Entertainment

অকালে চলে গেলেন শ্রীদেবী, রেখে গেলেন একরাশ স্মৃতি

১৯৬৩ সালের ১৩ অগাস্ট এক তামিল পরিবারে জন্ম শ্রীদেবীর। তামিলনাড়ুর শিবকাশীতে জন্ম ও বড় হওয়া। ছোট্ট শ্রী আম্মা আয়েঙ্গার আয়াপ্পান বা পরবর্তীকালের শ্রীদেবীর বাবা ছিলেন উকিল। মা গৃহবধূ। আর পরিবারে ছিল তাঁর ২ সৎভাই। মাত্র ৪ বছর বয়সে সিনেমার রূপোলী পর্দায় আত্মপ্রকাশ। শিশু শিল্পী হিসাবে তামিল সিনেমা ‘থুনাইভান’ দিয়ে জীবনে পথ চলা শুরু করেন। তারপর থেকে শিশু শিল্পী হিসাবে বহু তামিল ও তেলেগু সিনেমায় তাঁর অভিনয় চলতে থাকে। পাশাপাশি কন্নড় সিনেমাতেও তাঁকে দেখা যায়। ১৯৭৫ সালে হিন্দি সিনেমা ‘জুলি’-তে শিশু শিল্পী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন।

১৯৭৬ সালে প্রথম ১৩ বছর বয়সে তামিল ছবি ‘মুন্দরু মুন্দরু’-তে শিশু শিল্পীর তকমা ঝেড়ে ফেলে পূর্ণাঙ্গ নায়িকা হিসাবে সামনে আসেন শ্রীদেবী। ১৯৭৮ সালে দক্ষিণ ছেড়ে চলে আসেন আরবপাড়ের সিনেমা করতে। বলিউডের বৃহত্তর সিনেমা জগতে পা রাখেন ‘ষোলবা সাওয়ন’ সিনেমা দিয়ে। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একই সঙ্গে বলিউড ও তামিল-তেলেগু সিনেমায় চুটিয়ে অভিনয় করতে থাকেন তিনি। আশির দশকে কার্যত অন্যতম ব্যস্ত নায়িকা হয়ে ওঠেন শ্রীদেবী।


হিন্দি সিনেমায় ৫ বছর অভিনয় করলেও ১৯৮৩ সালে প্রথম ‘হিম্মতওয়ালা’ সিনেমায় জিতেন্দ্রর বিপরীতে অভিনয় করে বলিউডের লাইমলাইটে এসে পড়েন শ্রীদেবী। কমল হাসানের সঙ্গে তাঁর সিনেমা ‘সদমা’-য় শ্রীদেবীর অভিনয় প্রতিভার কথা মুখ মুখে ছড়িয়ে দিয়েছিল। ‘মাওয়ালি’, ‘তোফা’, ‘নয়া কদম’, ‘মকসদ’, ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’, ‘ওয়াক্ত কি আওয়াজ’, ‘চাঁদনি’, ‘নাগিনা’ একের পর এক হিট সিনেমায় অভিনয় করতে থাকেন শ্রীদেবী। এত গেল ৮০-র দশকের কথা। ৯০-এর দশকেও ‘লমহে’, ‘খুদা গওয়াহ’, ‘গুমরাহ’, ‘চালবাজ’, ‘লাডলা’, ‘জুদাই’ অভিজ্ঞ শ্রীদেবীর অভিনয় আর রূপের ছটায় সকলকে মুগ্ধ করে দেয়।

‘জুদাই’-এর পর অবশ্য নিজেকে গুটিয়ে নেন সিনেমার রূপোলী জগত থেকে। তার আগে অবশ্য ১৯৮৪ সালে ‘জাগ উঠা ইনসান’ সিনেমার শ্যুটিংয়ের সময় মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর প্রণয়ের সম্পর্ক নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয়। পরে মিঠুন চক্রবর্তী মিডিয়ার সামনে স্বীকারও করে নেন যে তিনি ও শ্রীদেবী গোপনে বিয়ে করেছেন। পরে অবশ্য সেসব মিটে যায়। ১৯৯৬ সালে অনিল কাপুরের দাদা বলিউডের অন্যতম প্রখ্যাত প্রযোজক বনি কাপুরকে বিয়ে করেন শ্রীদেবী। তারপরের বছর ‘জুদাই’ সিনেমায় অভিনয়ের পর সিনেমা জগতকে টা টা করে আদর্শ গৃহিণীর ভূমিকায় নিজেকে নিমজ্জিত করেন শ্রীদেবী। তাঁর দুই মেয়ে হয়। জাহ্নবী ও খুশি। জাহ্নবী এখন নিজেও সিনেমার নামার মুখে।


তবে যাঁর রক্তে সিনেমা, যিনি মাত্র ৪ বছর বয়স থেকে সিনেমায় অভিনয় করছেন, তিনি আর কতদিন সিনেমা থেকে দূরে থাকবেন? ২০১২ সালে ফের শ্রীদেবী ফেরেন সিনেমায়। এসেই কামাল দেখান। ‘ইংলিশ ভিংলিশ’ সিনেমায় তাঁর অভিনয় রীতিমত শোরগোল ফেলে দেয়। তাছাড়া সম্প্রতি তাঁর ‘মম’ সিনেমাও বহু সমালোচককে মুগ্ধ করেছে।

২০১৩ সালে ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত করে। এছাড়া জীবনে বহু পুরস্কার পেয়েছেন শ্রীদেবী। ১৪ বার ফিল্মফেয়ারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। ফিল্মফেয়ার জিতেছেন ৬ বার। বহু পুরস্কার, বহু সম্মান, বহু খ্যাতি। তার সঙ্গে রইল তাঁর কাজ। যা চিরদিন শ্রীদেবীকে বাঁচিয়ে রাখবে মানুষের হৃদয়ে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button