শিম্পাঞ্জিরাও যন্ত্র তৈরি করে, প্রমাণ দেয় একটি গাছের ডাল ও উইয়ের ঢিবি
শিম্পাঞ্জিদের বুদ্ধিমান বলেই ধরা হয়। আর তা যে খুব ভুল নয় তার একটি উদাহরণ হল যন্ত্র তৈরির ভাবনা। একটি ডাল আর উইয়ের ঢিবি তার প্রমাণ দিল।
দিনটা ছিল ১৯৬০ সালের ৪ নভেম্বর। সেদিন গোটা পৃথিবী শিম্পাঞ্জির একটা নতুন আচরণের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল। বিশ্ববাসীকে সেই সুযোগ করে দিয়েছিলেন জেন গুডঅল নামে এক ব্রিটিশ মহিলা। যা বিজ্ঞানীদের ভাবনা এবং মানবতার পরিভাষাকেই বদলে দিয়েছিল।
জেন গুডঅল নিজের জীবনের অধিকাংশ সময়টাই শিম্পাঞ্জিদের সঙ্গে আফ্রিকার গম্বে জাতীয় উদ্যানে কাটিয়েছেন। কোনওরকম প্রথাগত বৈজ্ঞানিক প্রশিক্ষণ ছাড়াই তিনি শিম্পাঞ্জিদের ভাষা এবং ভাবনা বুঝেছেন। তাদের সম্পর্কগুলো খুব কাছ থেকে দেখেছেন, বুঝেছেন এবং অনুভব করেছেন।
জেন গুডঅল জঙ্গলের প্রাণিদের কখনওই শুধু মানুষের গবেষণার বিষয়বস্তু হিসাবে দেখেননি। তিনি প্রাণিদের নিজের পরিবারের সদস্য মনে করতেন। তাঁর ক্যামেরা এবং নোটবই বিজ্ঞানকে এক নতুন দিশা দেখিয়েছে। তিনিই সেই ৪ নভেম্বর শিম্পাঞ্জির অদ্ভুত আচরণটি লক্ষ্য করেন।
জেন হঠাৎ একটি শিম্পাঞ্জিকে গাছ থেকে একটি ডাল ভাঙতে দেখেন। ডালটি ভাঙার পর শিম্পাঞ্জিটি ডালে লেগে থাকা পাতাগুলিকে ফেলে দিয়ে একটি উইয়ের ঢিবির মধ্যে ডালটিকে ঢুকিয়ে আবার বের করে আনে। ডালটিতে তখন উই থিকথিক করছিল।
শিম্পাঞ্জিরা উই খেয়ে তাদের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটায়। কিন্তু হাত দিয়ে তাদের ধরা অসুবিধাজনক বলে শিম্পাঞ্জিটি ওই ডালটি ব্যবহার করেছিল। আপাতদৃষ্টিতে এটিকে খুব সাধারণ ঘটনা মনে হবে। কিন্তু এটি মানব বিজ্ঞান ও পশু আচরণ বিজ্ঞানের নতুন দিকের সন্ধান দেয়।
জেন অনুভব করেন শিম্পাঞ্জিটি ডালটিকে যন্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেছিল। যা এতদিন কেবল মানুষই পারত। ২০০০ সালে জেন তাঁর লেখা বইতে শিম্পাঞ্জিদের আচরণ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দেন।
যেখানে তিনি জানান শিম্পাঞ্জিরাও মানুষের মত নিষ্ঠুর হয়। শুধু শিম্পাঞ্জিই নয়, পৃথিবীর সব প্রাণিরই রাগ, দুঃখের অনুভূতি রয়েছে। রয়েছে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ভাবনাও।





