State

অজয়ে স্নান আর বাউলের গান

কুয়াশা ভরা ভোর। বেলা বাড়লে ছড়িয়ে পড়ে মিঠে রোদ। একটা চেনা গন্ধ নাকে এসে ঠেকে। এটাই শীতের বীরভূম। গঙ্গাসাগর যদি পৌষ সংক্রান্তির একটি গন্তব্য হয়, তবে রাজ্যের দ্বিতীয় গন্তব্যটি অবশ্যই জয়দেব কেন্দুলির মেলা। এখানে মানুষের সঙ্গে বাউলের মহামিলন হয়। বাউলদের তীর্থস্থান হিসাবেও কেন্দুলি পরিচিত। এখানেও রাজ্য সরকারের উদ্যোগে পাকাপাকি বন্দোবস্ত।


কথিত আছে, কবি জয়দেবের মা যখন মৃত্যুশয্যায় তখন ছেলের কাছে গঙ্গাজল মুখে দেওয়ার শেষ ইচ্ছের কথা জানান। কিন্তু ওখানে গঙ্গা কোথায়! মায়ের তখন যা অবস্থা তাতে তাঁকে গঙ্গা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়। আর তাঁর পক্ষেও অতদূর ভ্রমণ করে গঙ্গার জল নিয়ে আসার সময় থাকবে না। তখন নাকি মনে মনে শ্রীকৃষ্ণের কাছে এই ইচ্ছার কথা সর্বান্তকরণে জানান জয়দেব। ঈশ্বরের কৃপায় সেই ইচ্ছাপূরণও হয়। এই পৌষ সংক্রান্তির দিন ক্ষণিক সময়ের জন্য অজয় নদের জল উল্টোদিকে বয়। ঢোকে গঙ্গার ঘোলা জল! সেই জলই মায়ের মুখে তুলে দেন জয়দেব। সেই থেকেই পৌষ সংক্রান্তির দিন প্রায় শুকনো অজয় নদের জলে স্নান করা মহাপূণ্য বলে বিশ্বাস করেন মানুষজন। সেকথা মাথায় রেখে এদিনও অজয়ে বহু মানুষ স্নান সারেন। ডুব দেওয়ার মত জলই পাওয়া মুশকিল হয়। তবু কনকনে ওই ঠান্ডা জলে ডুব কারও ঠান্ডা লাগার কারণ হয়না! বরং হাড় হিম করা জলের ওই স্পর্শে কোথাও যেন লুকিয়ে থাকে নিখাদ বিশ্বাসের অদ্ভুত আনন্দ।

জয়দেব মানেই বাউলের মহামিলন। গতকাল সারারাত ধরে বিভিন্ন আখড়ায় একের পর এক চলেছে বাউল গান। বাংলার একান্ত মেঠো সুর মিশেছে রাতের স্তব্ধতায়। যদিও কেন্দুলির মেলা চলে রাতভর। ঘড়ি না দেখলে বোঝার উপায় নেই কটা বাজে! আর সেখানেই কেন্দুলি মেলার মাহাত্ম্য। সেখানেই বাংলার একেবারে নিজস্ব সংস্কৃতি, নিজের স্বতন্ত্রতা নিয়ে বেঁচে থাকে বছরের পর বছর।



Show More

News Desk

নীলকণ্ঠে যে খবর প্রতিদিন পরিবেশন করা হচ্ছে তা একটি সম্মিলিত কর্মযজ্ঞ। পাঠক পাঠিকার কাছে সঠিক ও তথ্যপূর্ণ খবর পৌঁছে দেওয়ার দায়বদ্ধতা থেকে নীলকণ্ঠের একাধিক বিভাগ প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। সাংবাদিকরা খবর সংগ্রহ করছেন। সেই খবর নিউজ ডেস্কে কর্মরতরা ভাষা দিয়ে সাজিয়ে দিচ্ছেন। খবরটিকে সুপাঠ্য করে তুলছেন তাঁরা। রাস্তায় ঘুরে স্পট থেকে ছবি তুলে আনছেন চিত্রগ্রাহকরা। সেই ছবি প্রাসঙ্গিক খবরের সঙ্গে ব্যবহার হচ্ছে। যা নিখুঁতভাবে পরিবেশিত হচ্ছে ফোটো এডিটিং বিভাগে কর্মরত ফোটো এডিটরদের পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে। নীলকণ্ঠ.in-এর খবর, আর্টিকেল ও ছবি সংস্থার প্রধান সম্পাদক কামাখ্যাপ্রসাদ লাহার দ্বারা নিখুঁত ভাবে যাচাই করবার পরই প্রকাশিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button