Sports

সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল ভারত, লড়ে হারল বাংলাদেশ

১ ম্যাচ বাকি থাকতেই বাংলাদেশকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল ভারত। টেবিলের ২ নম্বরেই রয়ে গেল তারা। ২৮ রানে এদিন বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয় ভারত। তবে এটা সব ভারতীয় মেনে নেবেন যে শক্তিশালী ভারতের বিরুদ্ধে সমানে সমানে টক্কর দিয়ে গেছে বাংলাদেশ। জয়ের মত পরিস্থিতিও তৈরি করেছিল। কিন্তু উইকেট হারিয়ে ফের তারা একটু চাপে পড়ে। এমনটা চলতেই থাকে। একবার করে বাংলাদেশের আশা উজ্জ্বল হয়েছে। তারপরই উইকেট পড়ে সেই আশা মিইয়ে গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত যেভাবে বোলাররাও লড়াই দিলেন তা দেখে মুগ্ধ সকলেই।

বাংলাদেশকে হারাতে এদিন রীতিমত কালঘাম ছুটে গেছে বিরাটদের। তার ওপর রোহিত শর্মা যিনি ভারতীয় স্কোর বোর্ডকে এদিন একাই ১০৪ রান উপহার দিয়েছেন, সেই রোহিতের ক্যাচ শুরুতেই ফেলেন তামিম। যার খেসারত গোটা ম্যাচ জুড়ে দিতে হয়েছে গোটা বাংলাদেশ টিমটাকে। ম্যাচের সেরাও হয়েছেন রোহিত শর্মা।


বারমিংহামের এজবাস্টনের পিচে এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বিরাট কোহলি। রোহিত একটা ক্যাচ তুললেও এর বাইরে রোহিত ও কেএল রাহুল মিলে যে শুরুটা ভারতকে দিয়েছিলেন তাতে ভারতের সাড়ে ৩০০ রান তোলাটা মোটামুটি নিশ্চিত ছিল। ভারতের ১৮০ রানের মাথায় দলের প্রথম উইকেট পড়ে। রোহিত আউট হন ১০৪ রান করে। এরপরই ৭৭ রান করে ফেরেন রাহুল।

বিরাট কোহলি ও ঋষভ পন্থ বেশ কিছুক্ষণ টানেন। বিরাট ফেরেন ২৬ রান করে। বিরাট ফেরার পর যাঁর হাত ধরে ভারত দ্রুত সাড়ে ৩৫০ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল সেই হার্দিক পাণ্ডিয়াকে এদিন ০ রানে ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান। কোহলি ও হার্দিকের উইকেট একই ওভারে তুলে ভারতকে চাপে ফেলেন তিনি। এরপর ধোনি ৩৫ রানের একটা ইনিংস খেলতে পারলেও অন্যরা পরপর উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে ফেরেন।


বড় শট মেরে দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় পরপর আউট হন দীনেশ কার্তিক (৮), ভুবনেশ্বর কুমার (২), মহম্মদ সামি(১)। ভারত ৫০ ওভার খেলে ৯ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩১৪ রান। বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমান একাই তুলে নেন ৫ উইকেট।

বিশাল রান তো বটেই। তবে এখন ৩১৫ রান টার্গেট করে ছোটা একদিনের ক্রিকেটে খুব কঠিন কাজও নয়। সেই লড়াইটাই দেওয়া শুরু করে বাংলাদেশ। যা তারা তাদের ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত চালিয়ে গেছে। তামিম ইকবাল ২২ ও সৌম্য সরকার ৩৩ রান করে ফেরার পর সাকিব আল হাসান ও উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম। মুশফিকুর ২৪ করে ফেরার পর সাকিবের সঙ্গে জুটি বাঁধেন লিটন দাস।

লিটনের ব্যাট থেকেও এদিন কিছু ভাল শট দেখা গেছে। বাংলাদেশের উইকেট পড়তে থাকলেও তারা রানের পিছনে ছোটা বন্ধ করেনি। কোথাও স্লো হয়ে পড়েনি। ভারতের কঠিন বোলিং আক্রমণের সামনে আত্মসমর্পণ করেনি। বরং পাল্টা বারেবারে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রহার করেছে। রান তুলেছে। আর খেলায় উত্তেজনাটা জিইয়ে রেখেছে।

লিটন দাস ২২ রানে ফেরার পর মোসাদ্দেক হোসেন মাত্র ৩ রান করে আউট হন। এরপরই ফেরেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভরসা সাকিব (৬৬)। এই সময় যখন সকলে ধরেই নিয়েছেন আর বাংলাদেশ শেষ। এরপর তারা যা হোক করে উইকেট বাঁচানোর লড়াই করবে। সেখানে বাংলাদেশ কিন্তু ৬ উইকেট হারিয়েও ঘুরে দাঁড়ায়।

সাব্বির রহমান ও মহম্মদ সইফুদ্দিন এক মরণপণ লড়াই শুরু করেন। পাল্টা বড় রানের পিছনে ধাওয়া করতে থাকেন এঁরা। এখানে ভারত চাপে না পড়লেও তাদের কপালের ভাঁজ পুরু হয়। সাব্বির রহমান ৩৬ রান করে ফেরার পর অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা ৮ রান করে প্যাভিলিয়নমুখো হন। এখানেও কিন্তু বাংলাদেশের আশা শেষ হয়নি। তখনও শেষ লড়াইটা দিয়ে যান মহম্মদ সইফুদ্দিন।

জেতার জন্য ঝাঁপানোর মত জায়গায় পৌঁছেও যায় বাংলাদেশ। কিন্তু এখানেই সইফুদ্দিনকে অন্যদিক থেকে ঠেকনা দিয়ে উইকেট বাঁচানোর লড়াইটা বুমরাহর সামনে হেরে যান রুবে‌ল হোসেন (৯) ও মুস্তাফিজুর রহমান (০)। পরপর ২ বলে ২ উইকেট নিয়ে খেলার দাঁড়ি টানেন বুমরাহ। জলে যায় অপরাজিত থেকে সইফুদ্দিনের ৫১ রানের লড়াই।

বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে ভারতের শেষ ম্যাচ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। শ্রীলঙ্কার ওই ম্যাচে পাওয়ার কিছু নেই। কারণ তারা সেমিফাইনালের লড়াই থেকে ছিটকে গেছে। আর ভারতের সেমিফাইনাল ইতিমধ্যেই পাকা হয়ে গেছে। তবে ১ নম্বর স্থানে ওঠার লড়াই একটা হতে পারে। ভারত জিতলে আর অজিরা হারলে ভারত চলে যাবে টেবিলের মাথায়।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button