Entertainment

পেশায় ইলেক্ট্রিশিয়ান হয়েও তাঁর হিট গানের তালিকা আজও মানুষকে পাগল করে

এ দেশে সিনেমার গানের জগতে তিনি এক নক্ষত্র। এক কিংবদন্তি। কিন্তু জীবনে ইলেকট্রিকের কাজ করে, ফুটপাথে শুয়ে একসময় দিন কাটাতে হয়েছে তাঁকে।

তাঁর জীবনটা কোনও সিনেমার চেয়ে কম নয়। গানের প্রতি ভালবাসা তাঁর ছোট থেকেই ছিল। কিন্তু পরিবারের কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাননি। বাবা টুকটাক ভজন গাইতেন। সে সুরও তাঁকে টানত। তবে প্রথাগত গানের তালিম যাকে বলে তা তাঁর কোনওদিনই ছিলনা। বরং পাশ করে তিনি ইলেক্ট্রিশিয়ান হিসাবে যোগ দেন পোস্টাল অ্যান্ড টেলিগ্রাফ বিভাগে।

দিল্লিতে ১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত এই চাকরিই তিনি করেন। কিন্তু মন টেকেনি। গান তাঁকে চুম্বকের মত টানত। তাই চাকরি ছেড়ে গান গাওয়ার বাসনা নিয়ে তিনি ১৯৫০ সালে পাড়ি দিলেন মুম্বই।


মুম্বইতে তখনও গান গাওয়ার ইচ্ছা নিয়ে পৌঁছলেই গান গাওয়ার সুযোগ মিলত না। সেই কঠিন সময়ে পকেটে পয়সা নেই। থাকার জন্য ঘর নেই। রাস্তায় ফুটপাথে শুয়ে দিন কাটত তাঁর। তবে ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ জানায় সেই কাজ করে কিছু রোজগার করতেন। আর সেই দিয়ে খাবারের টাকাটা জোগাড় করে নিতেন।

১৯৫২ সালে শচীন দেববর্মন তাঁকে একটি কোরাসে গান গাওয়ার সুযোগ দেন। তখনই চোখে পড়ে যান ওই যুবক। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় তখন মুম্বইতে হেমন্ত কুমার নামে বিখ্যাত। তিনি তাঁর একটি গানের কোরাসে ফের ছেলেটিকে সুযোগ দেন।

হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ছেলেটিকে তাঁর সহযোগীও বানিয়ে নেন। ৩ বছর হেমন্তর সহযোগী হিসাবে কাজ করার পর ছেলেটি ১৯৫৫ সালে প্রথম সুযোগ পান নিজে সিনেমায় সুর দেওয়ার।

বচন নামে একটি সিনেমায় সুর দিয়ে পথ চলা শুরু করেন তিনি। গায়ক হতে এসে হয়ে যান সুরকার। এরপর তাঁর হাত ধরেই প্রথম আলোয় আসেন আশা ভোঁসলে।

এমন কোনও গায়ক নেই যিনি তাঁর সুরে গান করেননি। তেমন সব হিট গান উপহার দিতে থাকেন দিল্লির সেই ইলেক্ট্রিশিয়ান ছেলেটি। যিনি ভারতীয় সিনেমায় চিরকাল এক কিংবদন্তি সুরকার হয়ে থেকে যাবেন রবি নামে। সিনেমা জগত তাঁকে রবি নামেই চিনত। আসল নাম ছিল রবিশঙ্কর শর্মা।

চৌদভি কা চাঁদ, ওয়াক্ত, গুমরাহ, কাজল, ঘরানা, সংসার, ধুন্ধ, হামরাজ, দো কলিয়া, দো বদন সহ শতাধিক হিন্দি সিনেমায় তাঁর সুর আজও মানুষের কানে বাজে।

সে ছোটদের গান চন্দামামা দূর কে, চল মেরে ঘোড়ে, হাম ভি অগর বচ্চে হোতে-র মত হিট গান হোক বা জব চলি ঠান্ডি হাওয়া, সিএটি ক্যাট ক্যাট মানে বিল্লি, বার বার দেখো, চৌদভি কা চাঁদ হো, অ্যায় মেরে জোহরা জবি এবং একের পর এক হিট গান উপহার দিয়েছেন রবি।

৭০-এর দশকে তেমন আর সুর না করলেও ৫০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে ৬০-এর দশক জুড়ে তিনি কার্যত রাজত্ব করেছেন হিন্দি সিনেমার জগতে। ৮০-র দশকে ফের ফিরে আসেন। পরবর্তীকালে মালয়ালম সিনেমায় সুর দেন। ২০১২ সালে ৮৬ বছর বয়সে চলে যান হিন্দি সিনেমার চিরদিনের সুরকার রবি। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show More

News Desk

নীলকণ্ঠে যে খবর প্রতিদিন পরিবেশন করা হচ্ছে তা একটি সম্মিলিত কর্মযজ্ঞ। পাঠক পাঠিকার কাছে সঠিক ও তথ্যপূর্ণ খবর পৌঁছে দেওয়ার দায়বদ্ধতা থেকে নীলকণ্ঠের একাধিক বিভাগ প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। সাংবাদিকরা খবর সংগ্রহ করছেন। সেই খবর নিউজ ডেস্কে কর্মরতরা ভাষা দিয়ে সাজিয়ে দিচ্ছেন। খবরটিকে সুপাঠ্য করে তুলছেন তাঁরা। রাস্তায় ঘুরে স্পট থেকে ছবি তুলে আনছেন চিত্রগ্রাহকরা। সেই ছবি প্রাসঙ্গিক খবরের সঙ্গে ব্যবহার হচ্ছে। যা নিখুঁতভাবে পরিবেশিত হচ্ছে ফোটো এডিটিং বিভাগে কর্মরত ফোটো এডিটরদের পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে। নীলকণ্ঠ.in-এর খবর, আর্টিকেল ও ছবি সংস্থার প্রধান সম্পাদক কামাখ্যাপ্রসাদ লাহার দ্বারা নিখুঁত ভাবে যাচাই করবার পরই প্রকাশিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button