SciTech

কয়েকটা পিঁপড়ে মিলেই অনায়াসে জমাট দই পেতে দিতে পারে, দাবি গবেষকদের

পিঁপড়ে দিয়েও যে দই পাতা যায় তা আগে জানা ছিলনা। এই দই নিয়ে চিন্তারও কিছু নেই। এটা সম্ভব বলেই দাবি গবেষকদের।

দুধ থেকে দই পাতার একাধিক পদ্ধতি রয়েছে। কিন্তু দই যে স্রেফ কয়েকটা পিঁপড়ে মিলেই পেতে দিতে পারে তা অনেকের হয়তো জানা নেই। এবার বিজ্ঞানীরা দই পাতার একটা সোজা রাস্তার সন্ধান দিলেন।

বেশ ঘন জমাট দই পাতার জন্য কোনও পদ্ধতি নয়, কয়েকটা পিঁপড়ে পেলেই যথেষ্ট। দুধ জ্বাল দিয়ে তার মধ্যে কয়েকটা পিঁপড়ে ছেড়ে দিলেই নাকি তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু দই! এমনই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। ইতিমধ্যেই একটি রেস্তোরাঁয় তার ব্যবহারিক প্রয়োগ শুরু হয়ে গেছে।

পিঁপড়ে দিয়ে দই পাতার এই পদ্ধতি কিন্তু কোনও নতুন আবিষ্কার নয়। বরং এ পদ্ধতি বহু প্রাচীন। প্রাচীনকালে ইউরোপ এবং তুরস্কের কিছু জায়গায় এইভাবে দই পাতা হত। শতাব্দী প্রাচীন সেই পদ্ধতি নিয়েই টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অফ ডেনমার্ক-এর গবেষকরা নতুন করে কাজ করছেন।

তাঁরা বুলগেরিয়ার একটি জঙ্গলে লাল কাঠ পিঁপড়ের কলোনিতে গিয়ে হাজির হন। একটি কাচের জারে জ্বাল দেওয়া দুধ ভরে তার মধ্যে কয়েকটা পিঁপড়ে ফেলে দেন। তারপর জারের মুখটা চাপা দিয়ে দেন।

এবার সেটিকে ওই পিঁপড়ের কলোনিতেই রেখে দেন গবেষকেরা। ফলে সেই জার ছেঁকে ধরে অগুন্তি পিঁপড়ে। অবশ্য ভিতরে প্রবেশ করতে পারেনি। ভিতরে দুধের সঙ্গে ওই কয়েকটি পিঁপড়েই ছিল। পরদিন গবেষকেরা দেখেন দুধ অনেকটা জমাট বেঁধেছে। একটা টক ভাবও তৈরি হয়েছে। একটু অন্য স্বাদ। তবে বেশ ভাল স্বাদ।

আইসায়েন্স জার্নালে এই নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন দোকানে পাতা দইয়ের চেয়ে পিঁপড়ে দিয়ে পাতা দই অনেক বেশি পুষ্টিকর। ডেনমার্কের কিছু রেস্তোরাঁ এই পদ্ধতিতে দই পাতা শুরুও করেছে।

পিঁপড়ের শরীরে থাকা ব্যাকটেরিয়া দুধের শর্করাকে ভেঙে দেয়। ফলে খুব সহজেই দুধ জমাট বেঁধে দইতে পরিণত হয়। পিঁপড়ের শরীরের উপকারি ব্যাকটেরিয়া দইয়ের মধ্যেও পাওয়া যায়। তাই এই দইয়ের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি হয়।

দই পাতার এই প্রাচীন পদ্ধতি স্বাস্থ্যকর হলেও বিজ্ঞানীদের মতে এই কাজে অভিজ্ঞ ব্যক্তির দরকার। কারণ পিঁপড়েরা উপকারি ব্যাকটেরিয়া ছাড়াও অনেক অণুজীব বহন করে। সেগুলো দুধে মিশলে সংক্রমণের ভয় থেকে যায়। তাই বাড়িতে এই পদ্ধতিতে দই পাতার চেষ্টা করা একেবারেই উচিত নয়।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *