World

শেষ মুহুর্তে কারো কারি প্রথার হাত থেকে বাঁচলেন মহিলা

‘কারো কারি’ প্রথার বলি হতে হতে শেষ মুহুর্তে রক্ষা পেলেন এক মহিলা ও তাঁর ৬ দিনের শিশু। পুলিশি তৎপরতায় রক্ষা পেল ২টি জীবন।

মুজফ্ফরগড় (পাকিস্তান) : পৃথিবীর যে কয়েকটি নৃশংস প্রথা এখনও চলছে তার একটি ‘কারো কারি’। ‘জিরগা’-রা একসঙ্গে বসে কারো কারি ঘোষণা করে। সকলে তা মেনে নিতে বাধ্য থাকেন। এটাই চলে আসছে। যদিও তা বেআইনি। তবে স্থানীয়ভাবে এমন নৃশংস প্রথা পাকিস্তানের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় আজও বহাল তবিয়তে প্রচলিত।

জিরগা হল পাকিস্তানের আদিবাসী এলাকার নিজস্ব আদালত। কয়েকজন বয়স্ক মানুষ জিরগা-র কাজ করে। তারাই স্থানীয় অভিযোগের কথা শুনে তাদের বিচার শোনায়। তাতে পাথর ছুঁড়ে কাউকে মেরে ফেলার মত নির্দেশও জারি হয়। যদি জিরগা-রা কাউকে কারো কারি সাজা দেয় তাহলে তার মানে হল সেক্ষেত্রে পরিবারের সম্মান রক্ষার কথা বলে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই কারো কারি নির্দেশই দেওয়া হয়েছিল এক মহিলা ও তাঁর ৬ দিনের সন্তানকে। যদিও পুলিশ এই খবর আগেই পেয়ে যায়। পুলিশি তৎপরতায় বেঁচে যায় মহিলা ও তাঁর সন্তানের জীবন।

৬ জন জিরগার বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেছে পুলিশ। তাদের ২ জনকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হলেও কারো কারি নির্দেশের অভিযোগে আর ৪ জনকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ।


ঘটনার সূত্রপাত গত জুন মাসে। সে সময় পাকিস্তানের মুজফ্ফরগড়ের তনসা শহরের বাসিন্দা নূর শাহ জিরগা বিচারের শিকার হন। তাঁকে জিরগার বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার অধিকার কেবলমাত্র আদালতের থাকে। আইনত কোনও জিরগার থাকতে পারেনা।

কিন্তু স্থানীয়ভাবে জনা ছয়েক জিরগা একসঙ্গে বসে নূরের মৃত্যুর সাজা ঘোষণা করে। হত্যা করা হয় নূরকে। এক বিবাহিতা মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে এই অভিযোগে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

এই মহিলার সঙ্গে ১৮ বছর আগে মকাম খান নামে এক ব্যক্তির বিয়ে হয়। তাঁদের ৯টি সন্তান রয়েছে। ৬ ছেলে ও ৩ মেয়ে। মকামের ভাই কালা খান কিছুদিন আগে জিরগা-র কাছে অভিযোগ করে তার বৌদির সঙ্গে নূর শাহর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে।

এদিকে দিন ছয়েক আগেই ওই মহিলা এক সন্তানের জন্ম দেন। তারপরই সেই ৬ জিরগা বিচার শোনায় যে ওই মহিলা ও তাঁর শিশুকে কারো কারি করা হবে।

সেই ৬ জিরগাই এই বিচার শোনায় যারা নূর শাহের মৃত্যুর পরোয়ানা জারি করেছিল। যদিও এই খবর পাওয়ার পরই পুলিশ তৎপর হয়ে ওই মহিলাকে রক্ষা করে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button