Festive Mood

ধনতেরাসে কী ঢাকা পড়ছে বাঙালির ভূতচতুর্দশী?

ধনতেরাস, এটা খায়, না মাথায় দেয় তাই ভাল করে জানা ছিলনা বাঙালির। কিন্তু এই ক'বছরের ব্যবধানে সোনার দোকান থেকে বাসনের দোকানে এক সপ্তাহ আগে থেকে বাঙালির ভিড় জমানো দেখে অবাক অনেকেই।

ধনতেরাস, অর্থাৎ ধন ত্রয়োদশী। ধনদেবীর আরাধনা। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশীতে ভারত ও নেপালে ধনতেরাস পালনের ঐতিহ্য সুপ্রতিষ্ঠিত।

কথিত আছে সমুদ্র মন্থনের সময় এদিনেই বাসুকি নাগের ফণার তলায় লক্ষ্মীদেবী জল থেকে উঠে এসেছিলেন। আবার মন্থনে উঠেছিলেন চিকিৎসা শাস্ত্রের আদিপুরুষ তথা চিকিৎসকদের শিক্ষক ধন্বন্তরি। তাই এদিনটা ধন্বন্তরি ত্রয়োদশীও।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

প্রবাদ আছে এদিন কোনও ধাতু কিনে ঘরে আনলে সারা বছর সমৃদ্ধি সংসারে বিরাজ করে। সেই প্রবাদকে মাথায় রেখে এই সময়ে প্রধানত উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সোনা, রুপো গয়না থেকে বিভিন্ন ধাতুর বাসনাদি কেনার চল আছে।

কিন্তু এ চল বছর ২০ আগেও বাঙালিদের কাছে অজানা ছিল। বরং কালীপুজোর আগের দিন ভূতচতুর্দশী দিয়েই শুরু হত বাঙালির দীপাবলি।

চতুর্দশীর সকালে বাড়িতে চোদ্দ রকম শাকের মিশ্রণ আসত বাজার থেকে। তারপর মধ্যাহ্নভোজনের পাতে শুরুতেই পড়ত চোদ্দশাক ভাজা। এর নানা ব্যাখ্যা ছিল। অনেকে বলত এদিনে নাকি ‘তেনারা’ সন্ধের পর জাগ্রত হন। তাই তাঁদের হাত থেকে দূরে থাকতে চোদ্দশাক আবশ্যিক। বংশের চোদ্দপুরুষের উদ্দেশ্যে চোদ্দ বাতি দেওয়ার মধ্যে দিয়ে হত আলোর উৎসবের সূচনা।

চতুর্দশীর সন্ধে নামলে বাড়ি বাড়ি জ্বলে উঠল বাতি। গুনে গুনে ১৪টা। টুকটাক বাজিও পুড়ত। কালীপুজোর মণ্ডপে চলত শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। বাজির দোকানে কচিকাঁচা থেকে বড় সকলেই ভিড় জমাত।

কিন্তু ধনতেরাস! এটা খায়, না মাথায় দেয় তাই ভাল করে জানা ছিলনা বাঙালির। কিন্তু এই ক’বছরের ব্যবধানে সোনার দোকান থেকে বাসনের দোকানে এক সপ্তাহ আগে থেকে বাঙালির ভিড় জমানো দেখে অবাক অনেকেই। ধনতেরাসের রোশনাই বাঙালির ভূতচতুর্দশীকেই না অন্ধকারে ঢেকে দেয়! আশঙ্কায় অনেকেই।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *