Sports

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে খাদের কিনারা থেকে জয়ে ফিরল ভারত

একবার খেলা ভারতের কোর্টে। তো পরক্ষণেই খেলা অস্ট্রেলিয়ার কোর্টে। অন্তত নাগপুরে দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচের শেষের দিকটা এভাবেই মনের ওপর চাপ সহ্য করলেন দর্শকরা। ভারতের দর্শকরা যদি এই রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি সহ্য করে থাকেন, তবে অস্ট্রেলিয়াও তাই। সব শেষে বিজয় শঙ্করের ভেল্কিতে ম্যাচ জিতে নিল ভারত। ভারত জিতল ৮ রানে। ফলে ৫ ম্যাচের একদিনের সিরিজে প্রথম ২টি ম্যাচ জিতে ভাল অবস্থায় ভারত। অজিদের সিরিজ জিততে গেলে বাকি ৩টে ম্যাচই জিততে হবে। আর ভারতকে সিরিজ পকেটে পুরতে বাকি ৩টের মধ্যে ১টি ম্যাচ জিততে হবে।

মঙ্গলবার নাগপুরে টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রোহিত শর্মার (০) উইকেট হারায় ভারত। সামান্য রানে শিখর ধাওয়ান (২১) ও আম্বাতি রাইডু (১৮) ফেরার পর চাপে পড়ে যায় ভারত। এই অবস্থায় ম্যাচের হাল ধরে বিরাট কোহলি ও বিজয় শঙ্কর। বিজয় ৪৬ রানে থাকাকালীন দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হন। এরপর বিরাটের সঙ্গে সঙ্গত করতে গিয়েও ব্যর্থ হন কেদার যাদব (১১) ও ধোনি (০)। তবে অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে বিরাট কিন্তু রানের মিটার চালু রাখেন। ফলে একদিক থেকে উইকেট পতন ভারতকে চাপে ফেললেও রানের গতি মোটামুটি বজায় থাকছিল।

বিরাটের সঙ্গে রবীন্দর জাদেজা কিন্তু এদিন ভাল সঙ্গত দেন। ২১ রান করে আউট হলেও নন স্ট্রাইকিং এন্ড ধরে রেখে বিরাটকে ব্যাট করার পথ করে দিয়েছেন জাদেজা। জাদেজা ফেরার পর বিরাট ১১৬ রান করে আউট হন। এই নিয়ে একদিনের ক্রিকেটে তাঁর ৪০টি সেঞ্চুরি হল। পরে বুমরাহ (০) ও কুলদীপ (৩) রান করে ফেরেন। ভারতের ইনিংস ৪৮.২ ওভারেই শেষ হয়ে যায়। রান হয় ২৫০।

২৫১ রান করলে জিতবে। এই অবস্থায় ব্যাট করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। একদিনের ম্যাচের জন্য খুব বড় স্কোর নয়। কিন্তু মাঠ বড়। আর পিচ খুব সুবিধের নয়। ফলে এই রানও তোলা খুব সহজ ছিলনা নাগপুরে। এদিন কিন্তু ব্যাট করতে নেমে অজিদের ওপেনিং জুটি ফিঞ্চ ও খোওয়াজা কার্যত ম্যাচকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে দেয়। প্রথম উইকেট ফেলতেই ভারতীয় বোলারদের কালঘাম ছুটে যায়। অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার ৮৩ রানের মাথায় পরপর ফিঞ্চ (৩৭) ও খোওয়াজা (৩৮) প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ১৬ রান করে ফেরেন মার্স। ৪ রান করে ম্যাক্সওয়েল। এরপর কিছুটা হলেও চাপ বাড়ে অজিদের ওপর।

Virat Kohli
রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে বিপক্ষের উইকেট পতনে বিরাটের উচ্ছ্বাস, ছবি – আইএএনএস

এখান খেকে কিন্তু হ্যান্ডসকম্ব ও স্টোইনিজ খেলার ফের হাল ধরে নেন। ফের অজিদের দিকে ঝুঁকে যায় ম্যাচ। হ্যান্ডসকম্ব ৪৮ রান করে ফেরার পর ক্যারিকে সঙ্গে করে স্টোইনিজ কার্যত ম্যাচটাকে জয়ের দোরগোড়ায় নিয়ে চলে যান। কুলদীপ এক ওভারে ১৫ রান দেওয়ার পর খেলার কার্যত আর কিছুই ছিলনা। আর সেখান থেকে ফের ঘোরে ম্যাচের চাকা। কুলদীপের পরের ওভারে বোল্ড হয়ে ফেরেন ক্যারি (২২)।

তার পরের ওভারে বুমরাহ কুল্টারনাইল ও কামিন্সকে ফেরানোর পর খেলার মোড় ঘুরে যায়। খেলা এবার ভারতের দিকে ঝুঁকে যায়। এই অবস্থায় লিয়ঁকে সঙ্গে করে স্টোইনিজ খেলাকে ফের নিজেদের দিকে নিয়ে চলে আসতে থাকেন। শেষ ওভারে ৬ বলে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য দরকার ছিল ১১ রান। হাতে ২ উইকেট। স্টোইনিজ মাঠে। ম্যাচ অজিদের দিকে পুরোদস্তুর ঝুঁকে। সেখানে বল করতে আসেন বিজয় শঙ্করের মত অচেনা বোলার।

India National Cricket Team
অধিনায়ককে সতীর্থদের জয়ের অভিনন্দন, ছবি – আইএএনএস

বুমরাহ ও সামির ওভার শেষ। ফলে বিজয় শঙ্কর ছাড়া কেদারকেও দিতে পারত ভারত। কিন্তু তা আর দেয়নি। বিজয় তাঁর প্রথম বলেই স্টোইনিজকে এলবিডব্লিউ করে দেন। স্টোইনিজের উইকেট ফের ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। শেষ উইকেটে ২ রান করা জাম্পা শঙ্করের তৃতীয় বলে বোল্ড হয়ে যান। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে নেয় ভারত। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন বিরাট কোহলি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *