ইহলোকে না থাকা পরিজনের সঙ্গে কথা বলা যায় এ ফোনে, রয়েছে আশ্চর্য এক ফোন বুথ
যাঁরা আর রক্তমাংসে সামনে এসে কথা বলতে পারবেননা, কিন্তু বড়ই প্রিয়জন, সেই পরলোকগত পরিজনের সঙ্গে কথা বলা যায় এই ফোনে।
পাহাড়ের ওপর একটি সাজানো বাগান। এই বাগানের মাঝেই রয়েছে একটি টেলিফোন বুথ। ছোট্ট সেই ফোন বুথে রয়েছে একটি টেলিফোন। যে ফোনে নেই কোনও সংযোগ। কোনও তার মারফত তা যুক্ত নয়। তবে ফোন রয়েছে। রিসিভার রয়েছে।
সংযোগ না থাকুক। তাতে কি! এই বুথে অনেকেই হাজির হন। কথা বলেন রিসিভার কানে নিয়ে। কাঁদেন, মনের কথা বলেন, চুপও করে থাকেন রিসিভারটা কানে রেখে।
এ ফোনের নাম উইন্ড ফোন। যা রয়েছে জাপানের ওসুচিতে। পাহাড়ের উপরে এই ফোনের বিশেষত্ব হল এ ফোনে কথা বলা যায় পরলোকগত প্রিয়জনের সঙ্গে।
এক তুতোভাইকে হারিয়ে ভেঙে পড়া সাসাকি ইতারু ২০১০ সালে এই ফোনটি তাঁর বাগানে লাগান। যে ফোনে কান পেতে তিনি তাঁর অতি প্রিয় সেই প্রয়াত ভাইয়ের সঙ্গে নানা কথা বলতেন।
২০১১ সালে জাপানে হওয়া ভয়ংকর সুনামি বহু মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। তাঁদের পরিবারের মানুষজন ভেঙে পড়েন। প্রিয়জনকে হারানোর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে দিন কাটতে থাকে তাঁদের। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই সাসাকি তাঁর এই ফোন বুথটি সকলের জন্য খুলে দেন।
তখন থেকে অনেকেই সাসাকির তৈরি এই ফোন বুথে হাজির হন। সংযোগহীন ফোনটি থেকে ফোন করেন প্রয়াত প্রিয়জনকে। নানা কথা বলেন। ফোনে তাঁরা কার সঙ্গে আসলে কথা বলেন? না, ওপারে কেউ থাকেন না। কথা হয় আসলে নিজের সঙ্গেই। ওপারের উত্তরটা নিজেই সাজিয়ে নেন ফোন করা মানুষটি।
যেখানে বুথটি রয়েছে সেখানে খুব হাওয়া বয়। সেই হাওয়ার একটা শব্দ আছে। হাওয়ার শব্দই শোনা যায় ফোনের রিসিভারে কান পাতলে। সেটা শুনে ব্যথিত ভগ্নহৃদয় মানুষটির মনে হয় তাঁর সঙ্গে তাঁর প্রিয়জন কথা বলছেন। এটাই একটা শান্তি দেয় তাঁদের।













