National

পুরীতে কার্ফু, টিভির পর্দায় এক অন্য রথযাত্রা দেখলেন ভক্তেরা

পুরীতে রথযাত্রা মানেই মানুষের ঢল। সেই মানুষই এবার নেই। এমন অচেনা রথযাত্রা এই প্রথম দেখল গোটা বিশ্ব।

ভুবনেশ্বর : পুরীর রথযাত্রায় শামিল হতে দেশ, বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় জমান এই সমুদ্র শহরে। তিল ধারণের জায়গা থাকেনা এখানে। প্রতিবছর রথের দিন এমনই এক আবহ দেখে অভ্যস্ত পুরীর বাসিন্দারা, আগত পুণ্যার্থীরা। এমনকি যাঁরা টিভির পর্দায় চোখ রাখেন তাঁরাও সেই লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢলে পুরীর রথের রশিতে টানের ছবি দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু সেই অতিপরিচিত বাৎসরিক ছবি এবার অমিল। রথযাত্রাই হতনা। যদিনা শেষ মুহুর্তে গত সোমবার সুপ্রিম কোর্ট শর্তসাপেক্ষে রথযাত্রার অনুমতি দিত।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে এদিন পুরী শহরে ছিল কার্ফু। যা এদিন তো বটেই আগামী বুধবার বেলা ২টো পর্যন্ত বজায় থাকবে। ট্রেন চলছে না। বিমান ওঠানামা করছে না। বাস চলাচল বন্ধ। পুরী শহরটা সম্পূর্ণ স্তব্ধ। কেউ বাড়ি থেকে বার হতে পারবেননা। এটাই প্রশাসনিক নির্দেশ। হোটেলের ক্ষেত্রেও একই শর্ত প্রযোজ্য। এদিকে পুরীর রথের রশিতে টান পড়লেও সেখানে কেবল উপস্থিত ছিলেন সেবায়েতরা। প্রায় ৫০০ জন সেবায়েত ও মন্দির কমিটির সদস্য উপস্থিত ছিলেন। আর ছিল কড়া পুলিশি বন্দোবস্ত। মাছি গলতে না পারা সুরক্ষাবলয়।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

পুরীর রথযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ সেখানে আগত ভক্তের ঢল। এদিন সেটাই অমিল। ফলে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে মন্দির থেকে বার করে তাঁদের রথে তাঁদের বসিয়ে অন্যান্য রীতিনীতি মানতে দেরি হয়নি। ঘড়ির কাঁটা বেলা ১২টা পার করতেই বলভদ্রের রথের রশিতে টান পড়ে। রশি টানেন সেবায়েতরাই। তার আগে পুরীর রাজার সোনার ঝাঁটা দিয়ে ঝাঁট দেওয়া বা অন্যান্য আরও রীতিনীতি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালিত হয়।

জগন্নাথদেবের রথের নাম নন্দীঘোষ। উচ্চতা ৪৫ ফুট। বলরামের নীলবর্ণের রথের শীর্ষভাগে তালচিহ্নের কারণে রথের নাম হয়েছে তালধ্বজ। উচ্চতা ৪৭ ফুট। সুভদ্রার রথ দেবীদলন বা দেবীরথ নামেই রথের পরিচিতি। উচ্চতায় ৪৩ ফুট। এক এক করে ৩টি রথের রশিতেই টান পড়ে। ফাঁকা রাস্তা ধরেই এগিয়ে চলে রথ। প্রথমে বলভদ্রের রথে টান পড়ে। তারপর সুভদ্রা ও তারপর জগন্নাথদেবের রথে টান পড়ে। তবে যে গ্র্যান্ড রোড ধরে ৩ কিলোমিটার পথ পার করে গুন্ডিচা মন্দিরে জগন্নাথদেব যান সেই রাস্তা ধরে যত বাড়ি রয়েছে তার কোনও বাড়ির ছাদেও কাউকে দাঁড়াতে মানা করেছিল প্রশাসন। সব রাস্তায় ছিল কড়া প্রহরা। আর এভাবেই ভক্তশূন্য অবস্থায় এদিন বাকি সব নিময় পালন করেই পুরীতে পালিত হল রথযাত্রা। দেশ থেকে বিদেশের মানুষ সেই রথযাত্রা চাক্ষুষ করলেন টিভির পর্দায় চোখ রেখে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *