Kolkata

বাড়িতে মারণ ফাটল, ভিটে ছেড়ে হোটেলে বউবাজারের ৩০০ বাসিন্দা

ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো তাঁদের বাড়ির গা ঘেঁষেই চলে যাবে। এটা অবশ্যই তাঁদের জন্য আনন্দের ছিল। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সুবিধা মিলবে হাত বাড়ালেই। কিন্তু সেই বউবাজারের বাসিন্দারাই এখন চাইছেন এমন মেট্রোর দরকার নেই। তাঁরা নিজেদের বাপ ঠাকুরদার ভিটে মাটিতে নিজেদের মত থাকতে চান। গত শনিবার রাত থেকে শুরু করে রবিবার পর্যন্ত বউবাজারের বিভিন্ন বাড়ি বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। সামান্য সময়ের মধ্যেই বাড়িতে দেখা দিয়েছে বিশাল বিশাল ফাটল। বেশ কিছু অংশ ভেঙেও পড়ে কিছু বাড়ির। ফলে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। দ্রুত সেখানে হাজির হন পুরসভা ও মেট্রোর পদস্থ কর্তারা। গোটা বউবাজার এলাকা জুড়েই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

বউবাজার এলাকা পুরনো কলকাতার মধ্যে পড়ে। মধ্য কলকাতার এই এলাকার গলি, তস্য গলিতেও বড় বড় পুরনো বাড়ির সারি। এক দেওয়ালের পরপর বাড়িগুলির বয়স নেহাত কম নয়। চুন, সুরকির দেওয়াল। কড়ি–বরগার সিলিং। সেসব বাড়ির বেশ কিছু বাড়িতে এদিন লক্ষণীয় ফাটল তৈরি হয়। ফলে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ এমন বাড়িগুলি থেকে বাসিন্দাদের যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সরিয়ে নিয়ে যায়। তোলা হয় বিভিন্ন হোটেলে। সামান্য সময়ের নোটিসে বাড়িঘর, আসবাব, জিনিসপত্র সব ফেলে প্রায় এক কাপড়ে পরিবার নিয়ে বেরিয়ে যেতে হয় ৩০০-র ওপর বাসিন্দাকে। ভেজা চোখে তাঁদের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হয়।

মেট্রোর টানেলে জল ঢুকেই এই বিপর্যয় বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পারা গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যেসব পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে হোটেলে আশ্রয় পেয়েছেন তাঁদের এখন একটাই প্রশ্ন, এভাবে কতদিন? কতদিন তাঁদের হোটেলে কাটাতে হবে? মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁদের আরও অভিযোগ, থাকার বন্দোবস্ত করলেও তাঁদের খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়নি। তাছাড়া তাঁরা এসব হোটেলে থাকতে রাজি নন। তাঁরা ফিরতে চান তাঁদের নিজের বাড়িতে। নিজেদের চেনা ঘরগুলোয়। যে মেট্রো তাঁদের ঘরবাড়ি কেড়ে নেয় তেমন মেট্রোর দরকার নেই বলেও জানান অনেকে। পাশাপাশি এখনও যাঁদের বাড়ি ছাড়তে হয়নি তাঁরাও আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। এবার তাঁদের পালা নয়তো? এমন প্রশ্নও তুলছেন বউবাজার অঞ্চলের অনেক বাসিন্দা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *