State

পাখি পাহাড়ে রংবাহারি পাখি নেই, পাখির কলতানও নেই, তা সত্ত্বেও সার্থকনামা এ পাহাড়

শীতকাল মানেই মন উড়ু উড়ু। আর এ রাজ্যে বেড়ানোর জায়গার অভাবও নেই। হাতছানি দেয় পাহাড়, জঙ্গল, সমুদ্র। অনেকে হাজির হন পুরুলিয়ার পাখি পাহাড়ে।

মৌসুমি গুহ মান্না, পুরুলিয়া : পশ্চিমবঙ্গের এক প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রাম। সেখানে একটি বিশেষ পাহাড়ের দিকে তাকালেই কোথাও চোখে পড়ে এক ঝাঁক পায়রা। কোথাও প্যাঁচা আর প্যাঁচানি। কোথাও দেখা যায় পেখম মেলা ময়ূর। আবার কোথাও তোতার দল একজোট হয়ে বসে রয়েছে।

পুরুলিয়ার পাখি পাহাড়। নাম শুনলেই মনে হয় শয়ে শয়ে রংবেরংয়ের পাখির মেলা দেখা যায় সে পাহাড়ে। পাখির কলতানে বুঝি মুখর হয়ে থাকে পাহাড়। কিন্তু সত্যিটা অন্য। আকাশের বুকে ডানা মেলা পাখি নয় বরং পাখির অবয়বই এ পাহাড়ের মুখ্য আকর্ষণ।

পাহাড়ের গায়ে খোদাই করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পাখির চেহারা। তাই পাখির কলকাকলি নয় বরং পাথরে খোদাই করা পাখির মূর্তির জন্যই এর নাম হয়েছে পাখি পাহাড়। কয়েক দশক ধরে জঙ্গলমহলের মানুষদের সহায়তায় কলকাতার এক শিল্পী পাথরের গায়ে ফুটিয়ে তুলেছেন এই শিল্প।

পাখি পাহাড়ের সেই শিল্পকে পর্যটকদের সামনে নিপুণ দক্ষতায় তুলে ধরেন একদল মহিলা গাইড। পুরুলিয়ার রুক্ষ জমিতে চাষাবাদের তেমন সুবিধা নেই। তাই সংসারের হাল ধরতে মহিলারা এই গাইডের কাজ বেছে নিয়েছেন। পাহাড়ি এলাকার স্বনির্ভর মহিলা সমিতির অংশ এই ৪১ জন গাইড।

অহল্যা মাহাতোর মত গাইডরা জীবনের সব প্রতিকূলতাকে হাসিমুখে সরিয়ে রেখে সংসার সামলে ঠিক সকাল ১০টা থেকে হাজির হয়ে যান পাখি পাহাড়ে।

West Bengal News
পুরুলিয়ার পাখি পাহাড়ের মহিলা গাইডরা, ছবি – মৌসুমি গুহ মান্না

পর্যটকদের গাড়িপিছু ১০০ টাকা ধার্য করা হয়। দিন শেষে সকল গাইডের মোট যে টাকা উপার্জন হয় সেটা সমিতির সম্পাদকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিনি টাকার সমান ভাগ করে সকলকে দেন।

পাহাড় ঘুরিয়ে দেখানো ছাড়াও ওই মহিলারা পাহাড়ের কোলের সব আবর্জনাও পরিস্কার করেন। এমনকি তাঁদের মধ্যে ২০ জন মিলে ওখানেই একটি ছোট জলখাবারের দোকানও চালান। এতে পর্যটকদের পাহাড় ঘুরে দেখার সাথেই টুকটাক মুখও চলে। পুরুলিয়া বনবিভাগের পক্ষ থেকে মহিলাদের এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানানো হয়েছে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *