Kolkata

বউবাজারে মুখ্যমন্ত্রী, দুর্গত মানুষজনের সঙ্গে কথা, কাল বৈঠক

সোমবার বিকেলে বউবাজারের পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে সেখানে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর আসার খবর থাকায় সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন ঘরহারা মানুষজন। হাজির ছিলেন মন্ত্রী তাপস রায়। ছিলেন বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ বর্মা নিজে নিরাপত্তার দিকটি নজর রাখছিলেন।

বউবাজার এলাকার ২টি গলি স্যাকরা পাড়া লেন ও দুর্গা পিতুরি লেন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেট্রোর কাজের জন্য এখানকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমবেশি ফাটল। ফাটল এমন অবস্থায় যে বাড়ি ভেঙেও পড়তে পারে। ফলে সেখান থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে গিয়ে রবিবারই রাখা হয় বিভিন্ন হোটেলে। এত দ্রুত তাঁদের সরানো হয় যে অনেকে প্রয়োজনীয় জিনিসটুকুও সঙ্গে আনতে পারেননি। এদিকে তাঁদের ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছেনা। ফলে ঠায় তাঁরা রাস্তায়। তাঁদের সঙ্গে এদিন কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সকলেই তাঁদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী সময় দিয়েই শোনেন তাঁদের কথা।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার পর মুখ্যমন্ত্রী জানান, একটা কাজ খুব ভাল হয়েছে যে দ্রুত বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে সরিয়ে হোটেলে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তা না হলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। কিন্তু সমস্যা যেটা হয়েছে যে কেউই প্রায় তাঁদের প্রয়োজনীয় জিনিস সঙ্গে নিতে পারেননি। আধার কার্ড, প্যান কার্ড পর্যন্ত বাড়িতেই পড়ে আছে। অনেকের গয়নাগাটি, টাকাপয়সাও বাড়িতে। এগুলো কী করা যায়, এঁদের সকলের পুনর্বাসনের কী ব্যবস্থা হবে, এঁরা বলেছেন তাঁদের বাড়ি নতুন করে তৈরি করে দেওয়া হোক, তা নিয়ে কী করা যায়, অনেকের বাড়ির নিচে দোকান ছিল, যা থেকে তাঁর সংসার চলে, এঁদের ক্ষেত্রে কী করা যায় এসব নিয়ে আগামী মঙ্গলবার দুপুরে একটি বৈঠক হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে থাকবেন মেট্রো কর্তারা, পুলিশ, মেয়র, সাংসদ, বিধায়করা। এই বৈঠকের পর তিনি কিছু বলতে পারবেন বলে আশ্বস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘটনার জন্য দায়ী কারা তাও ওই বৈঠকে আলোচনা হবে।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জন্য যে বোরিংয়ের কাজ চলছে তার জেরে গত শনিবার থেকেই বউবাজারের বাসিন্দাদের বিনিদ্র রজনী কাটছে। বাড়িতে ক্রমশ তৈরি হচ্ছে ফাটল। সেই ফাটল দীর্ঘ হচ্ছে। ফাটলের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। কয়েকটি বাড়ির কিছুটা করে অংশ ধসেও গেছে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কোনও ঝুঁকি না নিয়ে দ্রুত বউবাজার এলাকার ২টি পাড়া কার্যত ফাঁকা করে দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত বউবাজারের ৩৭৫ জন বাসিন্দার হোটেলে ঠাঁই হয়েছে।

সোমবার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ২টি পাড়া বাইরে থেকে খতিয়ে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। বউবাজারের অনেক সোনার দোকান বন্ধ। সেসব দোকানের মালিকরাও এদিন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ব্যবসা নষ্ট হওয়ার অভিযোগ জানান। এদিকে মেট্রোর তরফে এদিন প্ল্যান হাতে নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন কর্তারা। প্ল্যানের কাগজ দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। বেশ কিছুটা সময় সেখানে কাটানোর পর সন্ধে ৬টা নাগাদ বউবাজার ছেড়ে বেরিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *