World

৩৩ ঘণ্টার অপারেশন, আলাদা হল জোড়া মাথা

এখন তাদের ৩ বছর বয়স। জন্মের সময় তারা দুজনে দেহ আলাদা হলেও জোড়া মাথা নিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়। তাদের করোটি ২টি জোড়া ছিল। বিষয়টি নজরে আসে হাঙ্গেরির একটি সমাজসেবামূলক চিকিৎসকদের সংগঠনের। জোড়া করোটির রাবেয়া ও রুকিয়াকে হাঙ্গেরি উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ৭ মাস তারা কাটায় চিকিৎসকদের নজরদারিতে। চিকিৎসকেরা তাদের অপারেশনের যাবতীয় প্রস্তুতি সেখানেই নেন। যাতে অপারেশন টেবিলে কোনও সমস্যা তৈরি না হয়।

গত ২২ জুলাই তাদের ফিরিয়ে আনা হয় বাংলাদেশের ঢাকায়। তাদের নিজেদের শহরে। সঙ্গে আসেন ৩০ জনের একটি চিকিৎসক দল। এরপর গত বৃহস্পতিবার শুরু হয় ২ শিশুর করোটি আলাদা করে তাদের আলাদা আলাদা করে পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকার দিশা দেওয়ার চেষ্টা। সেই অপারেশন চলে ৩৩ ঘণ্টা। এতটাই জটিল ছিল এই অপারেশন। একটানা ৩৩ ঘণ্টা ধরে কোনও অপারেশন নিজেই একটা অন্যতম রেকর্ড।

হাঙ্গেরির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এই অপারেশন করেন। সাহায্য করেন বাংলাদেশের চিকিৎসকেরাও। ৩৩ ঘণ্টা অপারেশন চলার পর ২ কন্যাকে আলাদা করা হয়। তাদের জোড়া করোটি আলাদা করা হয়। তারা এখন সর্বক্ষণ পর্যবেক্ষণের মধ্যে রয়েছে। তবে অপারেশন সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন ২ কন্যার পিতা রফিকুল ইসলাম। আপাতত তিনি অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁর ২ মেয়েকে সুস্থ করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। তবে তাঁর মেয়েদের করোটি যে আলাদা করা সম্ভব হয়েছে তাতেই ভীষণ খুশি রফিকুল।

এই ম্যারাথন অপারেশনটি হয়েছে ঢাকার সেনা হাসপাতালে। সেখানেই যাবতীয় বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। শিশু ২টির জন্মের ৫ দিনের মাথাতেই তাদের করোটি ২টি আলাদা করার জন্য বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। কিন্তু এই অপারেশন এতটাই জটিল ছিল যে বাংলাদেশের কোনও চিকিৎসক এই অপারেশনের ঝুঁকি নেননি। অবশেষে হাঙ্গেরির চিকিৎসকেরা অপারেশন করলেন। এখন শিশু ২টি নিজেদের মত সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরলে তবেই ষোলো কাল পূর্ণ হয়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *