Sports

শিখরের বিধ্বংসী ইনিংসে ঘরের মাঠে ধূলিসাৎ কলকাতা

দিল্লির কাছে ফিরতি ম্যাচে আরও শোচনীয় হার হারল কলকাতা। প্রথম ম্যাচে তবু লড়াই করে খেলাকে সুপার ওভার পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছিল নাইটরা। এবার তার ধারে কাছেও পৌঁছতে পারল না। বরং রাসেলের ব্যাটিংয়ের সময়টা বাদ দিয়ে কলকাতাকে মাথা চাড়াই দিতে দিল না সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পরামর্শে থাকা দিল্লি ক্যাপিটালস।

কলকাতার দুর্বল মিডল অর্ডার ব্যাটিং, খারাপ ফিল্ডিং, ক্যাচ ফস্কানো সবই বলে দিচ্ছিল এদিন কলকাতার মুখ থুবড়ে পড়া সময়ের অপেক্ষা। ঘরের মাঠে দিল্লির কাছে এমন লজ্জার হারের পর এবার বোধহয় কলকাতার হারের পালা শুরু।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

চেন্নাইয়ের কাছে হারের পর এদিন দিল্লির কাছে হার। ক্রমশ কলকাতার পয়েন্ট টেবিলে অবনমন শুরু হয়েছে। কারণ বোধহয় কলকাতার রাসেল ভরসা। কলকাতার অধিনায়ক এখনও পর্যন্ত তাঁর যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি। অন্যরাও কেউই ধারাবাহিক নন। তেমন কিছু দেখাতেও পারছেন না। কেবল মনে রাখার মত খেলছেন রাসেল। একা একটা খেলোয়াড়ের কাঁধে ভর করে সব খেলা জেতা যে সম্ভব নয় তা কলকাতার বুঝে ফেলা উচিত।

রাসেল বাদে কলকাতা যে নেহাতই মামুলি একটা দল তা বোধহয় বুঝে গেছে অন্য দলগুলিও। ফলে তারাও সেভাবেই ঘুঁটি সাজাচ্ছে। না কলকাতার আছে বলের ধার, না আছে ফিল্ডিংয়ের নিপুণতা, না আছে ব্যাটিংয়ে রাসেল ছাড়া নির্ভর করার মত ব্যাটসম্যান। আর না আছে দল ভিত্তিক পরিকল্পনা। যার খেসারত দেওয়া শুরু করেছে নাইটরা।

ইডেনে শুক্রবার টস জিতে প্রথমে কলকাতাকে ব্যাট করতে পাঠায় দিল্লি। প্রথম ম্যাচে দিল্লি জিতেছিল। ফলে ঘরের মাঠে দিল্লিকে বড় রানের চ্যালেঞ্জ দিয়ে হারাতে চাইছিল কলকাতা। এদিন কলকাতার টিমে ২টি পরিবর্তন নজরে পড়ে। ওপেনার ক্রিস লিন ও স্পিনার তথা হার্ডহিটার সুনীল নারিন এদিন ১১ জনের দলের বাইরে ছিলেন। সেই জায়গায় এসেছিলেন ইংল্যান্ডের ডেনলি ও ব্রেথওয়েট।

ওপেন করতে নামেন ডেনলি ও শুভমান গিল। কিন্তু ইশান্ত শর্মার প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ডেনলি। এরপর শুভমান ও রবীন উত্থাপ্পা রান টেনে নিয়ে যেতে থাকেন। পরপর চার আসতে থাকে। শুভমানের ব্যাটিং ছিল এদিন ক্রিকেটের ভাষা মেনে এবং টি-২০-র প্রয়োজনীয়তা মাথায় রেখে। এই ২ দিক রেখে ব্যাট করা মুশকিল। কিন্তু ক্রিকেটীয় শট খেলেই রান তুলতে থাকেন শুভমান।

উত্থাপ্পা আউট হন ২৮ রানে। নীতীশ রাণা ফেরেন ১১ রান করে। অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক যথারীতি এদিনও রান করতে ব্যর্থ। মাত্র ২ রান করে ফেরেন তিনি। শুভমান তাঁর কাজ করে দেন। ৩৯ বল খেলে ৬৫ রান করেন তিনি। ২টি ছক্কা হাঁকান। ৭টি চার মারেন। কিন্তু বাকিদের ব্যর্থতায় মিডল অর্ডার যখন ধসে যাচ্ছে তখন কলকাতার কার্যত একমাত্র ভরসায় রূপান্তরিত হওয়া আন্দ্রে রাসেল নামেন মাঠে।

আন্দ্রে রাসেল মাঠে মানেই কিছু দুরন্ত শট। অসাধারণ ছক্কা। গ্যালারি জুড়ে খুশির বন্যা। আর দলের রানের মিটার চালু। এদিনও তাই হয়েছে। রাসেল একাই এদিন ২১ বলে করেন ৪৫ রান। যাতে ৪টি ছক্কা ও ৩টি চার ছিল। রাসেল আসার পর কলকাতার রানের গতি অনেকটাই বাড়ে। ব্রেথওয়েটকে সঙ্গে করে তিনি ভাল জায়গায় পৌঁছে দেন কেকেআর-কে। শেষে পীযূষ চাওলা ১৪ রান করে দেন। ২০ ওভার খেলে ৭ উইকেট হারিয়ে কলকাতা তোলে ১৭৮ রান। সম্মানজনক টোটাল।

পাল্টা ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লে-তে চালিয়ে খেলার পরিকল্পনা নিয়েছিল দিল্লি। পৃথ্বী শ ও শিখর ধাওয়ান চালিয়ে খেলতে থাকেন। ২ জনের ব্যাট থেকে প্রথম দিকে চারের চেয়ে ছক্কা অনেক বেশি আসে। পৃথ্বী আউট হন ১৪ রান করে। কিন্তু শিখরের ব্যাট চলতে থাকে। যদিও অন্যদিকে দিল্লির অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার ৬ রানেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন। জুটি বাঁধেন শিখর ও ঋষভ পন্থ। ঋষভ একটা দিক ধরে রাখেন আর শিখর বিধ্বংসী ব্যাটিং করতে থাকেন। যা ক্রমশ খেলাটাকে দিল্লির হাতের মুঠোয় এনে দেয়।

১৫ তম ওভারে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর একটি বলে পেটে চোট পান ঋষভ। মাঠেই শুয়ে পড়েন তিনি। যদিও তখন খেলা দিল্লির ঝুলিতে প্রায় চলেই এসেছে। তারপরেও শিখরের ব্যাট কথা বলতে থাকে। জঘন্য বোলিংকে কীভাবে কাজে লাগাতে হয় তা শিখরের ভালই জানা। খেলা যখন প্রায় শেষের দিকে তখন ঋষভ ৪৬ রান করে আউট হন। নামেন ইনগ্রাম। শিখর কিন্তু ব্যাটিং চালিয়ে যান। ইনগ্রাম ১টি ছক্কা ও ১টি চার মেরে খেলা শেষ করেন। ৭ বল বাকি থাকতেই ম্যাচটি ৭ উইকেটে জিতে নেয় দিল্লি।

খেলায় অপরাজিত থাকেন শিখর। ৯৭ রান করেন তিনি। একটাই খেদ রয়ে গেল, এত ভাল খেলেও শিখরের সেঞ্চুরিটা করা হলনা। ম্যাচের সেরা অবশ্য হন তিনিই।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *