National

করোনা আবহে অভুক্তদের খাওয়াচ্ছে ‘রাইস এটিএম’

করোনাকালে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। বহু মানুষ জানেন না খিদে পেলে কী খাবেন। তাঁদের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছে এক যুবকের ‘রাইস এটিএম’।

হায়দরাবাদ : একটি সংস্থায় এইচআর ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত তিনি। মাইনে পান মাসে দেড় লক্ষ টাকা। লকডাউন শুরু হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে তিনি লক্ষ্য করেন এক মহিলা সুরক্ষাকর্মী মাংস রেঁধে নিয়ে এসেছেন। নিজে খাওয়ার জন্য নয়। অভুক্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের খাওয়ানোর জন্য।

বিষয়টি নজর কাড়ে ওই যুবকের। তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ওই মহিলা ২ হাজার টাকার মাংস রেঁধে এনেছিলেন অভুক্তদের খাওয়ানোর জন্য। যাঁর নিজের মাইনে মাসে ৬ হাজার টাকা।


ওই যুবকের মনে হয় এই টাকা মাইনে পেয়েও যদি ওই মহিলা সুরক্ষাকর্মী এতটা সহমর্মিতা দেখিয়ে থাকতে পারেন তাহলে তিনি এত টাকা মাইনে পেয়ে কেবল নিজের পরিবারকেই দেখবেন? যাঁরা অভুক্ত তাঁদের জন্য কিছুই করবেননা?


এই ভাবনা থেকেই তিনি স্থির করেন তিনি অভুক্তদের মুখে খাবার তুলে দিতে একটি রাইস এটিএম চালু করবেন। তাঁর বাড়ির সামনের একটি দোকানের সঙ্গে কথা বলে তিনি সেখানে প্যাকেটের বন্দোবস্ত করেন।

চাল, তেল, চিনি, ডাল, চা পাতা এবং আরও কিছু জিনিস দিয়ে একটি করে প্যাকেট তৈরি। যা ওই যুবকের বাড়ির দরজায় কড়া নাড়া যে কোনও অভুক্ত মানুষ পেতে পারেন বিনা খরচে।

এপ্রিলের মাঝামাঝি এই রাইস এটিএম চালু করেন হায়দরাবাদের যুবক রামু দোসাপতি। প্রথমে নিজের এক মাসের বেতন দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে প্যাকেটের বন্দোবস্ত করেন।

দ্রুত তাঁর এই রাইস এটিএম-এর কথা সকলে জানতে পারেন। মানুষের ভিড় বাড়তেই থাকে। ফলে পরে তিনি তাঁর পিএফ অ্যাকাউন্ট থেকে আরও ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা তুলে এই প্যাকেট তৈরিতে খরচ করেন।

রামু জানাচ্ছেন তাঁর লক্ষ্যই ছিল যাতে হায়দরাবাদ শহরে এমন কেউ না থাকেন যিনি খালি পেটে রাতে শোবেন। গত একমাস হল তাঁর কর্মকাণ্ডের কথা জানতে পেরে অনেকে এগিয়ে আসছেন সাহায্য করতে।

রামু তাঁদের বলেছেন তাঁরা যদি সাহায্য করতেই চান তাহলে তাঁরা যেন নিজের পাড়াতেই এমন একটি করে রাইস এটিএম চালু করেন।

রামুকে প্যাকেট তৈরি করে দিতে এগিয়ে এসেছেন বেশ কয়েকজন যুবক। রামু কিন্তু প্যাকেট তৈরি করাচ্ছেন না। ব্যবহার করছেন কাপড়ের ব্যাগ। যাতে এই খাবারগুলি রাখা থাকছে।

এই ব্যাগ পিছু তাঁর খরচ পড়ছে ১৮ টাকা করে। ৩ রকমের প্যাকেটের বন্দোবস্ত করেছেন তিনি। যাঁরা সংক্রমণের শিকার তাঁদের পরিবারের জন্য এক মাসের খাবারের বন্দোবস্ত করে দিচ্ছেন তিনি। প্রতি প্যাকেটে খরচ পড়ছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা।

এছাড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের জন্য ৫ দিন চলবে এমন খাবাররে বন্দোবস্ত রেখে প্যাকেট তৈরি করছেন তিনি। বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক, হোটেলের কর্মচারি, ডেলিভারি বয় বা কাজ হারানো বেসরকারি ক্ষেত্রের কর্মীদের জন্য ১৫ দিন পরিবারের চলে যাবে এমন খাবারদাবার থাকা প্যাকেট চালু করেছেন তিনি। যা রামু চাওয়া মাত্র তুলে দিচ্ছেন তাঁদের হাতে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show More

News Desk

নীলকণ্ঠে যে খবর প্রতিদিন পরিবেশন করা হচ্ছে তা একটি সম্মিলিত কর্মযজ্ঞ। পাঠক পাঠিকার কাছে সঠিক ও তথ্যপূর্ণ খবর পৌঁছে দেওয়ার দায়বদ্ধতা থেকে নীলকণ্ঠের একাধিক বিভাগ প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। সাংবাদিকরা খবর সংগ্রহ করছেন। সেই খবর নিউজ ডেস্কে কর্মরতরা ভাষা দিয়ে সাজিয়ে দিচ্ছেন। খবরটিকে সুপাঠ্য করে তুলছেন তাঁরা। রাস্তায় ঘুরে স্পট থেকে ছবি তুলে আনছেন চিত্রগ্রাহকরা। সেই ছবি প্রাসঙ্গিক খবরের সঙ্গে ব্যবহার হচ্ছে। যা নিখুঁতভাবে পরিবেশিত হচ্ছে ফোটো এডিটিং বিভাগে কর্মরত ফোটো এডিটরদের পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে। নীলকণ্ঠ.in-এর খবর, আর্টিকেল ও ছবি সংস্থার প্রধান সম্পাদক কামাখ্যাপ্রসাদ লাহার দ্বারা নিখুঁত ভাবে যাচাই করবার পরই প্রকাশিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button