Festive Mood

ধনতেরাসে কী ঢাকা পড়ছে ভূতচতুর্দশী

ধনতেরাসকে সামনে রেখে সোনা-রুপোর দোকান থেকে বাসনপত্রের দোকানে এখন উপচে পড়ছে আম বাঙালির ভিড়। কিন্তু এ চল বছর ২০ আগেও বাঙালিদের কাছে অজানা ছিল।

ধনতেরাস, অর্থাৎ ধন ত্রয়োদশী। ধনদেবীর আরাধনা। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশীতে ভারত ও নেপালে ধনতেরাস পালনের ঐতিহ্য সুপ্রতিষ্ঠিত। কথিত আছে সমুদ্র মন্থনের সময় এদিনেই বাসুকি নাগের ফণার তলায় লক্ষ্মীদেবী জল থেকে উঠে এসেছিলেন। আবার মন্থনে উঠেছিলেন চিকিৎসা শাস্ত্রের আদিপুরুষ তথা চিকিৎসকদের শিক্ষক ধন্বন্তরি। তাই এদিনটা ধন্বন্তরি ত্রয়োদশীও।

প্রবাদ আছে এদিন কোনও ধাতু কিনে ঘরে আনলে সারা বছর সমৃদ্ধি সংসারে বিরাজ করে। সেই প্রবাদকে মাথায় রেখে এই সময়ে প্রধানত উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সোনা, রুপোর গয়না থেকে বিভিন্ন ধাতুর বাসনাদি কেনার চল আছে। যে রেওয়াজ এখন বাঙালির রান্নাঘরেও ঢুকে পড়েছে।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

ফলে ধনতেরাসকে সামনে রেখে সোনা-রুপোর দোকান থেকে বাসনপত্রের দোকানে এখন উপচে পড়ছে আম বাঙালির ভিড়। কিন্তু এ চল বছর ২০ আগেও বাঙালিদের কাছে অজানা ছিল। বরং কালীপুজোর আগের দিন ভূতচতুর্দশী দিয়েই শুরু হত বাঙালির দীপাবলি পালন।

চতুর্দশীর সকালে বাড়িতে চোদ্দ রকম শাকের মিশ্রণ আসত বাজার থেকে। তারপর মধ্যাহ্নভোজনের পাতে শুরুতেই পড়ত চোদ্দশাক ভাজা। এর নানা ব্যাখ্যা ছিল। অনেকে বলেন এদিনে নাকি ‘তেনারা’ সন্ধের পর জাগ্রত হন। তাই ‘তাঁদের’ হাত থেকে দূরে থাকতে চোদ্দশাক আবশ্যিক।

চতুর্দশী বলে দেওয়া হত ১৪টি বাতি। যে আলো বদআত্মাদের বাড়ি ও পরিবার থেকে দূরে রাখবে। চতুর্দশীর সন্ধে নামলে বাড়ি বাড়ি জ্বলে উঠল বাতি। গুনে গুনে ১৪টা। টুকটাক বাজিও পুড়ত। কালীপুজোর মণ্ডপে চলত শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। বাজির দোকানে কচিকাঁচা থেকে বড় সকলেই ভিড় জমাত।

কিন্তু ধনতেরাস! এটা খায়, না মাথায় দেয় তাই ভাল করে জানা ছিলনা বাঙালির। কিন্তু এই ক’বছরের ব্যবধানে সোনার দোকান থেকে বাসনের দোকানে এক সপ্তাহ আগে থেকে বাঙালির ভিড় জমানো দেখে অবাক অনেকেই।

ধনতেরাসের এই রোশনাই বাঙালির ভূতচতুর্দশীকেই অন্ধকারে ঢেকে দেবে না তো? আপাতত সেই আশঙ্কা প্রবীণ বঙ্গবাসীকে আতঙ্কিত করছে বৈকি!

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *