আকাশের বুকে পূর্ণিমার উজ্জ্বল চাঁদ দেখে অভ্যস্ত সকলেই। কিন্তু চাঁদের রূপ ২০১৮ সালে হয়ে উঠতে চলেছে আরও রক্তিম। আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। ৩১ জানুয়ারি বিকেল হতেই জগতবাসীর চোখ চাতকের মতো খুঁজে চলবে বৃহদাকার চাঁদকে। এ চাঁদ নিত্যদিনের দেখা চাঁদের থেকে একেবারেই আলাদা। ২৪ ঘণ্টা পরে আকাশের বুক চিরে যে চাঁদ ভেসে উঠবে, সে হল ‘সুপার ব্লু ব্লাড মুন’। নাম শুনে ভাববেন না যেন যে চাঁদের রং পাল্টে হয়ে যাবে নীলচে লাল? আসলে আগামী বুধবার বিকেলে চন্দ্রগ্রহণ শেষেই আকাশের বুকে জেগে উঠবে ‘মহাজাগতিক’ চন্দ্র।
ব্লু মুনের কথা কমবেশি আমরা অনেকেই জানি। কোনও মাসের দ্বিতীয় পূর্ণিমার চাঁদকে বলা হয় ‘নীল চাঁদ’। আর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় ‘সুপার মুন’ তখনই নজরবন্দি হয়, যখন চাঁদ পৃথিবীর কিছুটা ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। অর্থাৎ পৃথিবীর সঙ্গে দূরত্ব স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কমে যায়। যার ফলে চাঁদ পৃথিবীর কিছুটা হলেও কাছে আসে। যার জেরে উজ্জ্বল ও বড় দেখায় চাঁদকে। চাঁদকে খালি চোখেই দেখতে লাগে বিশালাকার।
আর ‘ব্লাড মুন’ কি? চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের এক পিঠকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে তোলে পৃথিবীর ছায়া। পৃথিবীর খুব কাছে থাকার কারণে চাঁদের এক পিঠ যদিও পুরোপুরি অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে থাকে না। সূর্যের আলোয় আলোকিত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে এসে চাঁদের আঁধারে ঢাকা পৃষ্ঠদেশ হয়ে ওঠে রক্তিম। সেই লালচে আভার সাথে তুলনা করা যায় তামার বর্ণের। সেই কারণে আপাত হলুদ চাঁদের রং পাল্টে দেখতে লাগে ‘রক্তিম’।
আমেরিকা থেকে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের এমন ত্রিবিধ রূপ দেখা গিয়েছিল ১৮৬৬ সালে। এরপর ১৯৮২ সালে এশিয়াবাসী শেষবারের মতো প্রত্যক্ষ করেছিলেন ‘সুপার ব্লু ব্লাড মুন’-কে। ৩৬ বছর পর আরও একবার পৃথিবীবাসী সাক্ষী হতে চলেছেন সেই বিরল মহাজাগতিক বিস্ময়ের। শর্ত একটাই। সেই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করার জন্য চাই পরিস্কার মেঘহীন আকাশ। এখানেই নিজেদের সৌভাগ্যের কথা ভেবে পিঠ চাপড়াতে পারেন ভারত, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, চিন, থাইল্যান্ডের বাসিন্দারা। আবহাওয়া যদি অনুকূল থাকে, তবে এই সব জায়গার বাসিন্দারা চন্দ্রগ্রহণ শেষেই রাতের আকাশে সুপার ব্লু ব্লাড মুন দেখতে পাবেন দুচোখ ভরে।