Foodie

এই জনপ্রিয় রুটি খাওয়ার জন্য নয়, হাত মোছার জন্য তৈরি হয়েছিল

একটা পাতলা ফিনফিনে সাদা টুকরো, দেখতে অনেকটা রুমালের মত হলেও আসলে তা খাওয়ার জিনিস। কি সেই বস্তু যা একই সাথে ২ কাজে ব্যবহার করা যায়।

মোগলরা ভারতে এসে শাসনকার্য চালানোর সঙ্গে নানারকম অভিনব খাবারদাবারও আবিষ্কার করে গেছে। সময়ের সাথে সাথে সেসব মুখরোচক পদ দেশ বিদেশেও তাদের বিস্তার ঘটিয়ে ফেলেছে। মোগল দরবারে জন্ম নেওয়া এমনই এক অত্যাশ্চর্য খাবার হল রুমালি রুটি। প্রাথমিকভাবে এর শুরুটা হয় মোগলদের রাজকীয় রান্নাঘরে।

একদম গোড়ার দিকে রুমালের মত পাতলা এই রুটিকে হাত মোছার কাজেই লাগানো হত। হিন্দি ও উর্দু ভাষায় রুমালি শব্দের অর্থই হল এক বিশেষ ধরনের ফিনফিনে কাপড়।

রুমালি রুটি রাজকীয় খাওয়াদাওয়ার সময় হাতের অতিরিক্ত তেল চপচপে ভাব শুষে নেওয়ার জন্যে ব্যবহার করা হত। এটি আসলে সূক্ষ্ম আর স্বচ্ছ হওয়ার জন্যেই রুমাল হিসাবে ব্যবহার করতে সুবিধা হত।

কিন্তু যুগের পরিবর্তনে এর কাজ বদলায়। মোগল সাম্রাজ্যের পতনের সাথে সাথে এর রাজকীয় রূপও পাল্টে যায়। হাত মোছার বদলে তা রসনা তৃপ্তির কাজে লাগতে শুরু করে। ঠিক যেন ‘ছিল রুমাল হয়ে গেল বেড়াল’, থুড়ি রুটি।

তার পরিধিও বেড়ে যায়। ধীরে ধীরে এই রুমালি মোগল রাজদরবারের বাইরে এসে সাধারণ মানুষের প্রিয় খাবার হয়ে ওঠে। লখনউ এবং কলকাতার বিভিন্ন নামীদামী রেস্তোরাঁ থেকে সাধারণ দোকানে, এমনকি বাড়িতেও এই রুটি বানানো শুরু হয়।

খুব নরম এবং পাতলা হওয়ার কারণে এই রুটি হজমেও সুবিধা আবার খেতেও সুস্বাদু হয়। তবে অত্যন্ত দক্ষ হাতের কারিগর ছাড়া খুব সহজে কেউ রুমালি বানাতে পারেননা।

বর্তমানে এর চাহিদা এতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে পাড়ায় পাড়ায় বিভিন্ন দোকানে রুমালি রুটি তৈরি হতে দেখা যায়। আমিষ থেকে নিরামিষ, যে কোনও সুস্বাদু পদের সঙ্গেই এই রুটি পরিবেশন করা যায়।

বর্তমানে রুমালির বিবর্তন এমন পর্যায়ে ঘটেছে যে শুধু আর ভারতীয় নয়, পাশ্চাত্য খাবারের ধাঁচেও একে পরিবেশন করা হচ্ছে। এখনকার স্বাস্থ্য সচেতন প্রজন্ম আর তেল চুপচুপে পরোটা পছন্দ করেনা। তাই র‍্যাপ থেকে রোল সবকিছুতেই এখন রুমালির রমরমা।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *