টানা ২৭ বছর শোওয়ার ঘরে বন্দি, মেয়ে হারিয়ে গেছে বলে রটিয়ে দেন বাবা মা
২৭ বছর ধরে মেয়েকে শোওয়ার ঘরে বন্দি করে রেখে দিলেন বাবা মা। আর বাইরে সকলকে জানালেন তাঁদের মেয়ে নিরুদ্দেশ। কোথায় হারিয়ে গেছে তা তাঁদের জানা নেই।

মেয়েটির যখন ১৫ বছর বয়স তখন থেকে সে হঠাৎ বেপাত্তা হয়ে যায়। মেয়ে কোথায়? বাবা মাকে জিজ্ঞেস করলে তাঁরা সকলকে একই কথা জানান। বলেন তাঁদের মেয়ে হারিয়ে গেছে। কোথায় চলে গেছে তাঁরা জানেন না। তার খোঁজ নেই। সে নিরুদ্দেশ।
পাড়া প্রতিবেশি থেকে সকলেই সেকথা বিশ্বাসও করে নেন। বাবা মা যখন বলছেন তাঁদের মেয়ে হারিয়ে গেছে তখন আর কার কি বলার থাকতে পারে! তারপর বছরের পর বছর কাটতে থাকে। গত জুলাই মাসে ওই বাড়িটি থেকে কিছু অস্বাভাবিক আওয়াজ পান প্রতিবেশিরা।
দ্রুত খবর যায় পুলিশের কাছে। পুলিশ এসে বাড়িতে ঢুকে এক মহিলাকে অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। তাঁর পায়ে সাংঘাতিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। চিকিৎসকেরা জানান ওই মহিলার জীবন শেষ হতে আর কিছু দিন বাকি ছিল। তাঁর শরীর সংক্রমণে ভরে গেছে। চিকিৎসা শুরু হয় মিরেলা নামে ওই মহিলার।
পুলিশ জানতে পারে পোল্যান্ডের সুইতোহোউইসে শহরের বাসিন্দা মিরেলা-র যখন ১৫ বছর বয়স তখন তিনি হারিয়ে যাননি। তাঁর বাবা মা তাঁকে বাড়ির শোওয়ার ঘরে আটকে রাখেন। সেই থেকে সেখানেই বন্দি ছিলেন তিনি।
ঘরের বাইরে বার হওয়া নিষেধ ছিল। এমনকি বারান্দাতেও যেতে পারতেন না মিরেলা। কখনও কারও সামনে আসেননি। কখনও কোনও কারণে চিকিৎসার প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যাননি। ওই একটা ঘরেই ২৭ বছর কাটান তিনি। এখন তাঁর বয়স ৪২ বছর। তাঁর দাঁত নষ্ট হয়ে গেছে। শরীরে সংক্রমণ।
কেন তাঁকে এভাবে ২৭ বছর ধরে একটা ঘরে বন্দি করে রেখেছিলেন তাঁর বাবা মা? তার উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। এদিকে ওই মহিলাকে বাঁচাতে খরচ অনেক। সেই অর্থ পাড়া প্রতিবেশিরাই চাঁদা তুলে জোগাড় করার চেষ্টা করছেন। খবরটি বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর সকলেই হতবাক হয়ে গেছেন।