলতে নেমে কলকাতার ২ ওপেনার ক্রিস লিন ও সুনীল নারিন এদিন তাণ্ডব শুরু করেন। চার, ছয়ের বন্যা বইতে থাকে। মাত্র ৩ ওভারে ওঠে ৪০ রান। নারিন যখন ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হন তখনই তিনি মাত্র ১০ বল খেলে ২৯ রান তুলে ফেলেছেন। নারিন আউট হওয়ার পর অবশ্য রানের গতি কিছুটা হলেও কমে। জুটি বাঁধেন লিন ও উত্থাপ্পা। এদের ২ জনের যুগলবন্দি কিন্তু রানের গতি অব্যাহত রাখে। মাঝে রশিদ খানের বলে ক্যাচ তুলে দিলেও উত্থাপ্পার সেই ক্যাচ হাতছাড়া করেন রশিদ। যা ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বললেও ভুল বলা হবে না। এদিন কার্যত রবীন লিন জুটি খেলাকে জয়ের ধারে কাছে পৌঁছে দেয়। লিন ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে মণীশ পাণ্ডের হাতে ধরা পড়লেও এরপর হাল ধরেন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। রবীনের সঙ্গে জুটি বেঁধে হিসেব কষে ম্যাচকে জয়ে দোরগোড়ায় নিয়ে যান ২ জনে। উত্থাপ্পা করেন ৪৫ রান। যখন উত্থাপ্পা আউট হন তখন কিন্তু কিছু অতিমানবিক না হলে কেকেআর ম্যাচ জিতছে। এই অবস্থায় রাসেল নেমে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ৪ রান করে ফেরেন। ম্যাচ শেষ করতে নামেন নীতীশ রাণা। কিন্তু শেষ ওভারে যখন ৪ বলে ১ রান দরকার এই অবস্থায় আউট হন তিনি। নামেন শুভমান গিল। কিন্তু খেলার সুযোগ পাননি তিনি। অধিনায়ক নিজের দলের জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান নিজেই তুলে নেন। কলকাতা ম্যাচ জেতে ৫ উইকেটে। টেবিলের সবচেয়ে ওপরে থাকা দলকে হারিয়ে প্লে অফে নিজেদের জায়গা পাকা করে তারা। এটা কিন্তু কম কথা নয়। ম্যাচের সেরা ক্যাচের পুরস্কার পান রিঙ্কু সিং। প্লেয়ার অফ দ্যা ম্যাচ হন ৫৫ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলা ক্রিস লিন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *