বিখ্যাত এই মেলায় প্রতিবছরই হয় ঢিল, পাথরের লড়াই, প্রেমের কাহিনির হাত ধরেই এই পরম্পরা
একটা মেলা। প্রতিবছর বসে। কিন্তু তার প্রধান আকর্ষণ বেশ অবাক করা। ঢিল আর পাথরের লড়াই হয় নদীকে মাঝখানে রেখে। এটাই পরম্পরা।

মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে জাম নদী। তারই ২ ধারে ২টি জনবসতি। একটি দিকে পানধুরনা, অন্যদিকে সাওয়ারগাঁও। এই ২ জায়গার বাসিন্দারা তাঁদের দিকের নদী তীরে হাজির হন। মেলার দিন তাঁরা একত্র হন হাতে ঢিল, পাথর নিয়ে।
আগে থেকেই সেখানে তৈরি থাকে অ্যাম্বুলেন্স। তৈরি থাকে পুলিশ। আর থাকেন বহু দর্শক। যাঁরা এই পাথর আর ঢিল মারামারির লড়াইয়ে শামিল হন না ঠিকই, তবে দেখতে ভিড় জমান।
এই ঢিল, পাথরের লড়াই কিন্তু কোনও ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২ পক্ষের হাতাহাতি নয়, বরং এটা বহু বছর ধরে চলে আসা একটি পরম্পরা। যা এখানকার প্রজন্মের পর প্রজন্ম মেনে চলেছে।
নদীর এপার থেকে ওপারে পাথর উড়ে যায়। উল্টো পার থেকেও পাথর উড়ে আসে এপারে। অনেকে এই লড়াইয়ে শামিল হয়ে আহতও হন। তাঁদের তখনই চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়। চিকিৎসকও তৈরি থাকেন।
কারও আঘাত গুরুতর হলে তাঁকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ছোটে হাসপাতালে। এমন রক্তক্ষয়ী লড়াই কিন্তু নেহাতই একটা পরম্পরা হয়ে চলে আসছে। এর মানে এই নয় যে ২ জায়গার মানুষ একে অপরের শত্রু।
কথিত আছে পানধুরনা-র বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে সাওয়ারগাঁও-এর বাসিন্দা এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। যা এই ২ জায়গার মানুষ মেনে নিতে পারেননি। আর তাকেই কেন্দ্র করে ২ পক্ষে তুমুল লড়াই হয়।
এই ঘটনা বহু প্রাচীনকালের কথা। তারপর সেই ঘটনাকে সামনে রেখেই প্রতিবছর পালিত হয় গোটমার মেলা। মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া জেলার এই মেলা কিন্তু পাথর ছোঁড়ার মেলা হিসাবেও পরিচিত।
প্রতিবছর এই মেলা আয়োজিত হয়। যার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল নদীর ২ পার থেকে পাথর ছোঁড়ার প্রাচীন পরম্পরা। এবার এই মেলায় পাথর ছোঁড়াছুঁড়ি, ধাক্কাধাক্কিতে শামিল হয়ে ২৫ জন আহত হয়েছেন।
বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় এই লড়াই। যা প্রায় সন্ধে পর্যন্ত চলে। তারপর একটি পতাকাকে সামনে রেখে চণ্ডী মাতা কি জয় বলে শেষ হয় এই লড়াই।