গাড়ি বাড়ির একটাই রং, ইন্টারনেট প্রায় নেই, রাস্তা জনহীন, এমন রাজধানীও রয়েছে
গোটা শহর জুড়ে শুধু একটাই মাত্র রং। বৈচিত্র্যের অভাবে কখনও কখনও চোখে ধাঁধাঁও লেগে যেতে পারে। তবু রং বদলের কোনও নীতি সেখানে চলেনা।
বাস্তবে কেউ যদি একুশে আইনের প্রয়োগ দেখতে চান তাহলে একবার অন্তত ঘুরে আসাই যায় অদ্ভুত এই শহরে। বর্তমানের ইন্টারনেট শাসিত পৃথিবীতে এমনও এক শহর রয়েছে যেখানে মানুষজন ইন্টারনেট ব্যবহার করা থেকে কার্যত দূরে থাকতে বাধ্য। কোনও সোশ্যাল মিডিয়া নেই। ইন্টারনেটের ব্যবহারও সামান্য। ওয়াইফাই নেই।
অদ্ভুত সব নিয়মের বেড়াজাল রয়েছে সে শহরের অন্দরে। যে কারণে বাইরে থেকে কেউ ঘুরতে গেলেও সেখানকার রকমসকম দেখে হতবাক হয়ে যান। এইটুকু শুনেই চমকে গেলেন নাকি? তাহলে জেনে রাখুন এ শহরে সাদা বাদে অন্য রংয়ের গাড়িও নিষিদ্ধ।
মধ্য এশিয়ার তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাদের কথা হচ্ছে। যাকে বলা হয় ‘শ্বেত পাথরের শহর’। যেখানে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে সীমাহীন সাদা মার্বেলের স্থাপত্য। রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, হোটেল, সরকারি আবাসন, গাড়ি সর্বত্রই সাদার রমরমা। একটি রাজধানী শহর। রাস্তাঘাট চওড়া। কিন্তু রাস্তায় মানুষের দেখা পাওয়া যায়না। চারধার ফাঁকা।
২০১৮ সালে তুর্কমেনিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি গাড়ির রঙের বিষয়ে একটি আইন জারি করেন। শহরের রংয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে সেখানকার সব গাড়ির রং সাদা বা রূপোলী করার নির্দেশ দেন তিনি। আজও আশখাবাদের সব গাড়ি সাদা বা রূপোলী রংয়ের হয়।
কালো রংয়ের গাড়ির মালিককে গাড়িকে সাদা রং করতে বাধ্য করা হয়। যতদিন অবধি গাড়ির রং বদল না হয়, প্রশাসন থেকে গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করে রাখা হয়।
শহরের চওড়া রাস্তাগুলিও বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠান এবং কুচকাওয়াজের জন্য ব্যবহৃত হয়। তাই সেখানকার বাসিন্দাদের অকারণে রাস্তায় ঘোরার অনুমতি নেই। এতরকম অদ্ভুত নিয়মকানুন সত্ত্বেও আশখাবাদ তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং স্থাপত্যের জন্য পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়।


