World

কুমির ভর্তি জলায় ৩৬ ঘণ্টা আটকে ৫ জন, একটা ছোট্ট কারণে তাঁদের ছুঁল না কুমির

চারধারে যত কুমির ঘুরছিল তাতে তাঁদের ৩৬ ঘণ্টা কেন ১ ঘণ্টাও বাঁচার কথা নয়। তবু তাঁদের কুমির ছুঁল না। অবশেষে তাঁদের দেখতে পেলেন এক মৎস্যজীবী।

পুরুষ বলতে কেবল পাইলট। ২৯ বছরের যুবক। বাকি যাত্রী বলতে ৩ মহিলা ও ১ শিশু। এঁরাই ছিলেন একটি ছোট বিমানে। বিমানটি উড়ে যাচ্ছিল গন্তব্যের দিকে। আচমকাই সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ক্রমশ আকাশ থেকে নিচের দিকে নামতে শুরু করে।

পাইলট বুঝতে পারেন আপৎকালীন অবতরণ ছাড়া গতি নেই। কিন্তু কোথায় নামবেন তাঁরা। বিমানটির সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। নিচে যা দেখা যাচ্ছে তা এককথায় জলাভূমি। বহু দূর পর্যন্ত মানুষের বসতি নেই। মানুষও নেই।


বিমানটিকে অগত্যা ওই জলাভূমিতেই নামাতে বাধ্য হন পাইলট। জলায় আটকে পড়া বিমানটি থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। এভাবে অবতরণের পরও কেউ আহত হননি। কিন্তু সমস্যা হল অন্য। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছেনা। চারধারে জলাভূমি।

তারই মাঝে জলের মধ্যে তাঁরা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে। জলের নিচে আটকে পড়েছে বিমানটি। আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রচুর কুমির। তাঁরা সহজেই সেই ক্ষুধার্ত কুমিরদের ভোজ হতে পারেন। কিন্তু তার পরেও তাঁদের কিছু হল না। তাঁদের একেবারে কাছে পৌঁছেও ফিরে গেল কুমিররা। তাঁদের ছুঁল না।


কীভাবে হল এই চমৎকার? বিমানটি জরুরি অবতরণের পর তাঁরা ৫ জন একে অপরকে জড়িয়ে যেখানে দাঁড়িয়েছিলেন সেখানে জল থাকলেও সেই জলে বিমানটি থেকে লিক করা তেল ছড়িয়ে পড়েছিল।

সেই তেল ভাসা জলের উপরেই তাঁরা দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের আশপাশে সামান্যই তেল জলে ভাসছিল। বিশেষজ্ঞদের ধারনা ওই তেলই বাঁচিয়ে দেয় ৫ জনকে। কুমিররা ওই তেল মেশা জলে আসার ঝুঁকি নেয়নি।

তাই শিকার নাগালে থাকলেও কুমিররা তাঁদের ধরার চেষ্টা করেনি। এমনকি ৫ জনের দাবি তাঁরা যে ৩৬ ঘণ্টা ওখানে ওভাবে দাঁড়িয়েছিলেন তার মাঝে অগুন্তি কুমিরের ঘুরপাক ছাড়াও একটি অ্যানাকোন্ডা সাপকেও কাছে এসেও ফিরে যেতে দেখেছিলেন তাঁরা।

৩৬ ঘণ্টা পর এক মৎস্যজীবীর নজরে পড়েন তাঁরা। ওই মৎস্যজীবীই খবর দেন। তারপর তাঁদের হেলিকপ্টারে উদ্ধার করা হয়। বলিভিয়ার অ্যামাজন অঞ্চলের ওই জলাভূমির কাছেই রয়েছে একটি নদী। চারধার বনবাদাড়, জলাভূমিতে ভরা।

ওই ৫ জন কেবল কাসাভা মূলের আটা খেয়ে বেঁচেছিলেন কোনওরকমে। তবে পানীয় জল পাননি। কারণ তাঁরা ওই তেল মেশা জলের বাইরে বার হতে পারছিলেননা। তাহলেই তাঁদের কুমির ধরত। সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক পোস্ট-সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর তা বিশ্বজুড়েই কৌতূহলের কেন্দ্রে পরিণত হয়।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button