টুকরো অশান্তি বাদে বন্ধের প্রভাব পড়লনা রাজ্যে

শিলিগুড়ি, মুর্শিদাবাদের কিছু অংশ, মালদহের কিছু অংশে সামান্য প্রভাব পড়লেও বাকি রাজ্যে শ্রমিক ধর্মঘটের কোনও প্রভাবই পড়লনা। তবে বিভিন্ন জায়গা থেকে টুকটাক অশান্তির খবর এসেছে। এদিন বেলা ১১টা নাগাদ বেহালা ট্রাম ডিপোর কাছে বন্ধ সমর্থকদের একটি মিছিল ডায়মন্ড হারবার রোড অবরোধ করে। পুলিশে তাঁদের সরাতে এলে পুলিশের সঙ্গে বাদানুবাদ ও ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বন্ধ সমর্থকেরা। কিছুক্ষণ এভাবে চলার পর রাস্তায় সচল করতে পুলিশ কয়েকজন বন্ধ সমর্থককে গ্রেফতার করে। রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বন্ধ সমর্থকদের। সরিয়ে দেওয়া হলেও রাস্তায় পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ লেক মলের সামনে বাম নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বামেদের একটি মিছিল বন্ধের সমর্থনে হাজির হয়। উল্টোদিক থেকে তখন আসছিল বন্ধের বিরোধিতায় তৃণমূলের একটি মিছিল। দুটি মিছিল মুখোমুখি হয়ে পড়ায় সেখানে সাময়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পুলিশ মাঝখানে থাকায় বড় কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। বন্ধ সমর্থকরা পথ অবরোধের চেষ্টা করলে বেলার দিকে যাদবপুরের ৮বি বাসস্ট্যান্ডের সামনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এদিকে সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ রানিগঞ্জে বন্ধের সমর্থনে বামেদের একটি মিছিলে তৃণমূল হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। দু’পক্ষে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে যদিও পুলিশ অবস্থা আয়ত্তে আনে। শিলিগুড়িতে এদিন সকালে মেয়র তথা বাম নেতা অশোক ভট্টাচার্যকে বন্ধের সমর্থনে মিছিল থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অশোকবাবু ছাড়াও গ্রেফতার হন ৩১ জন বাম নেতাকর্মী। বেলা ১২টা নাগাদ উত্তেজনা ছড়ায় মেদিনীপুরেও। এখানে পুলিশ বন্ধের সমর্থনে বামেদের একটি মিছিলের পথ আটকালে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। পরে ১৫ জন বাম নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যারমধ্যে ২ জন মহিলা। এছাড়া মধ্যমগ্রামে এদিন বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ বন্ধ সমর্থনে বামেদের একটি মিছিলের সঙ্গে তৃণমূলের একটি মিছিলের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। বোড়ালে সিপিএমের একটি কার্যালয়ে তৃণমূল ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিন সকাল থেকেই বহরমপুরে বন্ধের মিশ্র প্রভাব চোখে পড়েছে। অভিযোগ বহরমপুর পুরসভার তালা ভেঙে পুরসভার ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন কয়েকজন তৃণমূল সমর্থক। নুঙ্গিতেও সিপিএম-তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কান্দিতে ৫২ জন বন্ধ সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ। কোচবিহারে বন্ধের সমর্থনে রাস্তায় বসে পড়েন এসইউসিআই সমর্থকেরা। পরে যদিও পুলিশ এসে তাঁদের টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে দেয়। কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এসইউসি সমর্থকদের দাবি, তাঁদের মহিলা কর্মীদের রাস্তার ওপর পুরুষ পুলিশ টানা হেঁচড়া করে গাড়িতে তোলে। কেন পর্যাপ্ত সংখ্যক মহিলা পুলিশ ছিল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। সিউড়িতেও পথ অবরোধের চেষ্টা হলে এসইউসিআই সমর্থক ও পুলিশের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এদিকে হলদিয়া, ব্যারাকপুর, আসানসোল বা দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে বন্ধের কোনও প্রভাবই চোখে পড়েনি। পুরুলিয়ার আদ্রায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা না খোলায় তার সামনে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। বন্ধের দিন ব্যাঙ্ক খোলা না হলে আগামী ৭ দিনও ব্যাঙ্ক খুলতে দেওয়া হবেনা বলে ব্যাঙ্ককর্মীদের তৃণমূল হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ। অন্যদিকে হাওড়া স্টেশনে এদিন যেকটি দূরপাল্লার ট্রেন এসেছে তার যাত্রীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। হাওড়ার ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে যথেষ্ট ট্যাক্সি না থাকা দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।