Sports

নেহরাজি-কে যোগ্য ফেয়ারওয়েল সতীর্থদের, গ্যালারি বলল ‘তোমায় ভুলব না’

আশিস নেহরা যখন ভারতীয় দলে খেলা শুরু করেন তখন বর্তমান ভারতীয় দলের অনেক খেলোয়াড় ভাল করে ক্রিকেট খেলাটাই শুরু করেননি। ১৯৯৯ সাল, মহম্মদ আজহারউদ্দিনের অধিনায়কত্বে অভিষেক। তারপর একের পর এক অধিনায়ক বদলেছে। ভারতের দায়িত্ব কখনও সামলেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, কখনও রাহুল দ্রাবিড়, কখনও এমএস ধোনি আর এখন বিরাট কোহলি। ড্রেসিং রুমে মুখ বদলেছে। খেলার ফরম্যাট বদলেছে। খেলার ধরণ বদলেছে। ফিটনেস মন্ত্র বদলেছে। কিন্তু আশিস নেহরা ড্রেসিং রুমে আর বাইশ গজে নিজেকে টিকিয়ে রেখে বদলের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে বদলে নিয়েছেন অক্লেশে। কিসের টানে? একটাই উত্তর, ক্রিকেটের।

একের পর এক অস্ত্রোপচার। কেরিয়ার বারবার খাদের কিনারায় এসে ঠেকেছে। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ফের ভারতের হয়ে খেলে সাফল্য এনে দিয়েছেন তিনি। সেই আশিস নেহরা এদিন বিদায় জানালেন ক্রিকেটকে। তাঁর প্রথম ভালবাসাকে। কঠিন মুহুর্ত। কঠিন সিদ্ধান্ত। কিন্তু প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জীবনে এই দিনটা আসে। সামনে অফুরন্ত অবসর, সম্মান। চাপমুক্ত জীবন। আর দুঃখ খেলা ছাড়ার।


আকর্ষণীয় খবর পড়তে ডাউনলোড করুন নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

এই দুই বিপরীতধর্মী ভাবনাকে বুকে নিয়ে এদিন দিল্লির ছেলে দিল্লির মাঠে যখন তাঁর জীবনের শেষ ওভারটা করতে এলেন, তখন মাঠে তাঁর সহ খেলোয়াড়রা হাততালি দিচ্ছেন। বিরাট কোহলি তাতাচ্ছেন দর্শকদের। আর গ্যালারিতে দর্শকরা হাতের মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে গলা ফাটাচ্ছেন। একটাই শব্দ গোটা মাঠ জুড়ে গুঞ্জরিত হতে থাকে। নেহরাজি, নেহরাজি। ১৯ বছরের কেরিয়ারের শেষ ওভারটা তখন হয়তো স্বপ্নের মত লাগছিল নেহরার। এক মুখ হাসি নিয়ে ৩৮ বছরের যুবক একের পর এক বল করতে থাকেন। খেলা শেষে সকলের অভিনন্দন তো ছিলই। সেইসঙ্গে বিরাটদের সঙ্গে করে মাঠ প্রদক্ষিণ।

দর্শকদের টা টা করতে করতে এগিয়ে চলা আশিস নেহরাকে একসময়ে কোলে তুলে নেন বিরাট কোহলি ও শিখর ধাওয়ান। একজন ক্রিকেটারের জীবনে এর চেয়ে আবেগপূর্ণ সময় বোধহয় হতেই পারে না। গোটা পরিবার মাঠে। তাঁদের সামনে বিদায়লগ্নে এই সম্মান চিরকাল আশিস নেহরার স্মৃতিতে তাজা থেকে যাবে।

বাইশ গজে আর ছুটে এসে বিষাক্ত বল করতে দেখা যাবে না আশিসকে। তবে উঠে আসবেন নতুনরা। এমন করেই তো ঘুরতে থাকে জীবন, ইতিহাস। সেইভাবে ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে আশিস নেহরা চিরকাল এক উজ্জ্বল তারকা হয়ে থেকে যাবেন। চর্চিত হবেন দীর্ঘকাল।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *