National

অন্ধ লটারি বিক্রেতা চোখ খুলে দিলেন গোটা দুনিয়ার

এ এক দৃষ্টিহীন লটারি বিক্রেতার মন ভাল করা কাহিনি। যিনি লটারির টিকিট চোরের নাম জেনেও চিরদিন নিজের মনেই রেখে দিলেন। কাউকে নাম জানালেন না।

চিরদিন তাঁর মধ্যেই থেকে যাবে নামটা। যে তাঁর দৃষ্টিহীনতার সুযোগ নিয়ে দিনের পর দিন ঠকিয়ে লটারির টিকিট নিয়ে পালিয়েছে তাঁর কাছ থেকে। পথের ধারে লটারির টিকিট বিক্রি করেই জীবন কাটে এই দৃষ্টিহীন বছর ৪৫-এর মহিলার। দেখতে পান না। তাই ক্রেতাদের বিশ্বাসই তাঁর একমাত্র ভরসা।

লটারির টিকিট বিক্রি করে যেটুকু অর্থ রোজগার হয় দিনের শেষে, তাই দিয়েই দুবেলার অন্নসংস্থান করতে হয় তাঁকে। ক্রেতাদের তিনি দেখতে পান না। তবে তাঁদের গলার স্বর মনে রাখেন।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

এই রোজাম্মার জীবনে ঘটে গেল এক অদ্ভুত ঘটনা। তিনি লক্ষ্য করেন মাঝে মাঝে দিনের শেষে তাঁর লটারির টিকিট বিক্রির সঙ্গে রোজগারে অসামঞ্জস্য দেখা যাচ্ছে। যত লটারির টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে গুনে দেখছেন, তত টাকা তাঁর কাছে আসেনি।

তিনি বুঝতে পারেন কোনও ক্রেতা তাঁকে ঠকাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁর এক দৃষ্টিহীন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেন রোজাম্মা। তিনিই বুদ্ধি দেন যে একটি গোপন ক্যামেরা থাকা পেন কিনতে। যাতে ধরা পড়ে যাবে কে এই কাণ্ডটি করছে।

সেই গোপন পেন ক্যামেরায় ধরাও পড়ে এই চুরি। রোজাম্মা ওই ফুটেজ এক পরিচিতকে দেখাতে তিনিই বলে দেন চুরি হয়েছে। কে করেছে তার স্বরও রেকর্ড হয়েছিল ক্যামেরায়। সেই স্বর শোনাতেই রোজাম্মা চিনে ফেলেন কে সেই ব্যক্তি।

ওই ব্যক্তি এরপর তাঁর দোকানে আসতেই রোজাম্মা তাকে চেপে ধরেন। প্রথমে ওই ব্যক্তি অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও যখন তাকে রোজাম্মা জানান যে সব গোপন ক্যামেরায় ধরা আছে। তখন সে স্বীকার করে তার কুকর্মের কথা।

স্বীকারোক্তি শোনার পর রোজাম্মা তাকে কথা দেন তিনি তার নাম কাউকে বলবেন না। চুরি করে নেওয়া টিকিটের দামও তাকে ফেরত দিতে হবেনা। কাউকে ওই ফুটেজও তিনি দেখাবেন না। কিন্তু ওই ব্যক্তিকে কথা দিতে হবে সে আর কখনও এমনভাবে কাউকে ঠকাবে না। বিশেষত রোজাম্মার মত মানুষদের।

ওই ব্যক্তি আগামী দিনে কথা রাখবে কিনা জানা নেই। তবে কেরালার কোট্টায়ামের বাসিন্দা রোজাম্মা জানিয়ে দিয়েছেন তিনি ওই ব্যক্তিকে ক্ষমা করেছেন। তার নাম তিনি কাউকে কোনদিন বলবেন না। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *