
রাতের অন্ধকার কেটে ভোর হয়েছে। তখনও ইতস্তত বিক্ষিপ্ত ছড়িয়ে আছে শুক্রবার রাতের তুলকালামের নিদর্শন। শুক্রবার এখানেই কুরুক্ষেত্র ঘটে গেছে এবিভিপি, আরএসএস ও বিজেপি সদস্যদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের। হাতাহাতি, মারামারি কোনও কিছুই বাদ যায়নি। অকুস্থল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। অভিযোগ এখানেই শুক্রবার পড়ুয়াদের সিংহভাগের আপত্তি সত্ত্বেও দেখানো হচ্ছিল পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর একটি সিনেমা। সেই সিনেমা প্রদর্শনের সময় পড়ুয়ারা প্রতিবাদ জানায়। জোর করে তা চালানোর চেষ্টা করে এবিভিপি সমর্থক কিছু ছাত্র। তাতেই গোলমালের শুরু। অভিযোগ এরপরই এবিভিপি সমর্থকদের পাশে দাঁড়াতে চত্বরে ঢুকে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি করে বেশ কয়েকজন যুবক। তাদের রুখতে এগিয়ে আসে যাদবপুরের বাম প্রভাবিত ইউনিয়নের সদস্যরা। শুরু হয় হাতাহাতি, গালিগালাজ। পরে শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত চারজন যুবককে ক্যাম্পাসেই আটকে রাখে ছাত্ররা। এরপরই এক নম্বর গেটের সামনে ভিড় করে হাওড়া উত্তরের বিজেপির প্রার্থী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপি সমর্থকেরা। ওই চারজন নির্দোষ এবং তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এই দাবিতে গেটের বাইরে থেকে শুরু হয় শাসানি। পাল্টা পড়ুয়ারাও অনড় অবস্থান দেখানোয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকেই চারজনকে প্রয়োজনে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ট্যাক্সি নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটে আসেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তিনি জানান বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সিনেমা দেখানোর কোনও ছাড়পত্র কর্তৃপক্ষ দেয়নি। ছাত্ররা ওই চার অভিযুক্তকে তাঁর হাতে তুলে দেন। পরে যাদবপুর থানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে অভিযোগ জানান হয়। এদিকে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ার পরই ওই চারজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে রাতে মিছিল বার করে যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীরা। রাত বাড়লে শান্তি ফিরলেও সেই আগুন যে ধিকিধিকি জ্বলছে তা শনিবার সকালেও যাদবপুর চত্বরে ঢুকলেই পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে।