Sports

রোহিতের সেঞ্চুরি, চাহালের ঘূর্ণি, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে শুরু করল ভারত

বিশ্বকাপে জয় দিয়ে শুরু করল ভারত। যদিও সহজ রান তাড়া করতে নেমে ম্যাচকে কিছুটা হলেও এক সময়ে কঠিনের দিকে নিয়ে গিয়েছিল ভারত। তবে তা দ্রুত সামলে নেয় রোহিত-ধোনি জুটি। এদিন ভারত জেতে ৬ উইকেটে। টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে কঠিন পিচে ২২৭ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। কম রান তাড়া করতে নেমে ভারত দ্রুত জিতে যাবে বলেই মনে করেছিলেন অনেকে। কিন্তু তা বাস্তবে হয়নি। বরং জিততে যথেষ্ট লড়াই দিতে হয় তাদের। রোহিতের চওড়া ব্যাটে ১২২ রান না এলে ভারতের জন্য জয় আরও কঠিন হতেই পারত।

টস জিতে বুধবার সাউদাম্পটনে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ডু প্লেসি। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ভুবনেশ্বর কুমার ও যশপ্রীত বুমরাহকে ঠেকাতে সমস্যা হচ্ছিল প্রোটিয়াদের। দলের ২৪ রানের মধ্যেই হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক-এর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় তারা। ডু প্লেসি ও রাসি ফন ডার ডাসেন রান তোলার মরিয়া চেষ্টা চালালেও রানের গতি কমে যায়। কিন্তু সেখানেও বিপত্তি। দক্ষিণ আফ্রিকার মিডল অর্ডার এদিন ধসিয়ে দেয় একা চাহালের বিষাক্ত ঘূর্ণি।


একে একে ডাসেন (২২), ডু প্লেসি (৩৮), মিলার (৩১) ও ফেলুকাও (৩৪)-কে প্যাভিলিয়নে ফেরান চাহাল। ডুমিনিকে মাত্র ৩ রানে ফিরিয়ে দেন কুলদীপ যাদব। শেষের দিকে ক্রিস মরিস ও রাবাডা রান তোলার লড়াই চালান অনেকটা। এঁদের ২ জনের লড়াইয়ের জোরেই এদিন দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ পর্যন্ত ২২৭ রানে পৌঁছয়। মরিস করেন ৪২ রান। আর রাবাডা ৩১ রান করে অপরাজিত থাকেন। ভারতের ভুবনেশ্বর ও যশপ্রীত ২টি করে উইকেট পান।

খুব বিশাল রান নয়। ফলে ধরে খেলাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু এদিন ওপেন করতে নেমে মাত্র ৮ রান করেই ফেরেন শিখর ধাওয়ান। বিশ্বকাপের শুরুটা তাঁর ভাল হল না। অধিনায়ক বিরাট কোহলিও ফেরেন ১৮ রান করে। কিন্তু এদিন বিধ্বংসী চেহারা নেন রোহিত শর্মা। তাঁর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ সঙ্গত দেন কেএল রাহুল (২৬)। রাহুল ফেরার পর রোহিতের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ধোনি। রোহিত-ধোনি জুটি খেলাকে প্রায় জয়ের দোরগোড়া পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান। ৩৪ রান করে ধোনি যখন ফেরেন তখন ম্যাচ অনেকটাই হাতের মুঠোয়।


এদিন রোহিত শর্মার ব্যাটিং ছিল অনবদ্য। যদিও প্রথমে তাঁকে দেখে বড় একটা স্বস্তিতে ছিলেন না ভারতীয় সমর্থকেরা। প্রথম ২০ বল খেলে রোহিত করেন মাত্র ৫ রান। এরমধ্যে একটি ক্যাচ তুলেছেন। যা হাতছাড়া হয় দক্ষিণ আফ্রিকার। এছাড়াও অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল ব্যাটের কানা ঘেঁষে বার হয়ে যায় কয়েকবার। এটা সকলের জানা যে রোহিত শর্মা নেমেই চালিয়ে খেলতে স্বচ্ছন্দ নন। সেট হতে সময় নেন। কিন্তু একবার সেট হয়ে গেলে তিনি বিধ্বংসী। প্রথমে সেট হওয়ার জন্য যে কটা বল তিনি নষ্ট করেন, সেই বল ছাপিয়ে রান তুলে দেন তখন। এদিনও কিন্তু ছবিটা প্রায় ছিল একই রকম।

এদিন শুরুতে নেমে ম্যাচ শেষ হওয়া পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন। করেন ১২২ রান। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি পান। শেষের দিকে অবশ্য রোহিত রাবাডার বলে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই অতি সোজা ক্যাচ ফেলে দেন মিলার। এদিন ম্যাচের সেরাও হন রোহিত শর্মা। পিচ যে খুব সোজা ছিল তা নয়। বোলার সহায়ক পিচ। সেখানে রোহিত যেভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার সব বোলারদের তুলোধোনা করলেন তা কিন্তু বিশ্বকাপে ভারতের জন্য ভাল খবর। রোহিত এদিন ১৩টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান।

এদিন ধোনি ফেরার পর নামেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। আর হার্দিক ক্রিজে মানেই তাঁর হাত থেকে চার, ছয় আসা। এদিনও তাই হয়। নিজের সেই চেনা ছন্দ ধরে রেখে মাত্র ১৫ রান করার সুযোগ পান তিনি। তাতেই ছিল ৩টি চার। এদিন হারের ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের প্রথম ৩টি ম্যাচই হারল। ফলে তারা পৌঁছে গেল তালিকার সবচেয়ে নিচে। অন্যদিকে ভারত ১টি ম্যাচ খেলে জয়ের পর পয়েন্ট টেবিলে ৬ নম্বরে রয়েছে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button