প্রেমের সুড়ঙ্গ, ভালবাসায় মোড়া ৪ কিলোমিটার, এখানে বছর জুড়ে রং বদলায় প্রকৃতি
বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রেমের জায়গা বলে ধরা হয় এই প্রেমের সুড়ঙ্গকে। কোনও পাহাড় বা মাটি কেটে এ সুড়ঙ্গ তৈরি হয়নি। এর টানে নানা প্রান্ত থেকে হাজির হন পর্যটকেরা।
এমন এক চোখ জুড়িয়ে দেওয়া সুড়ঙ্গ যা যে কোনও মানুষের মন জয় করে নেয়। নবদম্পতিরা আসেন এখানে। সময় কাটান ভালবাসায় মুড়ে। আসেন প্রেমের জোয়ারে ভাসা প্রেমিক প্রেমিকারাও। সাধারণ পর্যটকেরাও হাজির হন এখানে।
কারণ প্রেমের সুড়ঙ্গ দেখার সুযোগ হাতছাড়া করেননা কেউই। এটি কোনও মাটি বা পাথর কাটা সুড়ঙ্গ নয়। এটি গাছের সুড়ঙ্গ। রেললাইন বার করার জন্য এখানে গহন সবুজের মাঝখান থেকে কাটা হয়েছিল। ফলে ঘন গাছে মোড়া সবুজের মাঝে যে ফাঁকটা তৈরি হয়েছিল তা হুবহু দেখতে একটা সুড়ঙ্গের মত।
এভাবেই এটি চলে গেছে ৪ কিলোমিটার পথ। ট্রেনে যেমন এই গাছের সুড়ঙ্গ পার করা যায়, তেমন হেঁটেও এই সুড়ঙ্গের মাঝখান দিয়ে যেতে পারেন যে কেউ। চারধার থেকে ঠিক সুড়ঙ্গের মত ঘেরা জমাট গাছ।
গ্রীষ্ম ও বসন্তে এ সবুজ যেন আরও সবুজ হয়ে ওঠে। আরও মোহময় হয়ে ওঠে। তবে বছরভর সবুজ থাকেনা এই জঙ্গলের সুড়ঙ্গ পথ। রং বদলায় ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে। শীত পড়ার মুখে এখানে সবুজ গাছ আর সবুজ থাকেনা। প্রতিটি পাতায় সোনালি, লাল আর কমলা রং ধরে।
তখন তার রূপ একদম অন্য। সেও এক অন্য মোহময় রূপ। আবার শীতের দিনগুলোয় এই সবই ঢাকা পড়ে সাদা বরফে। গাছের ডালপালা থেকে পাতা, সবই বরফের পিছনে মুখ লুকোয়। সুড়ঙ্গ স্পষ্ট হলেও তখন আবার তার অন্য রূপ।
ইউক্রেনের ক্লেভান গ্রামের এই প্রেমের সুড়ঙ্গ বা টানেল অফ লাভ, পৃথিবীর মানুষের অন্যতম আকর্ষণ। যাঁরা বেড়াতে ভালবাসেন তাঁরা বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে এখানে হাজির হন কেবল গাছের ঠাসবুনোটে মোড়া সুড়ঙ্গের স্বর্গীয় রূপ চাক্ষুষ করতে।
এখানে সারাবছরই পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। এই সুড়ঙ্গের মত গাছের ফাঁক দিয়ে হেঁটে চলার আনন্দ তারিয়ে উপভোগ করেন মানুষ। ৪ কিলোমিটার পথ দুলকি চালে উপভোগ করতে করতে হেঁটেও কখন যে পথ শেষ হয় তা বোঝাই যায়না।
তবে গ্রীষ্মে এখানে প্রচুর মশার উপদ্রব। তাই ওই সময় যাঁরা এখানে আসতে চান, হেঁটে এই পথের আনন্দ জীবনের পাথেয় করে নিয়ে যেতে চান, তাঁদের কীটপতঙ্গ থেকে দূরে রাখার মত ক্রিম বা অন্য কিছু সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেয় ইউক্রেন প্রশাসন।













