State

জ্বলছে ভাঙড়, মৃত ২, এলাকায় ঢুকতেই পারলেন না বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা

পুলিশকে লক্ষ করে ইটবৃষ্টি, গুলি, বোমা বর্ষণ, গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ, রাস্তার ওপর আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ, লাঠি হাতে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে স্লোগান। সব মিলিয়ে গত সোমবারের পর মঙ্গলবারও উত্তাপের আগুন জ্বলছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। এদিন বরং প্রতিবাদের পারদ আরও চড়ে। অশান্তি চরম আকার নেয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ২ জনের। অশান্তি থামাতে পুলিশও এদিন পাল্টা লাঠিচার্জ শুরু করে। অবস্থা আয়ত্তে আনতে কাঁদানে গ্যাসও ছোঁড়া হয়। পদ্মপুকুর ও মাছিভাঙা গ্রামে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীদের দফায় দফায় খণ্ডযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশ এদিন সকালে গ্রামের ঘরে ঘরে ঢুকে তল্লাশি চালায়। এলাকাবাসীর দাবি, পুলিশের আতঙ্কে বেশ কিছু মানুষ ঘরছাড়া হতে বাধ্য হন। আর তাতেই ক্ষোভ চরমে ওঠে। দুপুরের পর পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। চলে পথ চলতি গাড়ি ভাঙচুর। বিকেলের দিকে বিশাল পুলিশ বাহিনী গ্রামে গ্রামে হানা দেয়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন এক ব্যক্তি। তাঁর হাতে গুলি লাগে। আহত অবস্থায় তাঁকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অপর এক গ্রামবাসীও গুলিবিদ্ধ হন। তবে গুলি কে চালিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই এদিন সন্ধ্যে বেলা তাঁর মৃত্যু হয়। একটি পাওয়ার গ্রিড তৈরিকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তপ্ত ভাঙড়। সোমবার তা চরমে উঠলে বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও ক্ষোভ থামেনি। এমনকি বিদ্যুৎমন্ত্রীর দাবি, তিনি কথা বলে সমস্যা মেটানোর জন্য আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তাঁর সঙ্গে দেখা করায় আপত্তি জানায় তারা। এদিকে ভাঙড়ের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী এদিন ফোন করেন স্থানীয় বিধায়ক আবদুল রেজ্জাক মোল্লাকে। এলাকায় গিয়ে মানুষজনকে শান্ত করার জন্য রেজ্জাকসাহেবকে নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ মেনে এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করলেও প্রবল প্রতিরোধের মুখে সেখানে শেষ পর্যন্ত ঢুকে উঠতে পারেননি তিনি। এদিকে ভাঙড়ের অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী এদিন নবান্নে বিদ্যুৎ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। জেলা পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়। সূত্রের খবর, জেলা পুলিশ যে রিপোর্ট পাঠিয়েছে তাতে ফের নকশালপন্থী কিছু পড়ুয়ার উস্কানির কথা উল্লেখ রয়েছে। এদিকে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, রাজ্য সরকার গায়ের জোড়ে কোনও উন্নয়ন করতে রাজি নয়। তবে ভাঙড়ে গ্রামবাসীদের গুটিকয়েক মানুষ প্রভাবিত করে এসব করাচ্ছে বলে দাবি করেন পার্থবাবু। এদিন সন্ধে নামার পরও ভাঙড়ে ছিল চাপা উত্তেজনা। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়। ছড়িয়ে দেওয়া হয় প্রচুর পুলিশ।

 


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *