National

বিদেশে পড়তে যাওয়া ছেলের জন্য ৭ বছর ধরে অপেক্ষায় দরিদ্র বাবা মা

ছেলে গিয়েছিলেন বিদেশে পড়তে। তারপর একটাই ফোন এসেছিল। সেই থেকে ছেলের অপেক্ষায় পথ চেয়ে ৭ বছর ধরে বসে আছেন হত দরিদ্র বাবা মা।

ছেলে ম্যানেজমেন্টে স্নাতক হওয়ার পর তিনি নিজেই বাবা মাকে জানান তিনি আরও পড়াশোনার জন্য অস্ট্রেলিয়া যেতে চান। দরিদ্র পরিবার। ছেলেকে এক কথায় অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর মত আর্থিক ক্ষমতা তাঁদের ছিলনা। কিন্তু ছেলে বিদেশে পড়াশোনা করে মানুষের মত মানুষ হতে চায়।

তাই তাঁর ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে বাবা মা তাঁদের যাবতীয় কিছু বেচে এবং কয়েকজনের কাছ থেকে ধার করে সাকুল্যে ৫ লক্ষ টাকা জোগাড় করেন। তারপর তা তুলে দেন ছেলের হাতে।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

কেরালার কোচির বাসিন্দা জিতিন জয়প্রকাশ বাবা জয়প্রকাশ এবং মা ভলসালাকে বিদায় জানিয়ে ২০১৬ সালের ২৩ মে পাড়ি দেন অস্ট্রেলিয়া। ইন্দোনেশিয়া হয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। এরপর তিনি ফোনেও যোগাযোগ রাখতেন বাবা মায়ের সঙ্গে।

গর্বিত দরিদ্র বাবা মা জানতেন ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় থেকে পড়াশোনা করছেন। কিন্তু ২০১৭ সালের ১৫ জুন সেই যে জিতিন শেষবারের জন্য বাবা মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন, তারপর থেকে তাঁর আর কোনও খবর বৃদ্ধ বাবা মা জানেন না। ছেলে যে অস্ট্রেলিয়া থেকেই ফোন করতেন এমনটাও নিশ্চিত জানেন না তাঁরা। তবে বিশ্বাস করেন ছেলে অস্ট্রেলিয়াতেই আছেন।

তাঁদের কথা জানার পর তিরুভালাম ভাসি নামে এক সাংবাদিক যিনি মেলবোর্নে থেকে কাজ করেন, তিনি খোঁজ নিতে শুরু করেন। কিন্তু মাইগ্রেশন অথরিটির কাছে খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন যে জিতিন নামে কেউ কখনও ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পা রাখেননি।

তবে এখনও আশা ছাড়েননি ৭০ বছরের বৃদ্ধ বাবা আর ৬০ বছরের প্রৌঢ়া মা। তাঁদের বিশ্বাস ছেলে ঠিকই ফিরে আসবেন একদিন। একদিন না একদিন ফোন করবেনই।

হত দরিদ্র অবস্থা তাঁদের। খাবার খাওয়ারও অর্থ নেই। দুপুরের খাওয়াটা ইত্তুমানুর মন্দিরেই সারেন তাঁরা। রাতের খাবারের কোনও স্থিরতা নেই।

কিছু সহৃদয় মানুষ তাঁদের সাহায্য করেন। সেইটুকু সাহায্যে ভরসা করে কোনও রকমে দিন কাটে তাঁদের। সারাদিন এখনও শুধু ছেলের পথ চেয়ে বসে থাকেন এই বৃদ্ধ দম্পতি। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *