National

বাছুরকে দত্তক নিয়ে অনুষ্ঠান করে তার মুণ্ডন করালেন দম্পতি

একটি বাছুরকে পুত্র হিসাবে দত্তক নিলেন এক দম্পতি। তারপর বড় উৎসব করে বাছুরের মুণ্ডন করালেন তাঁরা। নিমন্ত্রিত ছিলেন বহু মানুষ।

শাহজাহানপুর (উত্তরপ্রদেশ) : ১৫ বছরের বিবাহিত জীবনে অনেক চেষ্টা করেও সন্তান সুখ লাভ করতে পারেননি বিজয়পাল ও রাজেশ্বরী দেবী। নিঃসন্তান দম্পতি তাই স্থির করেছিলেন তাঁরা দত্তক নেবেন। তারপর সেই শিশুকেই সন্তানের মত মানুষ করে তুলবেন।

এদিকে এরমধ্যেই তাঁরা জানতে পারেন এক বাছুরের জন্ম দেওয়ার পরই তার মায়ের মৃত্যু হয়। গাভীটির মৃত্যুর পর বাছুরটি কার্যত অনাথ হয়ে পড়ে। এই খবর পাওয়ার পরই ওই দম্পতি একটি অবাক করা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

বিজয়পাল ও রাজেশ্বরী দেবী স্থির করেন তাঁরা আর কোনও মনুষ্য সন্তান নয়, দত্তক নেবেন ওই বাছুরটিকে। বাছুরটিকে পুত্র হিসাবে দত্তক নেন তাঁরা। তারপর তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। নাম রাখেন লাল্টু বাবা।

সেই লাল্টু বাবা-র যত্নের এতটুকু অভাব রাখেননি ওই দম্পতি। এদিকে পরিবারে সন্তানের জন্ম হলে তার মাথা নেড়া করার এক প্রথা রয়েছে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে। কিন্তু সে তো মনুষ্য সন্তানের ক্ষেত্রে সম্ভব। বাছুরের মাথা নেড়া করা কী সম্ভব? অসম্ভব যে কিছুই নয় তা প্রমাণ করে দিলেন ওই দম্পতি।

লাল্টু বাবা-র মুণ্ডনের দিন স্থির করেন তাঁরা। তারপর তিথি নক্ষত্র মেনে ভাল দিন দেখে তার মুণ্ডন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। মুণ্ডন হয় গোমতী নদীর ঘাটে।

উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুর জেলার গা ঘেঁষে বয়ে যাওয়া গোমতী নদীর লাল্টু ঘাটে এই মুণ্ডন অনুষ্ঠান যাবতীয় রীতি মেনেই করা হয়। সব শেষে পুরোহিত আশির্বাদও করেন বাছুরকে।

লাল্টু বাবা-র মুণ্ডনকে কেন্দ্র করে পরিচিত ৫০০ জনকে নিমন্ত্রণ করেন ওই দম্পতি। আয়োজন হয় খাওয়া দাওয়ার। নিমন্ত্রিতরা সকলেই খুশি।

মানুষ এবং পশুর মধ্যে বন্ধন ওই দম্পতির সিদ্ধান্তে আরও মজবুত হল বলে মনে করছেন সকলে। নিমন্ত্রণে অতিথিরা কেউ খালি হাতে আসেননি। কেউ লাল্টু বাবা-র জন্য নিয়ে এসেছিলেন কম্বল। কেউ এনেছিলেন ফিডিং বোতল। কেউ বা তাকে নগদে উপহার দেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *