আলোর উৎসবে ২০ টাকাতেই রঙিন আলোয় ভরছে বাড়ি, ১ টাকায় দাপটে ফিরছে মাটির প্রদীপ
আলোর উৎসবে অশুভ শক্তিকে হারিয়ে জয় হয় শুভ শক্তির। বাড়িঘর থেকে রাস্তাঘাট সবকিছুই সেজে ওঠে রং বেরংয়ের আলোয়। সেখানেই ফিরছে প্রদীপের আলোর স্নিগ্ধতা।

মৌসুমি গুহ মান্না, কলকাতা : দীপাবলির দিন গোটা বাড়িকে প্রদীপের আলোয় বা রঙিন বৈদ্যুতিন আলোয় সাজালে তা আরও মোহময় হয়ে ওঠে। ওইদিন কালীপুজোর সাথে সাথেই কিছু বাড়িতে মালক্ষ্মীর আরাধনাও করা হয়। প্রদীপের সঙ্গে ছোট ছোট রঙিন বাল্বের আলোর মালায় সেজে ওঠে বাড়ির বারান্দা থেকে জানালা। নরম রঙিন আলোয় তৈরি হয় এক মায়াবী জগত।
সময়ের সাথে সাথে প্রদীপের ব্যবহার একটা সময় কমেছিল। তবে এখন তা ফের ফিরে আসছে। এবছর ১ টাকার প্রদীপের খুব কদর। মাটির প্রদীপের প্রতি আকর্ষণ কমার কারণ তার জ্বালানি। একটা সময় প্রদীপের আলো কমেছিল তার তেল বা ঘি-এর খরচের কারণে। তবে সেসব ধারনা পিছনে ফেলে এবার দীপাবলিতে দাপটের সঙ্গে ফিরছে মাটির প্রদীপ।
চিনা আলোর রমরমায় খুব বেশি ভাটা না পড়লেও মাটির প্রদীপ কিন্তু অনেকটাই তার পুরনো সম্মান ও আকর্ষণ ফিরে পেয়েছে। এজরা স্ট্রিট থেকে চাঁদনী অবধি আলোর বাজার জুড়ে ব্যাপক হারে বিক্রি হচ্ছে চিনা এলইডি।
রাহুল সিং নামে এক ব্যবসায়ী জানালেন এলইডি আলোগুলির দাম ২০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যেই ঘোরাফেরা করে। ফলে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত সব শ্রেণির ক্রেতাই নিজেদের পকেট বাঁচিয়েও ঘর সাজানোর সুযোগ পাচ্ছেন। তাই এই আলোর চাহিদাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তবে এই বাজারেও আশার আলো দেখাচ্ছে মাটির প্রদীপের ক্রমবর্ধমান বিক্রি। বিদ্যুতে জ্বলা প্রদীপের আলোর হাতছানিকে দূরে রেখেই মানুষ আবারও ঐতিহ্যশালী মাটির প্রদীপ কেনার দিকে ঝুঁকেছেন। প্রধানমন্ত্রীর আত্মনির্ভর ভারতের ডাকে সাড়া দিয়ে আসন্ন দীপাবলি উপলক্ষে গোটা দেশেই নানা রং এবং নকশার প্রদীপ তৈরি করছেন কুমোর সম্প্রদায়ের মানুষজন।
মাটির প্রদীপের দামও রয়েছে সকলের একেবারে সাধ্যের মধ্যেই। হাতিবাগানের এক বিক্রেতা অসীম দত্ত জানালেন, বাজারে ১ টাকা থেকে শুরু করে ৪০০ টাকা অবধি বিভিন্ন ধরনের প্রদীপ বিক্রি হচ্ছে। মানুষ মাটির প্রদীপ থেকে শুরু করে ঘর সাজানোর জিনিস এবং থালাবাসন অবধি কিনছেন। সমাজে আবার পুরনো প্রথা ফিরে আসায় এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন।