Festive Mood

হোলির বৈচিত্রগাথা, ভারতের কোথায় কীভাবে হয় হোলি

বসন্ত উৎসব বা দোল যদি বাংলার হয়, তবে ভারতের অন্য প্রান্তের কাছে এটা হোলি। যা এক এক রাজ্যে এক এক নামে পরিচিত। রঙের উৎসব বাঁধ ভাঙা রঙিন মনের উচ্ছ্বাসের বার্তা ছড়িয়ে দেয় কোটি কোটি মানুষের অন্তরাত্মায়।

ব্রজভূমির হোলি বিশ্বখ্যাত। মথুরা, বৃন্দাবনে ৬ দিন ধরে পালিত হয় এই রঙের উৎসব। বসন্তের আগমনকে সামনে রেখে রাধাকৃষ্ণের প্রেমগাথা ব্রজভূমির হোলিকে দ্রষ্টব্য করে তুলেছে। রাধারানির বাপের বাড়ি বরসানায় পালিত হয় লাড্ডু হোলি। ৫ হাজার বছরের পুরনো কৃষ্ণলীলার অঙ্গ হিসাবে এই লাড্ডু হোলি পালিত হয় এখানে। হোলির দিন সকাল থেকেই বরসানায় রঙের বন্যা। সঙ্গে সকলের হাতেই লাড্ডুর প্যাকেট। একে অপরের দিকে আবির ছুঁড়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একে অপরকে খাইয়ে দেন লাড্ডু। এটাই রীতি। সেই রীতি পূর্ণ মর্যাদায় পালিত হয় প্রতি বছর।

সকালে বরসানার মেয়েরা মাথায় করে আবিরের হাঁড়ি, সাজা পান আর লাড্ডু নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। এখান থেকে বৃষভানু মন্দিরে লাঠমার হোলির আমন্ত্রণ পৌঁছতেই সেখানেও শুরু হয় রঙের খেলা। সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে বিস্কুট ও টফি ছড়ানো হয়। স্থানীয় মানুষ তো বটেই, সেইসঙ্গে দেশি বিদেশি পর্যটকরাও মেতে ওঠেন লাড্ডু হোলিতে। আর সেইসঙ্গেই সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় ব্রজভূমির হোলি। যা চলে রঙ্গ পঞ্চমী তিথি পর্যন্ত।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

Krishna

বসন্ত উৎসব বা দোল যদি বাংলার হয়, তবে ভারতের অন্য প্রান্তের কাছে এটা হোলি। যা এক এক রাজ্যে এক এক নামে পরিচিত। রঙের উৎসব বাঁধ ভাঙা রঙিন মনের উচ্ছ্বাসের বার্তা ছড়িয়ে দেয় কোটি কোটি মানুষের অন্তরাত্মায়। উত্তরের কাশ্মীর থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারিকার জলহাওয়া পর্যন্ত রঙের জাদুছোঁয়ায় মাতোয়ারা হয়ে উঠতে দ্বিধাবোধ করে না।

উত্তরের বাসিন্দারা তো বটেই, এমনকি বিন্ধ্য পর্বতের সীমানা পেরিয়ে ফাগের মিষ্টি গন্ধে আকুল হয়ে ওঠে দক্ষিণী প্রাঙ্গণ। রাধাকৃষ্ণের দোললীলা বা হোলিকা দহনের পৌরাণিক ঐতিহ্য তো আছেই। সেই সনাতনি আপাত উত্তুরে ঐতিহ্যকে নিজেদের মত করে বরণ করে ঘরে তুলে নেন দক্ষিণের মানুষও।

Holi

তামিলনাড়ু রাজ্যের কথাই ধরা যাক। এই রাজ্যে হোলির পরিচয় ত্রিবিধ স্রোতে প্রবাহিত। ‘কামবিলাস’, ‘কামন পন্ডিগাই’ এবং ‘কামদহনম’। লক্ষ্য করুন, হোলির এই ৩ প্রকারের নামের মধ্যেই আছে ‘কাম’ শব্দের উল্লেখ। আসলে বৃন্দাবনে যিনি মদনমোহন কৃষ্ণ, তিনিই দক্ষিণে পরিচয় পাল্টে হয়ে গেছেন প্রেমের দেবতা কাম।

ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে, ফাল্গুনি পূর্ণিমার রাতে শ্রীকৃষ্ণের প্রেমবাণে জর্জর শ্রীরাধিকা নিজের সর্বস্বটুকু তুলে দিয়েছিলেন প্রেমিকের হাতে। পরের দিন রাধিকার সর্বাঙ্গে কৃষ্ণের অনুরাগের রঙ আড়াল করতেই সূচনা হয় হোলির। দক্ষিণের ঘরে সেই মিলনকাতর অনুরাগের গল্পে প্রলেপ পড়েছে বিরহের বেদনাঘন রঙের। পুরাণ বলে, সতীর দেহত্যাগের পর মহাদেব নাকি এক কঠিন পণ করেছিলেন। তিনি জীবনে আর কোনও নারীর পাণিগ্রহণ করবেন না। তাহলে মহাদেবের প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া দেবী পার্বতীর কি হবে। হর পার্বতীর মিলন নাহলে তো কার্তিকের জন্ম হবেনা। তাহলে কার্তিকের হাতে তারকাসুরের নিধনও হবে না।

দেবলোক ও মর্ত্যলোককে বাঁচাতে অতঃপর ডাক পড়ল মদনের। মহাদেবের মনে পার্বতীর জন্য প্রেমের ভাব জাগানোর কঠিন দায়িত্ব পড়ল কামদেবের ঘাড়ে। পত্নী রতিকে নিয়ে ময়দানে নেমেও পড়লেন মদন। তাঁর জোরাল রিপুবাণ গিয়ে বিদ্ধ করল কঠোর তপস্যায় নিমগ্ন মহাদেবকে। চোখ খুলতেই হল মহেশ্বরকে। পার্বতীর সাথে শুভদৃষ্টি হল তাঁর। আবার প্রেমে পড়লেন শিব। কিন্তু তপস্যা ভঙ্গ হয়েছে। ফলে ক্রোধে জ্বলে উঠল তাঁর তৃতীয় নয়ন। সেখান থেকে বার হল প্রচণ্ড অগ্নিবাণ। সেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলেন মদন।

রতির হাহাকারে আকুল হয়ে উঠল কৈলাসের আকাশ বাতাস। প্রেমী হৃদয়ের সেই হাহাকার এসে পৌঁছল মানবভূমিতেও। কাম ও রতির বিরহের সেই স্মৃতিতে তাই আজও হোলিকা নয়, কামদহন দিয়েই শুরু হয় তামিলনাড়ুর হোলি। অন্ধ্রপ্রদেশ বা তেলেঙ্গানাতেও তামিলনাড়ুর মতই হোলির আগে একইভাবে কামদহনের পরেই শুরু হয় মূল উৎসবের।

Krishna

মহারাষ্ট্রে হোলির দিন ‘মটকি তোড়’ প্রথার জনপ্রিয়তা আবার তুঙ্গে। রঙ মেখে ভূত হওয়ার পালা তো সাঙ্গ হল। এরপরেই রাজ্যের অলিতে গলিতে শুরু হয়ে যায় ‘মটকি তোড়’। ছোটবেলায় বালগোপাল তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে কি করতেন মনে পড়ে? শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর বন্ধুরা নন্দগাঁওয়ের গোপিনীদের তৈরি ননী খালি চুরি করে খেয়ে নিতেন। তাই অতিষ্ঠ গোপিনীরা ননীভর্তি হাঁড়ি একসময় ঘরের একদম টঙে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখলেন। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের দুষ্টুবুদ্ধির কাছে সব পরিকল্পনাই ব্যর্থ। সপার্ষদ শ্রীকৃষ্ণ গোপবালকদের কাঁধে ভর দিয়ে উঁচুতে তোলা হাঁড়ি থেকেও ডাকাতি করতে লাগলেন ননীর। নন্দদুলালের সেই দুষ্টুমির কথা মাথায় রেখেই প্রতি বছর ‘মটকি তোড়’-এ মেতে ওঠেন মহারাষ্ট্রের কয়েকশো যুবা।

এই উৎসবে প্রথমে ৩ তলা বা ৫ তলা বাড়ির সমান উচ্চতায় লস্যি বা ঠান্ডাইয়ের হাঁড়ি দড়িতে বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সেই হাঁড়ির নাগাল পেতে মাটিতে গড়ে তোলা হয় মানব পিরামিড। সেই পিরামিডের গা বেয়ে সাবধানে একজন শক্তপোক্ত চেহারার ছেলে উঠে পড়েন পিরামিডের শীর্ষে। তারপর ‘জয় শ্রীকৃষ্ণ’ নামে লাঠি বা হাত দিয়েই ফাটিয়ে ফেলা হয় হাঁড়ি। দুধসাদা ঠান্ডাইয়ের স্বাদ নিতে হুটোপাটি লেগে যায় নিচে ভিড় জমানো উৎসাহীদের মধ্যে। মহারাষ্ট্রের কোথাও আবার এই হোলির উৎসব স্থানীয় ভাষায় পরিচিত ‘শিমগা’ নামে।

Holi

গোয়া ও কোঙ্কণ উপকূলে হোলির পোশাকি নাম ‘শিগমো’। কোঙ্কণের দক্ষিণাঞ্চলে হোলি উৎসবকে স্থানীয় বাসিন্দারা ডাকেন ‘উক্কুলি’ নামে। মালয়ালম ভাষায় এর নাম আবার ‘মঞ্জলকুলি’। ‘উক্কুলি’ বা ‘মঞ্জলকুলি’ এই দুই শব্দের অর্থ ‘হলুদ স্নান’। হোলির দিন মূলত হলুদ গোলা জল দিয়ে একে অপরের গায়ে হলুদ দিয়ে থাকেন সেখানকার মানুষ। প্রাকৃতিক গুণাগুণ ও পবিত্রতার জন্যই হলুদ রং অন্য রঙের থেকে অনেক বেশি নিরাপদ বলে মনে করেন তাঁরা।

নানা বর্ণে নানা প্রথায় উত্তরের হোলির জমজমাটি ভাব হয়তো দক্ষিণের হোলিতে পাওয়া যায় না। কিন্তু নিজেদের মত করে রঙের উৎসবের আনন্দরস নিংড়ে নিতে পিছিয়ে নেই দক্ষিণীরাও।

Holi

মনের রঙ শুধু মনেই নয়, প্রকৃতির বুকেও লাগে। দেশ কালের সঙ্কীর্ণ সীমারেখা ছাড়িয়ে প্রকৃতির অবাধ বিস্তার। অপার বিস্তৃত প্রকৃতি রঙ্গরাজের শোভা বাড়াতে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে নিজেকে আসমুদ্রহিমাচল ছড়িয়ে দেয় বসন্তের দূত ফাগ। ফাগ বা আবিরের রঙে আপামর দেশবাসীর সারা অঙ্গ, সমগ্র চেতনা হয়ে ওঠে বর্ণময়। বসন্ত পূর্ণিমার সকালে মিঠে রোদ আর ভুতুড়ে রঙ, আবিরকে সঙ্গী করে আনন্দে কলকলিয়ে ওঠেন বঙ্গ সন্তানরা। দোল পূর্ণিমায় একই দিনে রঙের জোয়ারে গা ভাসায় প্রতিবেশি রাজ্য ওড়িশাও।

ঝুলনদোলায় রাধাকৃষ্ণের মিলনের স্মৃতিকে স্মরণ করে মেতে ওঠেন আট থেকে আশি সকলেই। বসন্তের ফাল্গুনি তিথিতেই নাকি যুগাবতার শ্রী চৈতন্যদেব পুরী থেকে ভক্তদের নিয়ে বাংলার বুকে দোল উৎসবের প্রবর্তন করেছিলেন। সেই তত্ত্বই রঙের মহোৎসবে ওড়িশা ও বাংলাকে এক দেহ এক প্রাণে মিলিয়ে দিয়েছে।

Holi

পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশি বিহারেও রঙের উৎসবের চেহারাটা অনেকটা একইরকমের। হাতে পিচকারি, মুঠোভর্তি গুলাল আর রঙ গোলা জলের বালতি নিয়ে হোলির দিন ময়দানে নেমে পড়েন বিহারবাসীও। তবে বিহারের হোলি প্রাকৃতিক রঙ কাদামাটি ছাড়া একেবারেই জৌলুসহীন। ভোজপুরি উৎসবে রঙকে মাহাত্ম্যগুণে ফিকে করে দেয় সহজলভ্য কাদামাটি।

কাদামাটির রঙের নেশা আরও গাঢ় করতে সঙ্গে দোসর হয় দুধ ও মশলা সহযোগে ভাং। সেই ভাং পেটে পড়তেই শুরু হয় ঢোলক বাজিয়ে উদ্দাম নাচ গান। রঙ নিয়ে দিনভরের এই উদ্দামতাই বিহারবাসীর আদরের ‘ফাগুন’। বিহারে হোলির দিন আবার রঙ খেলার শেষে একে অপরের পরনের কাপড় ছিঁড়ে দেন। যা কাপড়াফাড় হোলি নামে বিখ্যাত। বিহারের অনেক সেলেব্রিটিকেও এই কাপড়াফাড় হোলিতে অংশ নিতে দেখা গেছে।

Holi

বঙ্গ, বিহার বা উত্তরপ্রদেশ, এই ৩ রাজ্যই পবিত্র গঙ্গার প্রবাহে বিধৌত। তাই দোল বা হোলির উৎসবের মেজাজ এই ৩ রাজ্যেই একরকম। রাধাকৃষ্ণের লীলাভূমি বৃন্দাবন মথুরায় রঙ ছোঁড়াছুঁড়ি তো সাধারণ ব্যাপার। এর পাশাপাশি নারী ও পুরুষদের একে অপরকে ফুলের পাপড়ি বা গোটা গোটা লাড্ডু ছুঁড়ে মারাও হোলি উদযাপনের অন্যতম অঙ্গ। বরসানার ‘লাঠমার হোলি’ তো এখন সর্বজনবিদিত।

আবার যদি কানপুর বা বারাণসীতে গিয়ে রঙ খেলতে ইচ্ছা হয়, তাহলে অন্য অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে হবে সকলকে। কানপুরে হোলি ‘জাতীয়তাবাদী গঙ্গা মেলা’ হিসেবে উদযাপিত হয়। সারা গায়ে কাদামাটি মেখে কুস্তি না হলে হোলির দিনটাই বৃথা গেল বলে মনে করেন বারাণসীর বাসিন্দারা। মধ্যপ্রদেশে আবার হোলি ‘রঙ্গপঞ্চমী’ নামে খ্যাত।

Holi

গাঙ্গেয় সমভূমি ছেড়ে যদি উত্তরমুখী হওয়া যায়, সেখানে আবার হোলির মেজাজ ভিন্ন লয়ের। পঞ্জাবের কথাই ধরা যাক। সেখানকার বাসিন্দারা শুধু শরীরে নয়, নিজেদের ঘরকেও হোলির প্রাক্কালে করে তোলেন রঙিন। এইসময় গ্রামের মেয়েরা কাপড়ের ওপর নতুন নকশা কাটেন। সেইসব রঙিন সুতোর খেলা দেখে মনে হয়, প্রকৃতির রঙ মনের মাধুরীর সাথে মিশে গেছে মননেও। হোলির পার্বণে রঙিন সুতোর বয়নের সেই খেলা ‘চক পুরানা’ নামে পঞ্জাবে প্রসিদ্ধ।

গুজরাটে আবার হোলির রেশের স্থায়িত্ব ২ দিনের। উৎসবের সূচনায় সেখানে হোলিকার আগুনে প্রথমে নারকেল ও ভুট্টা আহুতি দেওয়া হয়। তারপর ২ দিন ব্যাপী চলে ব্যাপক নাচগান, খাওয়াদাওয়া আর রঙ খেলা। আসলে ফাল্গুন মাসে গুজরাটের পল্লিগ্রামের ঘরে ঘরে মজুত হয় পাকা রবি শস্য। গোলা ভর্তি শস্য আর ঘর ভর্তি ফসল। তাই রঙের ছলে আনন্দের পরিমাণ হয়ে ওঠে মাত্রাছাড়া। অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের আনন্দ হোলির সময় হয়ে ওঠে দ্বিগুণ। শ্রীকৃষ্ণের দুষ্টুমির গল্পে আশকারা পেয়ে এইসময় ‘ননীভাণ্ড’-র দখল নিয়ে চলে লড়াই। সেই লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে নবীন যৌবনের প্রাণোচ্ছ্বাস।

রাজস্থানের রয়্যাল হোলিতেও বসন্তের প্রাণোচ্ছ্বলতা প্রকাশিত হয় একেবারে রাজকীয় ঢঙে। চন্দ্রের পূর্ণরূপে আত্মপ্রকাশের দিন মরুদেশে সকলে মিলে একত্রিত হন রঙিন হয়ে ওঠার আকাঙ্ক্ষায়। ‘বনফায়ার’ জ্বালিয়ে সূচনা করা হয় হোলির। তারপর জল আর আবির দিয়ে একে অপরকে রঙ মাখানোর আনন্দে মেতে ওঠেন সকলে।

Holi

আবার উত্তরে হোলির পনেরো দিন আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় কাউন্টডাউন। স্থানীয় বাসিন্দারা মূল উৎসবের আগে হোলিকা রাক্ষসীর কাঠামো তৈরি করেন। সেই কাঠামোকে পাহাড়ি মানুষরা ডাকেন ‘চীর বন্ধন’ নামে। হোলির মাহেন্দ্রক্ষণে পোড়ানো হয় অশুভ শক্তির কুশপুতুল। তারপরে রঙ নিয়ে মাঠে ঘাটে নেমে পড়েন উৎসবপ্রেমীরা। সেই হোলি-ধুলান্দিকে ঘিরে বছরের পর বছর ধরে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন উত্তর ভারতের পাহাড়ের কোলের বাসিন্দারা।

মণিপুরে আবার বসন্ত উৎসব শুরু হয় পূর্ণিমার ৫ দিন আগে। মণিপুরবাসীর আঞ্চলিক আরাধ্য দেবতা পাখাংবা-কে উৎসর্গ করে শুরু হয় হোলি উৎসব। স্থানীয় ভাষায় এর নাম ইয়োলশ্যাং। ছোট ছোট কুটিরে রঙ খেলার পাশাপাশি চলে পাখাংবা-র পুজো অর্চনা।

সব মিলিয়ে দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, বসন্তের রং ছুঁয়ে যায় মানুষের হৃদয়। স্থান ভেদে এই আনন্দকেই নানা ভাবে, নানা রূপে পালন করেন মানুষজন। তবে সবশেষে রঙিন দিনে প্রকৃতির সঙ্গে দেশের প্রতিটি কোণা মেতে ওঠে রঙিন স্পর্শে। সে রং কখন যে শরীর স্পর্শ করে মর্ম স্পর্শ করে ফেলে তা হয়তো মানুষ বুঝতেও পারেননা। কিন্তু তাঁদের খুশি, তাঁদের আনন্দ বলে দেয় রঙ আসলে মনের কোন গভীরে প্রবেশ করেছে। মনকে করে তুলেছে রঙিন। এমন দিনে বনের সঙ্গে মনেও ফাগুন লাগে দেশবাসীর।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *