Celeb Talk

সৃষ্টি সুখের উল্লাসে

শিল্পই তাঁর প্রথম প্রেম, শেষ প্রেম। তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি, 'জানেন, এখনও যখন নিজের কোনও কাজের গায়ে হাত বোলাই, মনে হয় যেন প্রেমিকার গায়ে হাত বোলাচ্ছি'।

তখন সন্ধে। উত্তর কলকাতার পুরনো পাড়া শ্যামপুকুর স্ট্রিটের রাস্তা তখনও জমজমাট। কাছে একটা বাড়ি থেকে একটা নষ্ট হয়ে যাওয়া কাঠের টুকরো রাস্তায় ফেলে দিলেন গৃহকর্তা। নষ্ট কাঠের টুকরো। বাড়ি নোংরা করছিল। ফলে নিছক সাফসাফাই। ঘটনাটা নজরে পড়ল পাড়ারই এক যুবকের।

কাঠের টুকরোটার দিকে একবার তাকিয়ে গৃহকর্তাকে জিজ্ঞেস করল সে। ‘কাঠের টুকরোটা আমি নিতে পারি?’ ততক্ষণে নর্দমায় গড়াগড়ি দিচ্ছে সেটা। এ প্রশ্নে কিছুটা অবাক হলেন ভদ্রলোক। ‘ও কাঠ তো নষ্ট হয়ে গেছে। তাই ফেলে দিলাম’, অত্যন্ত সাদা মাটা গলায় উত্তর দিয়ে ঘরে ঢুকে গেলেন তিনি। কিন্তু কাঠের শোকটা মনের মধ্যে থেকেই গেল। পাড়ার মধ্যে নর্দমা থেকে কাঠ তুলতে একটু লজ্জাই করল। আবার কাঠটা ছাড়াও যাচ্ছেনা।

রাতটা কাঠের কথা ভেবে ঘুম হল না। সকাল হতেই একটি ছেলেকে ১০টা টাকা দিয়ে কাঠটা নর্দমা থেকে তুলিয়ে আনল ওই যুবক। বেজায় আনন্দ। মনটা বেশ হাল্কা লাগছে। শুরু হল কাঠের সাফসাফাই। তারপর সেই কাঠের থেকে তৈরি হল এক অপরূপ ভাস্কর্য। শুনলে অবাক হবেন, সেই ফেলে দেওয়া কাঠের থেকে তৈরি ভাস্কর্যটি আপাতত এক কোটিপতির ঘরের শোভা। শিল্পকে ভালবেসে মোটা টাকার বিনিময়ে সেই ভাস্কর্য কিনে নিজের ঘরে সাজিয়ে রেখেছেন তিনি।

রূপকথার মতো শোনাচ্ছে? তা বটে। আসলে কি জানেন, যে মানুষটা নিজের মুখে এই কাহিনি আমাদের শোনালেন তাঁর জীবনটাই একটা রূপকথা। এমন নয় যে এ রূপকথায় লড়াই নেই। অপরিসীম লড়াই। কিন্তু একাগ্রতা, নিষ্ঠা আর সবার শেষে কাজের প্রতি ভালবাসা একটা মানুষকে কোথা থেকে কোথায় তুলে নিয়ে যেতে পারে তার জ্বলন্ত উদাহরণ ভাস্কর বিমল কুণ্ডু। এক মুখ কাঁচা পাকা দাড়ি, পরনে পাঞ্জাবী, চোখে গোল ফ্রেমের চশমা। এক ঝলকে শিল্পী বলেই মনে হয়। এই মুহুর্তে বাংলার ভাস্কর্য দুনিয়ার প্রথম সারি হাতে গোনা কয়েকজন শিল্পীর অন্যতম। এখন তাঁর হাতের ছোঁয়ার তৈরি ভাস্কর্য লক্ষ লক্ষ টাকায় বিকোয়। কিন্তু এই পর্যন্ত পৌছনোর পিছনে রয়েছে অক্লান্ত পরিশ্রম আর ভালবাসা। সেই গল্পই শুনলাম তাঁর সল্টলেকের বাড়িতে বসে।

উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর স্ট্রিট। এখানেই এক মধ্যবিত্ত পরিবারে বিমল কুণ্ডুর জন্ম। অনেকগুলো ভাই। বাবা ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। মা সংসার নিয়ে। ফলে আলাদা করে কোনও ছেলের পিছনে সময় দেওয়ার সময় ছিলনা। সেই সময়টাই ওরকম ছিল। বাবা-মা স্কুলে ভর্তি করে দিলে অনেকটাই ঝাড়া হাত-পা। এবার স্কুলে পড়তে থাকো। খালি নজর রাখা হত পড়ার সময় পড়তে বসছে কিনা। না বসলে বকাবকি হত। আর পড়ার বাইরে অন্য কিছু করাতেই তেমন মত ছিল না। আর সবই ছিল সময় নষ্ট। তবে সারা দিন নজরদারির ব্যাপার ছিল না। কারো অত সময়ই ছিলনা।

শ্যামপুকুর স্ট্রিট থেকে কুমোরটুলি খুব দূরে নয়। পাশেই বয়ে গেছে গঙ্গা। তখনকার দিনে গঙ্গার কাছে যাঁদের বাড়ি ছিল তাঁদের মাঝেমধ্যেই গঙ্গায় স্নান করতে যাওয়ার প্রবণতা ছিল। বিমলবাবুর ঠাকুমাও মাঝে মধ্যেই যেতেন গঙ্গা স্নানে। সঙ্গে যেতেন নাতি বিমল। গঙ্গার পাড়ে তখন মাটির পুতুল বিক্রির চল ছিল। ঠাকুমার স্নেহের মন নাতিকে ভালবেসে কিনে দিতেন ওই পুতুল। খুব ছোট বয়সে হাতে পাওয়া এই মাটির পুতুলই ছিল ভাস্কর্যের প্রতি প্রথম প্রেম। মাটির পুতুলগুলোর দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে বিমলবাবুর শিল্পী মন উদাস হয়ে যেত। ভাবত কবে সেও এমন পুতুল গড়বে। বাড়িতেই শুরু হল তুলসীতলার মাটি দিয়ে ওরকম পুতুল তৈরির চেষ্টা। ছাদটা ছিল ছোট্ট বিমলের স্টুডিও। সেখানেই এক কোনায় বসে চলত বাড়ির সকলকে লুকিয়ে অপটু হাতে মূর্তি গড়া।

এই পুতুল প্রেম থেকেই আস্তে আস্তে চাগাড় দিল কুমোরটুলি যাওয়ার ইচ্ছে। কিন্তু মাঝে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ। বাড়ির কড়া হুকুম, অত ছোট ছেলে একা একা রাস্তা পের হবে না। অগত্যা স্কুল ছুটির পর লুকিয়ে শুরু হল কুমোরপাড়ায় যাতায়াত। আর ছুটির দিন হলে তো কথাই নেই। সকালে একবার কুমোর পাড়ায় ঘণ্টা কয়েক কাটিয়ে দুপুরে বাড়ি। দ্রুত চান খাওয়া সেরে ফের বিকেল তিনটে বাজতেই কুমোরপাড়ায়।

তাঁর বয়সের ছেলেরা যখন মাঠে বা গলিতে খেলে বেড়াতো, সেই সময়ে বিমল কুণ্ডুর শিল্পী মন অবাক চোখে চেয়ে থাকতো কুমোরটুলির শিল্পীদের মূর্তি গড়ার দিকে। তাঁর চোখে তখন এঁরাই ছিলেন বিশ্বের সেরা শিল্পী। কুমোরটুলিতে বারবার যেতে যেতে বেশ কয়েকজন শিল্পীর সঙ্গে বেশ আলাপ জমে গেছিল। তাঁদের খুপরি ঘরে ছোট্ট বিমলের ছিল অবাধ যাতায়াত। তাঁরাই ছোট্ট ছেলেটার উৎসাহ দেখে তাকে মাটি মাখা থেকে মূর্তি গড়ার কৌশল শেখাতে শুরু করেছিলেন। ফলে শিল্পের হাতেখড়িটা এই কুমোরটুলিতেই। এর বাইরেও যে শিল্পের একটা বিরাট জগত আছে তা বড় একটা জানা ছিলনা বিমল কুণ্ডুর।

এভি স্কুলের উল্টোদিকে অশোক গুপ্ত ঠাকুর গড়তেন। একটু অন্যধরনের ঠাকুর। কী সব নতুন নতুন ভাবনা! অবাক করে দেওয়া শিল্প। মুগ্ধ হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেদিকে তাকিয়ে থাকতো ছোট্ট ছেলেটা। আর কুমোরপাড়ার শিক্ষাকে কাজে লগিয়ে বাড়ির ছাদে চলত ঠাকুর গড়ার চেষ্টা। ততদিনে গঙ্গার পাড় থেকে মাটির ঢেলা আনা শুরু হয়েছে। কুমোরদের কাছে‌ নৌকায় করে যে মাটি আসত সেই মাটির ঢেলাই লুকিয়ে ছাদে জমা করা থাকতো। আর অন্য বাড়ির ছেলেরা যখন ছাদে উঠে ঘুড়ির সুতোয় টান দিতে ব্যস্ত থাকতো তখন ছোট্ট বিমল মেতে থাকত মূর্তি গড়ার আনন্দে। তবে বাড়ির ছাদে মূর্তি গড়া সহজ কাজ ছিল না। বাড়ির বড়দের চোখে পড়লে নিমেষে ভেঙে দিত মূর্তি। সব চেষ্টা চোখের সামনে গুঁড়িয়ে যেত। তবে বাড়ির ঘোর অমতও পিছু হটাতে পারেনি বিমলের শিল্প সত্ত্বাকে।

মূর্তি গড়ার টানে লেখাপড়াটা তেমন হয়নি। স্কুলের গণ্ডিটা পর্যন্ত ঠিকঠাক উৎরানো হয়নি। সল্টলেকের বাড়িতে বসে বেশ সহজ গলায় স্বীকার করে নিলেন মধ্যবয়সের এই শিল্পী। সেসময়ে ১৪ বছর টানা ঠাকুর গড়েছি। একটানা। কুমোরটুলির সব শিল্পীই তাঁকে একডাকে চিনত। তবে মূর্তি গড়াই যে তাঁর লক্ষ্য নয় তা কিছুদিনের মধ্যেই অনুভব করলেন বিমল কুণ্ডু। রামকিঙ্কর বেজ, দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরী, গণেশ পাইনের মত শিল্পীরা তাঁর মনে প্রাণে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শুরু হল ভাস্কর হওয়ার লক্ষ্যে দৌড়।

তখন নকশাল আন্দোলন চলছে। কফি হাউসের আড্ডা নিত্যনতুন জন্ম দিচ্ছে কবি, সাহিত্যিক, শিল্পীর। নাটকে তখন নামকরা ব্যক্তিত্বেরা একর পর এক মঞ্চ কাঁপাচ্ছেন। শুরু হল চুটিয়ে নাটক দেখা। বই পড়া। পাশে একটা লাইব্রেরি ছিল সেখানে প্রাত্যহিক খবরের কাগজ খুঁটিয়ে পড়া। যুবক বিমল বেশ বুঝলেন দেশ কাল সম্বন্ধে পরিস্কার ধারণ না থাকলে একজন সম্পূর্ণ ভাস্কর হয়ে ওঠা মুশকিল। প্রথাগত পড়ার পাঠ চুকে গেছে। ফলে হাতে অগাধ সময়।  লক্ষ্যে ছোটার জন্য এই সময়টাকে কাজে লাগালেন যুবা বিমল।

গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজে ঢোকার কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ ওখানে নিদেনপক্ষে বারো ক্লাস পাস দরকার। তাতো নেই। অগত্যা শুরু হল গুরু খোঁজা। যুবা বিমল হাজির হলেন শান্তিনিকেতনে। দেখা করলেন রামকিঙ্কর বেজের সঙ্গে। সব কথা শুনে তাঁকে বাড়িতে রাখতেও সম্মত হলেন তিনি।  কিন্তু খাওয়া? দুবেলা খেতে না পেলে কীভাবে চলবে। রামকিঙ্করবাবু সাফ জানিয়ে দিলেন তাঁর কাছে থাকা, শিক্ষা সব হবে। কিন্তু খাবার ব্যবস্থা তাঁর পক্ষে করা সম্ভব নয়। ফলে বাধ্য হয়েই কলকাতায় ফিরতে হল বিমল কুণ্ডুকে।

কলকাতায় আসার পর জানতে পারলেন মাদ্রাজ (তখন চেন্নাইকে মাদ্রাজই বলা হত) থেকে কলকাতায় ফিরেছেন প্রখ্যাত ভাস্কর দেবীপ্রসাদ রায়চোধুরী। ফলে সময় নষ্ট না করে এবার দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরীর বাড়ি হাজির হলেন বিমল কুণ্ডু। বাড়িতে ঢোকার মুখে এক বৃদ্ধ ভদ্রলোকের সঙ্গে দেখা হল। তাঁকেই সব খুলে বললেন যুবা বিমল। তাঁর উৎসাহ দেখে ওই ভদ্রলোকই একজনকে ডেকে বলে দিলেন দেবীপ্রসাদের কাজগুলো একে ঘুরিয়ে দেখাও।

একের পর এক ঘরের দরজা খুলল। আর নতুন নতুন কাজ চমকে দিতে লাগল বিমলের শিল্পী মনকে। যিনি বিমলকে সব ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিলেন তিনিই বললেন, ‘আরে তুমি প্রথমে ‌যাঁর সঙ্গে কথা বললে তিনিই তো দেবীপ্রসাদ’! আগে কখনও তাঁকে দেখেননি। ফলে না চেনাটাই স্বাভাবিক। বৃদ্ধ দেবীপ্রসাদ তাঁকে বাড়িতে আসার অনুমতি দিলেন। সেখানে বাড়ির প্রায় সবকাজই তাঁকে করতে হত। অনেকটা গুরুগৃহে থাকার মত। সেই সঙ্গে আর্ট কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে তাদের সঙ্গেও শুরু হল সময় কাটানো। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই বিমল বুঝতে পারলেন ভাস্কর্যের পাঠের চেয়ে জোগাড়ের কাজ করেই সময় যাচ্ছে তাঁর। অগত্যা অন্য রাস্তায় ভাবা শুরু।

অনেক ভাবনা চিন্তার পর বিমল কুণ্ডু বুঝলেন যদি সত্যিই বড় শিল্পী হতে হয় তাহলে আর্ট কলেজে ভর্তি হওয়া ছাড়া গতি নেই। তাই টিউশনের টাকায় ফের প্রাইভেটে বারো ক্লাসের গণ্ডি উৎরনোর জন্য পড়াশোনা শুরু করলেন তিনি। পাসটা দরকার। কারণ এই পাসের হাত ধরেই আর্ট কলেজের দরজা খুলবে তাঁর সামনে। এক চান্সে পাসও করে গেলেন। এবার গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজে। সেখানে প্রথম তালিকায় নাম উঠল না বিমলের। তবে আসা ছাড়লেন না। বের হল দ্বিতীয় তালিকা। তাতে মাত্র দুজনের ঠাঁই হল। আর ভাগ্যক্রমে সেই দুজনের একজন হলেন বিমল কুণ্ডু।

আর্ট কলেজে ঢোকার পর দুনিয়াটাই বদলে গেল। যেদিকে তাকাচ্ছেন সেদিকেই মহান শিল্পকীর্তি। পরতে পরতে অবাক করা সব কাজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। বিমল বুঝলেন এবার তিনি লক্ষ্যে পৌছনোর সঠিক রাস্তার হদিস পেয়েছেন। সরকারি আর্ট কলেজে সাত বছর টানা পড়াশোনা। আশির দশকের শুরুতে পাশ করে বের হলেন সেখান থেকে। তাঁর নিজের মতে, একজন শিল্পীর দরকার একটা ঘর। কাজ করার জায়গা। আর শান্তি। বাবার বিশাল বাড়ি থাকায় শ্যামপুকুর স্ট্রিটের বাড়ির একতলার একটা ঘরকে স্টুডিও বানাতে অসুবিধা হল না। ছোট থেকেই মনে মনে ঠিক করেছিলেন কোনও দিন চাকরি করব না, ব্যবসা করব না। লক্ষ্যে অবিচল বিমলের জীবনে তাই হল। শ্যামপুকুর স্ট্রিটেই নিজের সৃষ্টি সুখের উল্লাসে বিভোর হয়ে গেলেন শিল্পী বিমল কুণ্ডু।

মাটি থেকে ব্রোঞ্জ, পাথর থেকে লোহা। কাঠ থেকে প্লাস্টার অফ প্যারিস। কোনও কিছুই বাদ যায়নি। সব মিডিয়ামেই নিজের সৃষ্টির সাক্ষর রাখতে শুরু করলে তিনি। মাঝে ন্যুড স্টাডিও করেছেন কিছুদিন। দিনরাত এক করে চলল সৃষ্টি সৃষ্টি আর সৃষ্টি। লক্ষ্যের দিশা যে তখন খুঁজে পেয়ে গেছে যুবক বিমলের শিল্পী মন।

আশির দশকে তো বটেই, এমনকি নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্তও চিত্রকরদের ছবি মোটা দামে বিকলেও ভাস্কর্যের তেমন কদর ছিলনা। ফলে পয়সাও ছিলনা। ‌যাঁরা সংগ্রহ করতেন তাঁরাও ভাস্কর্যের চেয়ে ছবি কেনাতেই বেশি উৎসাহী ছিলেন। কিন্তু মনে প্রাণে ভাস্কর বিমল নিজের কাজেই মেতে রইলেন। তিনি ভাস্কর হবেন। শুধুই একজন ভাস্কর।

পঁচানব্বইয়েই পর থেকে ভাস্কর্য বিক্রি শুরু হল। বাঙালি ক্রেতা থাকলেও মূল বিক্রিটা শুরু হয় অবাঙালিদের হাত ধরেই। বেশ শ্লেষের সঙ্গে বিমলবাবু জানালেন, বাঙালিদের একটা ধারণা আছে, ওরা কি জানে! মানে অবাঙালিরা শিল্পের কি বোঝে? তাঁর মতে, এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। অবাঙালিরা শিল্পের কদর বোঝেন। তা নিয়ে রীতিমত চর্চা করেন। শিল্পীদের সম্মান দেন। শিল্পের গুণগত মান বোঝার ক্ষমতা দেখার মত। বেশ বোঝা গেল অবাঙালি ক্রেতাদের নিয়ে শিল্পীর মনে কতটা শ্রদ্ধা রয়েছে।

জাতীয় পুরস্কার থেকে শুরু করে জীবনে বহু পুরস্কারই পেয়েছেন। মোবাইল বা গাড়ি নয়, জীবনে একটাই শখ ছিল সল্টলেকে নিজের একটা বাড়ি। সেটা হয়েছে। নিঃসঙ্গতা এখনও তাঁকে টানে। জানালেন সল্টলেকে বাড়ি কেনাটা এজন্যই। পরিবার নেই। একা মানুষ। একা নিজের মনে শুধু নিত্যনতুন শিল্পের আনন্দে মেতে থাকতে চান বিমল কুণ্ডু। শিল্পই তাঁর প্রথম প্রেম, শেষ প্রেম। সাক্ষাৎকার শেষে তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি, ‘জানেন, এখনও যখন নিজের কোনও কাজের গায়ে হাত বোলাই, মনে হয় যেন প্রেমিকার গায়ে হাত বোলাচ্ছি’।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *