লাল মাটির দেশে কমলা ফল দেখতে পাওয়া এক আশ্চর্য, যা পর্যটকদের টেনে নিয়ে যাচ্ছে এই গ্রামে
পাহাড়ি অঞ্চলের ফল ফলছে রাঢ় বঙ্গে। লাল পাহাড়ির দেশে কমলা এই ফল এতটাই অবাক করে যে অনেক পর্যটক হাজির হন এই দৃশ্য দেখতে।
মৌসুমি গুহ মান্না, পুরুলিয়া : ভিটামিন সি-র উৎকৃষ্ট উৎস সঙ্গে টকমিষ্টি স্বাদ। ছোট ছোট কোয়ায় ভরা কমলালেবু প্রায় সকলেরই পছন্দের ফল। আর কমলালেবু বললে আমাদের প্রথমেই মনে পড়ে পাহাড়ি এলাকার কথা। যেখানে নভেম্বরের শুরু থেকে জানুয়ারি অবধি গাছ ভরে থাকে এই ফলে।
পাহাড় বা তরাই এলাকায় নয়, এমনকি সমতলের কোনও জমিতেও নয়। বরং রুক্ষ শুষ্ক লাল মাটিতেই এখন ফলছে কমলালেবু। এই শীতে লালপাহাড়ির দেশেই দেখা মিলছে গাছ ভর্তি লেবুর। স্বাদে, গন্ধে যা কোনওদিক থেকেই উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকার লেবুর থেকে আলাদা নয়।
পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডির একটি ছোট্ট গ্রাম বুরদা। চারপাশে রুক্ষ লাল মাটি। এমনকি পর্যাপ্ত পরিমাণে জলের যোগান না থাকায় সেখানে সঠিকভাবে চাষাবাদও হয়না। অথচ এই শীতে সেখানেই ফলে রয়েছে কমলালেবু। তাও আবার একটা দুটো নয় বরং গাছ নুয়ে পড়েছে লেবুর ভারে।
বুরদার লালিমা মাহাতো-র জমিতেই বেড়ে উঠেছে কমলালেবুর গাছ। যার মধ্যে ৪টি পূর্ণবয়স্ক গাছ লেবুর ভারে অনেকটাই ঝুঁকে গেছে। বাকি চারাগুলি এখনও বড় হয়নি। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সহায়তায় লালিমাদেবীর জমির এই লেবু বাজারে বিক্রিও হয়।
শুরুটা হয়েছিল খুব অদ্ভুতভাবে। লালিমা মাহাতো জানান, একসময় তিনিও সকলের মতই লেবু খেয়ে তার বীজ ছুঁড়ে ফেলে দিতেন। বছর কয়েক আগে একদিন কমলালেবু খেয়ে তার বীজ ফেলে না দিয়ে বাড়ির পাশের জমিতে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।
এই জমিতে কমলালেবু হওয়ার আশা নেই ভেবে ভুলেও গেছিলেন সেকথা। কিন্তু একসময় ওই বীজ থেকেই ছোট ছোট চারা বার হতে দেখে তিনি অবাক হয়ে যান। এরপর মাটিতে জৈব সার দিয়ে চারাগুলিকে সযত্নে বড় করে তোলেন।
যার ফলস্বরূপ স্থানীয় মানুষজন থেকে পর্যটক অবধি সকলেই লাল মাটিতে মিষ্টি কমলার স্বাদ পাচ্ছেন। সঠিক যত্ন পেলে রুক্ষ মাটিতেও পাহাড়ি ফলের চাষ সম্ভব। সেটা এই পুরুলিয়ার বুরদা গ্রামের কমলালেবু গাছ প্রমাণ করে দিল।













