State

মুড়ি মুড়কির মত বোমাবাজিতে রণক্ষেত্র কাঁকিনাড়া

অর্জুন সিংয়ের খাসতালুক হিসাবে পরিচিত ভাটপাড়া। ভাটপাড়া বিধানসভা ছিল অর্জুন সিংয়ের দখলে। তৃণমূলের টিকিটে বিধায়ক ছিলেন তিনি। লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি যোগ দিয়ে ব্যারাকপুর কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী হন। ইস্তফা দিয়েছিলেন বিধায়ক পদ থেকেও। ফলে সেখানে উপনির্বাচন ছিল স্বাভাবিক। ভাটপাড়া আসনে ১৯ মে লোকসভার শেষ দফায় ছিল বিধানসভা নির্বাচন। প্রসঙ্গত রাজ্যের মোট ৪টি বিধানসভা আসনে এদিন উপনির্বাচন হয়। ভাটপাড়ায় অর্জুন সিং বিজেপি প্রার্থী করেন তাঁর ছেলেকে। অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থী করে মদন মিত্রকে। প্রচারের দিনগুলো ঠিকঠাক কাটলেও গত শনিবার রাতে এখানে প্রবল অশান্তি হয়। ফলে সকলেই আতঙ্কে ছিলেন সকাল থেকে ভাটপাড়া না অশান্ত হয়ে ওঠে। কিন্তু তা হয়নি। রবিবার সকালে ভোট শুরুর পর থেকে ভাটপাড়া কিন্তু শান্তই ছিল। কিন্তু সেই সুখ দুপুরেই উধাও হল।

রবিবার বেলার দিকে ভাটপাড়ার অন্তর্গত কাঁকিনাড়া এলাকার কাঁকিনাড়া হাইস্কুলে আসেন তৃণমূল প্রার্থী মদন মিত্র। তাঁর অভিযোগ ছিল এখানে বিনা পরিচয়পত্র পরীক্ষা করেই অনেককে বুথে ঢুকে ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে। এই নিয়ে বুথের মধ্যেই কেন্দ্রীয়বাহিনীর সঙ্গে তাঁর বচসা বাঁধে। এরপর মদন মিত্র বুথের বাইরে আসতে সেখানে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রবল বিক্ষোভের মুখে মদন মিত্রকে গার্ড দিয়ে বার করে আনেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা। এই সময় শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ। মদন মিত্রের কিছু অনুগামীর সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হয় বিজেপি কর্মীদের। হস্তক্ষেপ করে সিআরপিএফ ও ব়্যাফ। মদন মিত্রকে সেখান থেকে সরিয়ে আনা হয়।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

এখান থেকে বেরিয়ে মদন মিত্র কাঁটাপুকুর এলাকায় এসে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন। আর ঠিক তখনই শুরু হয় বোমাবাজি। তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হয়। মদন মিত্রের কাছেই বোমা পড়ে। দ্রুত তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিক বোমা পড়তেই থাকে। অভিযোগে তির ছিল বিজেপির দিকে। এর কিছু সময় পরেই মদন মিত্রের অনুগামীরাও পাল্টা বোমা ছুঁড়তে শুরু করেন বলে অভিযোগ। আর তাতেই তৈরি হয় রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি।

মুড়ি মুড়কির মত বোমা পড়তে থাকে এলাকা জুড়ে। সাধারণ মানুষ কার্যত ঘরে আশ্রয় নেন। জানালা, দরজা বন্ধ করে দেন। দোকানপাট যা খোলা ছিল সব দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়। ছুটে আসেন কেন্দ্রীয়বাহিনীর জওয়ানরা। তাঁরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। হাজির হয় ব়্যাফ ও ব্যারাকপুর কমিশনারেটের বিশাল বাহিনী। এলাকা ফাঁকা করতে শুরু হয় প্রবল লাঠিচার্জ। পাড়ায় পাড়ায় ঢুকে পড়েন কেন্দ্রীয়বাহিনীর জওয়ানরা। বোমার আওয়াজ তখন ভেসে আসছিল। এমন অবস্থা প্রায় ১ ঘণ্টা চলার পর এলাকা কার্যত কার্ফুর চেহারা নেয়। এলাকা চলে যায় কেন্দ্রীয়বাহিনী ও পুলিশের দখলে। চারদিক তখন খাঁ খাঁ করছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *